Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কাদের মির্জার সাক্ষাৎ

দুই ভাইয়ের অভিমান ঘুচল

Icon

হাসিবুল হাসান

প্রকাশ: ২২ মে ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দুই ভাইয়ের অভিমান ঘুচল

অবশেষে দুই ভাইয়ের মান-অভিমান ঘুচল। বেশ কয়েক মাসের দূরত্ব কাটিয়ে বড় ভাই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেছেন কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কাদের মির্জা শনিবার বিকালে ওবায়দুল কাদেরের সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবনে উপস্থিত হয়ে বড় ভাইয়ের হাতে ফুল দিয়ে মান-অভিমানের অবসান ঘটান। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী এ সাক্ষাতে একে অপরের শারীরিক খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি নোয়াখালীর রাজনীতি ও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয় দুই ভাইয়ের মধ্যে। একই সঙ্গে তাদের আরেক ছোট ভাইয়ের (অসুস্থ) শারীরিক অবস্থা নিয়েও আলোচনা হয়।

সাক্ষাতে ভাইয়ের সঙ্গে কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে আব্দুল কাদের মির্জা শনিবার সন্ধ্যায় যুগান্তরকে বলেন, ‘তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, ‘তুমি আমার ওপর যত অভিমানই করো। আমি কোনোদিন তোমার ওপর মনে কষ্ট নেই নাই। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এটার একটা অবসান ঘটবে।’ রাজনীতি নিয়ে কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে বলেছেন। আরও বলেছেন, ‘এলাকায় যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসে। যেখানে যেখানে যা বলা দরকার আমি বলে দেব। তোমরা কাজ করো।’

আপনার আগে যে দাবি ও অভিযোগগুলো ছিল, সেগুলো কী পূরণ হয়েছে বা সে বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে আছে বিষয়টা ওনি দেখছেন।’ তিনি আরও একটা কথা গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।’ আপনি ওবায়দুল কাদেরকে কী বলেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কিছু ছেলে জেলে আছে, তাদের জামিনের বিষয় নিয়ে আলাপ করেছি। আর সেখানে প্রশাসন যেন নিরপেক্ষ থাকে সেটা নিশ্চিত করার জন্য বলেছি।

জানা গেছে, ঈদের দিন ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছিল মির্জা কাদেরের। সেদিনই মির্জা কাদেরকে দেখা করতে বলেছিলেন ওবায়দুল কাদের। এর পরিপ্রেক্ষিতেই শনিবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে ওবায়দুল কাদেরের সরকারি বাসভবনে যান আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরর হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন ও শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। এ সময় শারীরিকভাবে অসুস্থ তাদের আরেক ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনের উন্নত চিকিৎসা নিয়েও কথা হয়। ওবায়দুল কাদের তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।

এরপর স্থানীয় রাজনীতি ও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেন দুই ভাই। ওবায়দুল কাদের তার ছোট ভাই মির্জা কাদেরের কাছে সার্বিক ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হন। এতদিন মির্জা কাদের যা লাইভে বলেছিলেন, তার বর্ণনা সংক্ষেপে দেন বড় ভাইকে। সব শুনে ওবায়দুল কাদের ছোট ভাইকে শান্ত হতে বলেন। এমনকি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে না এসে স্থানীয় যে কোনো সমস্যা সরাসরি তাকেই জানাতে বলেন। তিনি তা সমাধানে পদক্ষেপ নেবেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মির্জা কাদেরকে পুরোনো বিষয়গুলোর পুনরাবৃত্তি না করার কথা বলেন। এ বিষয়ে মির্জা কাদের ওবায়দুল কাদেরকে আশ্বস্ত করেন।

সাক্ষাতে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনাগুলোর জন্য নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী ও তার অনুসারী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদলকে দায়ী করেন। তিনি বাদলকে আইনের আওতায় আনার কথাও বলেন। জবাবে ওবায়দুল কাদের সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এদিকে বৈঠক শেষে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা নিজের ফেসবুক পোস্টে দুই ভাইয়ের সাক্ষাতের ছবি পোস্ট করেন।

গণমাধ্যমের বন্ধু সেজে বিএনপি উসকানি দিচ্ছে : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যারা গণমাধ্যম ও মুক্ত সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে দানবীয় আচরণ করেছিল, তারাই এখন গণমাধ্যমের মুখোশ পরা বন্ধু সেজে সরকারবিরোধী উসকানি দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ বিএনপি নামক বর্ণচোরা দলটিকে ভালো করে চিনে। তাদের কোনো অপকর্ম সফল হবে না। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি জোট যে দানবীয় অত্যাচার চালিয়েছিল তা দেশের মানুষ এখনো ভুলে যায়নি। এ দেশে হত্যা, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারক ও বাহক বিএনপি। তারা এখনো সে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।

মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি সায়ীদুর রহমানের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার ও শাহাবুদ্দীন ফরাজী, মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর নস্কর প্রমুখ বক্তব্য দেন।

অভিমান

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম