Logo
Logo
×

শেষ পাতা

দক্ষিণখানে ক্লিনিকে হাত বেঁধে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ

গাইবান্ধায় পরীক্ষার হলে ঢুকে যৌন হয়রানি : দুই শিক্ষক গ্রেফতার * কালকিনিতে হাত-পা বেঁধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা * কর্ণফুলীতে হত্যার ভয় দেখিয়ে গৃহবধূ, চৌদ্দগ্রামে অস্ত্র দেখিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণী, নকলায় অপহরণের পর ৮ম শ্রেণী, গোয়ালন্দে ভয় দেখিয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ও কুষ্টিয়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণ

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দক্ষিণখানে ক্লিনিকে হাত বেঁধে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ

ফাইল ছবি

রাজধানীর দক্ষিণখানে একটি ক্লিনিকে হাত বেঁধে মাদ্রাসাছাত্রীকে এক চিকিৎসক ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে হত্যার ভয় দেখিয়ে গৃহবধূ, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম অস্ত্র দেখিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণী, নকলায় অপহরণের পর ৮ম শ্রেণী, গোয়ালন্দে ভয় দেখিয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ও কুষ্টিয়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে। গাইবান্ধায় পরীক্ষায় হলে ঢুকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এছাড়া মাদারীপুরের কালকিনিতে হাত-পা বেঁধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। যুগান্তর রিপোর্ট, ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ঢাকা : রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি ক্লিনিকে এক চিকিৎসক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিশোরী মাদ্রাসাছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার দক্ষিণখানের দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানকার চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ তার হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় মামলার পর ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসককে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা যুগান্তরকে বলেন, মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম : কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচর গ্রামে এক গৃহবধূকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকার সাবেক এক ইউপি মেম্বারের ছেলে ইমরান ইমন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষণের ওই ঘটনা ঘটে। ধর্ষিতা ও তার স্বামী পরদিন শুক্রবার থানায় গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। জুলধা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বদিউল আলম বদি পুনরায় যেন তারা থানায় না যায় সেজন্য ধর্ষিতার পরিবারকে বারণ করে এবং ধর্ষকের প্রকাশ্যে বিচার করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়। সে লক্ষ্যে কয়েকদিন কালক্ষেপণ করার পর রোববার ধর্ষণের বিচার করতে সালিশ ডাকে বদি মেম্বার। কিন্তু ধর্ষিতার স্বামী এ বৈঠক আহ্বানকে ‘বিচারের নামে’ প্রহসন দাবি করে তার অসুস্থ স্ত্রীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করান।

হত্যার হুমকি দিয়ে গৃহবধূ ধর্ষণ ও মামলা না নেয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যম থেকে ফোন পাওয়ার পর সেকেন্ড অফিসার আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে বিষয়টি অবগত হয়েছি। ঘটনার পর দিন ধর্ষিতা ও তার স্বামী থানায় আসার বিষয়টি সঠিক। তবে তারা লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় মামলা নেয়া সম্ভব হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কর্ণফুলী থানার শাহমীরপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ সুজন বড়–য়া জানান, ওসির নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তিনি। ধর্ষণের শিকার গৃহবধূসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের জন্য ভিকটিমের লোকজনকে থানায় যেতে বলা হয়েছে।

কুমিল্লা : চৌদ্দগ্রামে ষষ্ঠ শ্রেণীর স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের নারায়ণপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রোববার থানায় মামলা করেছেন। দুপুরে ধর্ষক মো. মুসাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মুসা গুণবতী ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, মুসা ওই ছাত্রীকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করত। শনিবার সন্ধ্যায় ডাক্তার নাছিরের স্ত্রী হাছিনা বেগম স্কুলছাত্রীকে নিয়ে কবিরাজের বাড়িতে যাবে বলে ডেকে নেয়। পরে কৌশলে নারায়ণপুর গ্রামে পরিত্যক্ত খাদ্য গোডাউনের পাশে নিয়ে মুসাকে মোবাইল ফোনে ডেকে আনে। মুসা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এ সময় তার চিৎকারে লোকজন ছুটে এলে মুসা পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নাসির উদ্দিন জানান, ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলার পর মূল আসামি মুসাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শেরপুর : নকলা উপজেলার এক ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগে সোবেল মিয়া নামের একজনকে শনিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে ভিকটিমকেও উদ্ধার করা হয়েছে।

থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ জানান, ওই শিশু ছাত্রীকে ১০ এপ্রিল স্কুলে যাওয়ার পথে বাগরাকান্দা গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে সোবেল মিয়া তার অপর বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করা হয়। পুলিশ শনিবার গভীর রাতে নকলা উপজেলার দড়িপাড়া গ্রাম থেকে আসামি সোবেলকে গ্রেফতার করে। একই সঙ্গে ভিকটিম অপহৃত স্কুলছাত্রীকেও উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে এবং জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। সোবেলকে রোববার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : গোয়ালন্দে পঞ্চম শ্রেণীর স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম বেপারীকে গ্রেফতার করেছে। সে গোয়ালন্দ উপজেলার উত্তর দৌলতদিয়া সামছু মাস্টারের পাড়া গ্রামের মৃত হানিফ বেপারীর ছেলে। এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় শিশুর মা বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ ওই শিশুর শারীরিক পরীক্ষার জন্য রোববার ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে রাজবাড়ীর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত শফিকুলের জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ধর্ষিত শিশুর বরাত দিয়ে জানান, অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম বেপারী শিশুটিকে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ধর্ষণ করে। শনিবার একইভাবে সে শিশুটিকে ফুসলিয়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ধর্ষণের উদ্দেশ্যে যেতে বলে। কিন্তু তার আগেই আমরা শিশুটির কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের খবর দেই। পুলিশ ওতপেতে থেকে সময় মতো তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. এজাজ শফী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শফিকুল ইসলামকে হাতেনাতে গ্রেফতার ও ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

কুষ্টিয়া : জেলার সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের বোয়ালদহ ইউনিয়নে গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে। পুলিশ জানায়, রোববার সকালে গৃহবধূকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের বোয়ালদহ এলাকার পান্নার ছেলে সুমন ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। গৃহবধূর স্বামী এ বিষয়ে কুষ্টিয়া থানায় অভিযোগ করেন। মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ওই গৃহবধূকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কুষ্টিয়া থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, সুমনকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

গাইবান্ধা : জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ কাজলঢোপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে রোববার দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেফতার শিক্ষকরা হল- ওই বিদ্যালয়ের কোচিং শিক্ষক সদর উপজেলার চকগয়েশপুর গ্রামের রহিম বকসের ছেলে চান্দু মিয়া ও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন সরকারের ছেলে সুলতানুল আরেফিন সোহেল।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার স্কুলে পরীক্ষা চলাকালে নিয়মবহির্ভূতভাবে কোচিং শিক্ষক চান্দু মিয়া পরীক্ষার হলে ঢোকে। এ সময় প্রধান শিক্ষক চান্দু মিয়াকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে বাধা দেননি। একপর্যায়ে চান্দু মিয়া ওই শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করে। মেয়েটি তার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানালে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শনিবার এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা স্কুল ঘিরে বিক্ষোভ করলে পুলিশ গিয়ে প্রধান শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

গাইবান্ধা সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার জানান, এ ঘটনায় শনিবার রাতে শিক্ষার্থীর বাবা দু’জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাতভর অভিযান চালিয়ে পুলিশ মূল আসামি চান্দু মিয়াকে গ্রেফতার করে।

মাদারীপুর ও কালকিনি : কালকিনিতে স্কুলছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় রোববার খাশেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

পুলিশ জানায়, উপজেলার বড়চর লক্ষ্মীপুরে দশম শ্রেণীর স্কুলছাত্রী শনিবার রাতে পাশের বাড়িতে টিভি বাড়ি ফেরার পথে একই এলাকার আশ্রাফুল হাওলাদার ও তার সহযোগী ইমরান হাওলাদার মিলে তাকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে ওই দু’জন পালিয়ে যায়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম