৩০৪ কোটি টাকা লোপাটে দুদকের মামলা
নর্থ সাউথের চেয়ারম্যানসহ দায়ীদের গ্রেফতার দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২২, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা লোপাটের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ সংশ্লিষ্টদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবি জানান। আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস বলেন, মূলত আজিম-কাসেম সিন্ডিকেটের কারণেই নর্থ সাউথ পরিণত হয়েছে দুর্নীতি-অনিয়ম ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে। তাই এদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। অভিযুক্ত প্রত্যেকেই সমাজের প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাধর ব্যক্তি। এ কারণেই তাদের গ্রেফতারে এমন গড়িমসি চলছে। এদের গ্রেফতার করা না হলে নর্থ সাউথের মতো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। তারা যেন বিচারিক প্রক্রিয়ায় কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেজন্য তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ট্রাস্টিজ আজিজ আল কায়সার টিটোও এসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আজিজ আল কায়সার টিটোকে মামলার আসামি করা হয়নি। মানববন্ধনে বক্তারা জানান, লাগামহীন দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, সিন্ডিকেট আর জঙ্গিবাদে পর্যুদস্ত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিজ বোর্ডের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন। এত বেশি অনিয়মের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মানও ক্রমেই নিম্নমুখী। কিছু হীন কাজের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করছে। মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন-বাংলাদেশ সংবাদপত্র (গণমাধ্যম) কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান তালুকদার, বাংলাদেশ পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান এম ইব্রাহিম পাটোয়ারি, সাংবাদিক নেতা কালিমুল্লা ইকবাল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৫ মে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। অপর আসামিরা হলেন-বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এমএ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিন মো. হিলালী। এ মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তর ও গোপন করার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যায়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ/অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কিছু সদস্যের অনুমোদনের মাধ্যমে এই অর্থ লোপাট করা হয়। এছাড়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির আরও অভিযোগ রয়েছে। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।