Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুনিয়রদের দৌরাত্ম্য ভয়ে সিনিয়ররা

Icon

সরকার মাসুম, ইবি

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুনিয়রদের দৌরাত্ম্য ভয়ে সিনিয়ররা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বাড়ছে জুনিয়রদের দৌরাত্ম্য। হরহামেশাই তারা সিনিয়রদের সঙ্গে অশোভন করছেন। মারধরের ঘটনাও ঘটছে। ঠুনকো কারণে গত ৬ মাসে এ ধরনের অন্তত ৭-৮টি ঘটনা ঘটেছে। জড়িত অধিকাংশই ছাত্রলীগকর্মী ও প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

ক্যাম্পাসে ভর্তির পর রাজনৈতিক বড়ভাইদের ছত্রছায়ায় কিছু জুনিয়র বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরে ক্যাডার বনে যায় তারা। তাদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে প্রথমে রাজনৈতিক বড় ভাইদের দিয়ে মীমাংসার দেন-দরবার চলে। কখনো বুঝিয়ে আবার কখনো ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে মীমাংসা করা হয়। প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ গেলে অনেক ক্ষেত্রে বিচার মেলে না। নামমাত্র তদন্ত কমিটি করে দিয়েই সারা। এ কারণে ক্যাম্পাসে আতঙ্কে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিচার না পাওয়া এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যুগান্তরকে বলেন, ‘এ লজ্জা আমার নয়, এ লজ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের। জুনিয়র কর্তৃক বিনাদোষে লাঞ্ছিত হয়ে প্রক্টরের কাছে লিখিত দিয়েও বিচার না পেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে। প্রশাসন যদি রাজনৈতিক কারণে বিচার না করতে পারে, তাহলে আগেই বলে দিতে পারত। ঝুঁকি নিয়ে লিখিত না দিয়ে সৃষ্টিকর্তার ওপর ছেড়ে দিতাম।’

জানা যায়, ২১ মে সাদ্দাম হোসেন হলগেটে সাদরিল হাসান নামে এক সিনিয়র শিক্ষার্থীকে মারধর করে জুনিয়র শিক্ষার্থী ফারহান লাবিব ধ্রুব। সাদরিল হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ’১৭-১৮ শিক্ষা বর্ষের এবং অভিযুক্ত ধ্রুব বাংলা বিভাগের ’১৯-২০ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী। হলের প্রবেশপথে ধ্রুব ও রাইহান দাঁড়িয়ে ছিল। বাইসাইকেল নিয়ে হলে প্রবেশের জন্য তাদের সরে দাঁড়াতে বলে সাদরিল। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সাদরিলকে থাপ্পড় দেয় ধ্রুব। পরে আবার বন্ধুদের নিয়ে মারধর করে। ধ্রুব ছাত্রলীগকর্মী ফজলে হাসান রাব্বির অনুসারী।

১৬ ফেব্রুয়ারি ক্রিকেট খেলার এক পর্যায়ে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়ন আউট হয়। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে খেলার মাঠেই ব্যাট দিয়ে সিনিয়র শিক্ষার্থী রিমনকে মারধর করে রিয়ন। রিয়ন ছাত্রলীগকর্মী ফজলে হাসান রাব্বির অনুসারী।

২২ ফেব্রুয়ারি ডায়না চত্বরে হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের আশিকসহ কয়েকজন মিলে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জিয়াউর রহমানকে মারধর করে। রাতেই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তবে সমাধান না পেয়ে জিয়াউর প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনার তিন মাস পার হলেও বিচার হয়নি।

ঠুনকো কারণে ১২ নভেম্বর সমাজকর্ম বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফকে মারধর করে একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। ১৬ ডিসেম্বর বাইক ধীরে চালাতে বলায় স্নাতকোত্তরের এক সিনিয়রকে হেলমেট ও লাঠিসোটা দিয়ে বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগকর্মী জামিল আহমেদ। সে লোক প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ওইদিন রাতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। পাঁচ মাস পার হলেও আজও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

জানতে চাইলে ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলিনা নাসরীন যুগান্তরকে বলেন, ‘উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচার না জানা ও সামাজিক অবক্ষয় থেকে এগুলো হচ্ছে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে। এখনই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বেশকিছু অভিযোগপত্র জমা হয়েছে। আমরা পুরোনাে ফাইল, নথিগুলো খুঁজে দেখছি। এ সপ্তাহের মধ্যে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে পাঠাব।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম