হলমার্ক কেলেঙ্কারি
সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডিসহ ৯ জনের সাজা

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২২, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

হলমার্ক কেলেঙ্কারির মামলায় সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের বুধবার আদালতে নেওয়া হচ্ছে -যুগান্তর
ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের এক মামলায় রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ৯ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এ রায় দেন। এ নিয়ে হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় তিন মামলার রায় হলো।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, জিএম ননী গোপাল নাথ, ডিজিএম শেখ আলতাফ হোসেন, সফিজ উদ্দিন আহমেদ, এজিএম কামরুল হোসেন খান, সাইফুল হাসান, প্যারাগন নিট কম্পোজিট লিমিটেডের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা ও পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন। আসামিদের মধ্যে ডিএমডি মাইনুল হক, ডিজিএম শেখ আলতাফ হোসেন, সফিজ উদ্দিন আহমেদ ও এজিএম কামরুল হোসেন খান রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া অপর ৫ আসামি পলাতক। রায়ে তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। রায়ে সরকারি কর্মচারী কর্তৃক সম্পত্তি আত্মসাতের দায়ে এক ধারায় আসামিদের প্রত্যেকের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২৭ লাখ ৫০ হাজার ৬৮১ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই অর্থদণ্ড প্রত্যেকের কাছ থেকে সমহারে রাষ্ট্রের অনুকূলে আদায়যোগ্য হবে। এছাড়া প্রতারণার দায়ে অপর এক ধারায় প্রত্যেক আসামিকে সাত বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই ধারায় দেওয়া সাজা একসঙ্গে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আসামিদের ১০ বছর কারাভোগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
২৭ লাখ ৫০ হাজার ৬৮১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি মামলাটি করা হয়। দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২২ মে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক (তৎকালীন সহকারী পরিচালক) মো. মশিউর রহমান।
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ৩৮ মামলা : হলমার্ক কেলেঙ্কারির সময় সোনালী ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাটের ঘটনায় মোট ৩৮টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ৩টি মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট (এফআরটি) দেওয়া হয়। বাকি ৩৫টি মামলাতে মোট ৬২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। বাকি মামলাগুলোর মতো প্যারাগন নিট কম্পোজিট লিমিটেডের বিরুদ্ধে করা এ মামলাটিও হলমার্ক কেলেঙ্কারির মামলা হিসাবে পরিচিত। এ নিয়ে অদ্যাবধি তিনটি মামলার রায় ঘোষণা হলো। বাকি ৩২টি মামলা এখনো বিচারাধীন।
বিচারাধীন ৩২ মামলা : ২০১২ সালের ৭ জুন সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন করপোরেট শাখায় ঋণ জালিয়াতি সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দুদকের পরিচালক (তৎকালীন উপ-পরিচালক) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বাধীন একটি টিম এ অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে। ওই বছরেই দুই দফায় ব্যাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ জালিয়াতি সংক্রান্ত দুটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠানো হয়। সেখানে হলমার্ক গ্রুপসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোট তিন হাজার ৬৯৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। অনুসন্ধান শেষে মোট ৩৮টি মামলা করা হয়।