পিকে হালদারের অবৈধ সম্পদ
মালয়েশিয়া দুবাই কানাডায় ১০ বিলাসবহুল ফ্ল্যাট
ভারতের ব্যাংকে ৬০ কোটি রুপির হদিস * ২১ জুন পর্যন্ত জেলে থাকার নির্দেশ
কৃষ্ণকুমার দাস, কলকাতা
প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২২, ০২:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশের বহুল আলোচিত ব্যাংক প্রতারক পিকে হালদারের মালয়েশিয়ায় সাতটি, দুবাইয়ে দুটি, কানাডায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারতের বিভিন্ন ব্যাংকে ৮০টির বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
এ অ্যাকাউন্ট পিকের ভাই ও আত্মীয় ছাড়াও চোরাপথে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ করা বাংলাদেশিদের নামে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৬০ কোটি রুপির হদিস পাওয়া গেছে এসব অ্যাকাউন্টে। মঙ্গলবার ফের জেল হেফাজত দাবি করে তদন্তে জানতে পারা এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য কলকাতার ব্যাংকশাল কোর্টে জানিয়েছে ভারতের আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
বকেয়া অর্থ উদ্ধারের পাশাপাশি বেআইনিভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালানে যুক্ত থাকার অভিযোগে তদন্ত করছে ইডি। তদন্তকারীদের তথ্য ও আবেদন যাচাই করে বিচারক পিকে হাওলাদার ও তার দুই ভাই এবং ম্যানেজারকে ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ২১ জুন ফের আদালতে হাজির করতে হবে অভিযুক্তদের।
বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে পশ্চিমবঙ্গের বেনাপোল সীমান্ত লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে বিপুল সম্পত্তি ক্রয় করে বসবাস করছিলেন পিকে হালদার। পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলাতেও নামে-বেনামে প্রচুর জমি এবং বাড়ি ক্রয় করে ব্যাবসা ফেঁদেছিলেন।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের তরফে বার্তা পেয়ে ভারতের আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি অনুসন্ধান চালিয়ে ১৪ মে তাকে গ্রেফতার করে। ১৪ দিন ইডি হেফাজতে থাকার পর প্রশান্ত জেলে থাকলেও তাকে দফায় দফায় জেরা করে ইডি।
কিন্তু গত ৭ দিনের তদন্তে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা জেনেছেন, আত্মসাৎ করা অর্থ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি দুবাই ও মালয়েশিয়ায় বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি ক্রয় করেছেন পিকে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ায় সাতটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনা নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছেন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এসে মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেওয়া একটি চক্রের কোনো নেটওয়ার্ক ধরেই ধীরে ধীরে সে দেশে নিজের কারবার সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনি বিস্তারিত কিছু ফাঁস করতে চাইছেন না ইডির গোয়েন্দারা।
এছাড়া পশ্চিমবঙ্গে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড করিয়ে দেওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধিদের নামের তালিকা তৈরি করেছে ইডি। তাদেরও জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে চাইবে, কত আর্থিক মূল্যের বিনিময়ে বেআইনিভাবে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা এক প্রতারককে আধার ও ভোটার কার্ড করিয়ে দিয়েছে। যদিও স্থানীয় বিধায়ক ও বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, আইন মেনে সব অভিযুক্তদের বিচার হবে। কেউ ছাড় পাবে না।