Logo
Logo
×

শেষ পাতা

সিলেট বিএনপির সম্মেলনের বাকি দুদিন

আরিফকে সরানোর পরও অজানা আশঙ্কা

Icon

সংগ্রাম সিংহ, সিলেট

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২২, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আরিফকে সরানোর পরও অজানা আশঙ্কা

সিলেট বিএনপির জেলা কাউন্সিলের হেভিওয়েট প্রার্থী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে নির্বাচন থেকে সরানোর পরও আতঙ্ক কাটছে না। দলের প্রার্থী, কাউন্সিলর ও নেতাকর্মীদের অজানা আশঙ্কা-কখন যেন কী হয়! এ নিয়ে অনেক নেতাকর্মী হতাশ হলেও কেউ টুঁ শব্দ করছেন না।

এদিকে সম্মেলন-কাউন্সিলের মাত্র দুদিন বাকি থাকলেও এখনও স্থান নির্ধারণ হয়নি। ১৩ প্রার্থীর কাউন্সিলের ছাপা ব্যালট বাতিল করা হলেও ৪ প্রার্থী বাদ দিয়ে বাকি ৯ প্রার্থীর ব্যালট নতুন করে ছাপা হয়নি শুক্রবার পর্যন্ত। ফলে এ তালিকা থেকে আরও কোনো প্রার্থী বাদ পড়ছেন কিনা এমন আতঙ্ক রয়েছে প্রার্থীদের মধ্যে। সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এমন তথ্য দিয়েছে।

২১ মার্চ জেলা বিএনপির বহুল প্রত্যাশিত সম্মেলন ও কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল। এর আগের দিন কেন্দ্র থেকে ‘অনিবার্য কারণবশত’ সম্মেলন ও কাউন্সিল স্থগিত করা হয়। এক্ষেত্রে সময়মতো ভোটার তালিকা চূড়ান্ত না হওয়াকে কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন বিএনপি নেতারা। এরপর একের পর এক নাটকীয় মোড় নিতে থাকে সম্মেলন-কাউন্সিল। জেলা বিএনপির সভাপতি প্রার্থী সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার এবং শেষ পর্যায়ে কামরুল হাসান শাহীন, শাকিল মোর্শেদের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়।

এরআগে, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুল আহাদ খান জামালের প্রার্থিতা বাতিল করে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশন। কাউন্সিল ঘিরে এমন নাটকীয়তায় বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানান, ভোটার তালিকা যারা করেছেন তাদের কর্মকাণ্ডের বলি হয়েছেন দীর্ঘদিনের ত্যাগী কর্মীরা।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, সম্মেলন-কাউন্সিলের পরবর্তী তারিখ ২৯ মার্চ, তবে স্থান নির্ধারণ হয়নি। সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা মাঠের জন্য চেষ্টা করছি। বিকল্প হিসাবে রেজিস্ট্রারি মাঠ দেখছি। আলীয়ায় হলে ভালো, রেজিস্ট্রারি মাঠে হলে সম্মেলন ও কাউন্সিলের জন্য পৃথক স্থান রেডি করতে হবে। তিনি জানান, সম্মেলনের তারিখ আর পেছানো হবে না বলেই মনে হয়। বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনও বলেন, কাউন্সিল ও সম্মেলন আর পেছানোর আশঙ্কা নেই।

জেলা বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল গাফ্ফার যুগান্তরকে বলেন, কাউন্সিলের ৪ প্রার্থী বাদ পড়ার পর এখন ৯ প্রতিদ্বন্দ্বী মাঠে। এই প্রার্থী তালিকা আর সংক্ষিপ্ত হবে বলে মনে হয় না।

তিনি বলেন, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও আব্দুল আহাদ খান জামাল ছাড়া বাকি দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে প্রার্থীর জন্য বাধ্যতামূলক শর্ত পূরণ না হওয়ায়। তারা প্রার্থী হয়েছেন অথচ কাউন্সিলর তালিকাতেই তাদের নাম নেই, ভোট নেই। ফলে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশনের করার কিছুই নেই। জেলা বিএনপির নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, মেয়র আরিফসহ মনোনয়ন প্রত্যাহারকারীদের মনোনয়নের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। তারা স্বাক্ষর করে জমা দেওয়া টাকা নিয়েছেন।

এদিকে সিলেটে বিএনপির দুটি ধারার মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির এক বলয়ের নেতা। অপর বলয়ের নেতৃত্বে আরিফ। দলের অভ্যন্তরে গুঞ্জন চলছে, সিলেট বিএনপির নেতৃত্বে আরিফের প্রভাব মেনে নিতে না পারায় সম্মেলন আকস্মিক স্থগিত করা হয়েছিল। প্রার্থী তালিকা ১৩ থেকে ৯ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে।

বাকি ৯ প্রার্থীর মধ্যে আরিফ ঘেঁষা কেউ থাকলে প্রার্থী তালিকায় আবারও পরিবর্তন আসতে পারে এমন আশঙ্কা অনেকের। বর্তমানে সভাপতি পদে আবুল কাহের শামীম ও আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদে আলী আহমদ, এমরান আহমদ চৌধুরী, আ ফ ম কামাল ও মো. আব্দুল মান্নান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এম মুজিবুর রহমান মুজিব, লোকমান আহমদ ও মো. শামিম আহমদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, মেয়র আরিফুল হককে অনুরোধ করে নির্বাচন থেকে সরানো হলেও তার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে কেন্দ্র। এই লক্ষ্যে দলের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠি মেয়র আরিফের কাছে পাঠানো হয়েছে। জেলা বিএনপির কাউন্সিলের সভাপতি প্রার্থী আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, কাউন্সিলে নতুন নেতৃত্ব চান কাউন্সিলররা। এক্ষেত্রে আমি সভাপতি পদের নতুন প্রার্থী। তাই আমি আশাবাদী দলের নেতাকর্মীরা আমাকেই নির্বাচিত করবেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম