Logo
Logo
×

শেষ পাতা

করোনায় পর্যটনে ক্ষতি ৬০ হাজার কোটি টাকা

কাজ হারিয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার জন, ক্ষতি পোষাতে প্রণোদনার সুপারিশ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২২, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

করোনায় পর্যটনে ক্ষতি ৬০ হাজার কোটি টাকা

করোনায় পর্যটনে ক্ষতি ৬০ হাজার কোটি টাকা।

করোনায় পর্যটন খাতের ক্ষতি হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। করোনা না হলে দেশের অর্থনীতিতে এই খাত মূল্য সংযোজন করত প্রায় ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। করোনা থাবার পরও অর্থনীতিতে এই খাতের অবদান প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা। ফলে ক্ষতি হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। আর এই সময়ে কাজ হারিয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার শ্রমিক। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ‘দ্য কোভিড-১৯ প্যান্ডামিক অ্যান্ড দ্য হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত সংস্থার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংস্থার সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মোহাম্মদ ইউনূস। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ। গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনায় পর্যটন খাতের অন্যতম কয়েকটি উপখাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পরিবহণ সংস্থার। এ উপখাতের ক্ষতি ২৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। এছাড়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট ব্যবসায় ক্ষতি ১৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ট্রাভেল এজেন্টের ১ হাজার ৫২০ কোটি টাকা, ট্যুর অপারেটরদের ২৪০ কোটি টাকা এবং রেস্টুরেন্টের ক্ষতি ১৫ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে অন্যান্য (টোটা) ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। এখান থেকে পুনরুদ্ধার সরকারের সহায়তা ছাড়া অসম্ভব। উপখাতগুলো প্রধানত সহজ শর্তে প্রণোদনা ও কম সুদে ঋণ সুবিধা চায়। সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয় প্রয়োজন। যাতে পর্যটক এবং সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থা অপ্রয়োজনীয় ঝামেলা ও হয়রানি এড়াতে পারে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) পুরো খাতে বিক্রয় এবং আয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এই পতন হোটেল এবং রিসোর্টগুলোর জন্য প্রায় ৮৪ শতাংশ এবং ট্যুর অপারেটর এবং ট্রাভেল এজেন্ট এবং বিনোদন পার্কের জন্য ৯৮ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ। বেশিরভাগ এন্টারপ্রাইজে (ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে) তৃতীয় ত্রৈমাসিক (জুলাই-সেপেটম্বর) থেকে বিক্রয় রাজস্বের উন্নতি হয়েছে, যা ২০২১ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আরও উন্নত হয়েছে। প্রাক-মহামারি বছরের তুলনায় মহামারি বছরে হোটেল ও রিসোর্ট নিয়োগ করা কর্মচারী গড় সংখ্যা ৪২ শতাংশ কম ছিল। কিন্তু কর্মী ছাঁটাই ৩১৭ শতাংশ বেশি ছিল। অন্যদিকে ২০১৯-২০ সালে ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর এবং পর্যটন এসএমইদের মাধ্যমে হোটেল এবং রিসোর্টে তুলনামূলকভাবে খুব কমই কোনো নিয়োগ এবং ছাঁটাই করা হয়েছিল। রেস্তোরাঁ, পরিবহণ সংস্থা ও বিনোদন পার্কের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও ২০১৯ ও ২০২০ সালে রেস্তোরাঁয় গড়ে দু’জনেরও বেশি কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছিল। অন্যদিকে ২০২০ সালে চারজনেরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে যদিও ২০১৯ সালে ছাঁটাই করা হয়নি। বিনোদন পার্কগুলো অন্যান্য সাব-সেক্টরের তুলনায় ২০১৯ সালে বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। ২০২০ সালে নিট কর্মসংস্থান সৃষ্টির হার কম ছিল। সমস্ত সাব-সেক্টরে ধারাবাহিকভাবে মহামারি চলাকালীন নেট কর্মসংস্থান কমেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারির সময়টাতে পর্যটন খাতে মোট কাজ হারিয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ২০০ শ্রমিক। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ হারিয়েছে হোটেল এবং রেস্টুরেন্টে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাবেদ আহমেদ বলেন, পর্যটন খাত উন্নয়নে গবেষণার বিকল্প নেই। এটি প্রথম গবেষণা বলা হয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতে আরও বেশি গবেষণা করা হবে। এই খাত বিকাশে নীতি সহায়তার জন্য সঠিক তথ্যের প্রয়োজন। ড. বিনায়ক সেন বলেন, পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো শ্রীলংকার অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়েছে। যদিও এর পেছনে অন্যান্য কারণও আছে। তারপরও বাংলাদেশের উচিত শ্রীলংকা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে পর্যটন খাত পুনরুদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়া। করোনার সময় প্রণোদনার সুবিধা পেয়েছে পোশাক খাত। পর্যটন খাত পেলে এত শ্রমিক কাজ হারাত না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম