চট্টগ্রামের ১৬ আসন: দুটিতে ত্রিমুখী, ১৪ আসনে আ’লীগ-বিএনপির লড়াই

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে ১১৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ১৪টি আসনেই বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের মধ্যে দ্বিমুখী এবং ফটিকছড়ি ও বাঁশখালীতে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
প্রচারণার নির্দিষ্ট সময়ে অধিকাংশ প্রার্থী ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে মন জয়ের চেষ্টা করেছেন। দিয়েছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতিও।
চট্টগ্রামে ১৬টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জোটের শরিকরা ১৫টি আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। অপর একটি আসনে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছে জাতীয় পার্টি। বিএনপি ও জোটের শরিকরা ১৫টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছে। একটি আসনে ছাতা প্রতীকে নির্বাচন করছে এলডিপি।
চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনে ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, গণফোরামের নুর উদ্দিন আহমদ, বিএনপির নুরুল আমিন, ইসলামিক ফ্রন্টের মো. আবদুল মান্নান, ইসলামী আন্দোলনের মো. শামছুদ্দিন ও মুসলিম লীগ-বিএমএল শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে বিএনপি প্রার্থী মো. নুরুল আমিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে ৭ প্রার্থী প্রতিদ্ব^ন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের শরিক তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, বিএনপির মো. আজিম উল্লাহ বাহার, ইসলামী ফ্রন্টের শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ, ইসলামী আন্দোলনের মোহাম্মদ আতিক, ইসলামিক ফ্রন্টের মীর মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম, জাতীয় পার্টির জহরুল ইসলাম রেজা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম।
এ আসনে তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, বিএনপি প্রার্থী মো. আজিম উল্লাহ বাহার ও ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে ৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান মিতা, বিএনপির মোস্তফা কামাল পাশা, ন্যাশনাল পার্টির মোহাম্মদ মোকতাদের আজাদ খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সেলিম উদ্দিন হায়দার ও ইসলামী আন্দোলনের মনসুরুল হক।
এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতার সঙ্গে বিএনপি প্রার্থী মোস্তফা কামাল পাশার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের দিদারুল আলম, বিএনপির মো. ইসহাক চৌধুরী, ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ আশরাফ হোসাইন, ইসলামিক ফ্রন্টের মো. মোজাম্মেল হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. দিদারুল কবির ও ইসলামী আন্দোলনের সামছুল আলম হোসেন।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিদারুল আলম ও বিএনপি প্রার্থী ইসহাক চৌধুরীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে ১০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের শরিক জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বিএনপির শরিক কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মো. নাসির উদ্দিন, খেলাফত মজলিসের শিহাবুদ্দীন, ইসলামিক ফ্রন্টের ছৈয়দ হাফেজ আহমদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মঈন উদ্দিন রুহী, খেলাফত আন্দোলনের মীর ইদরীস, ইসলামী আন্দোলনের মোহাম্মদ রফিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নাছির হায়দার করিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগের শরিক জাতীয় পার্টির প্রাথী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও বিএনপির শরিক কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে ৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, বিএনপির মো. জসিম উদ্দিন সিকদার ও ইসলামী আন্দোলনের মো. আবদুল আলী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও বিএনপি প্রার্থী জসিম উদ্দিন সিকদারের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, এলডিপির নুরুল আলম, জাসদ (জেএসডি) মাহবুবুর রহমান, ইসলামী ফ্রন্টের মু. আবু নওশাদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির জিয়াউর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের মু. নেয়ামত উল্লাহ। এখানে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ ও বিএনপির শরিক এলডিপি প্রার্থী নুরুল আলমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে ৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদের মঈনউদ্দীন খান বাদল, বিএনপির মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মো. আবদুস সামাদ, কমিউনিস্ট পার্টির সেহাব উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলনের মো. ফরিদ উদ্দিন খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী এমদাদুল হক, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির বাপন দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির এসএম ইকবাল হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসান মাহমুদ চৌধুরী।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদের মঈনউদ্দীন খান বাদল ও বিএনপির মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পরে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে ৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন, ইসলামী ফ্রন্টের আবু আজম, ইসলামিক ফ্রন্টের মু. ওয়াহেদ মুরাদ, কমিউনিস্ট পার্টির মৃণাল চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (জেপি) মোরশেদ সিদ্দিকী, ইসলামী আন্দোলনের শেখ আমজাদ হোসেন ও খেলাফত আন্দোলনের মৌলভী রশিদুল হক।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও বিএনপি প্রার্থী কারাবন্দি ডা. শাহাদাত হোসেনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে।
চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর-ডবলমুরিং-খুলশি) আসনে ৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. আফছারুল আমীন, বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির কাজী মো. ইউসুফ আলী চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) জিএসএম আতিউল্লাহ, ইসলামী আন্দোলনের জান্নাতুল ইসলাম, বাসদের মহিন উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবিনা খাতুন ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সৈয়দ মু. হাসান মারুফ।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মো. আফছারুল আমীন ও বিএনপি প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমানের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে ৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের এমএ লতিফ, বিএনপির আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির অপু দাশগুপ্ত, ইসলামিক ফ্রন্টের আবুল বাশার মো. জয়নাল আবেদীন, ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, ইসলামী আন্দোলনের মো. লোকমান ও খেলাফত আন্দোলনের মৌলভী রশিদুল হক। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের এমএ লতিফ, বিএনপির আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে ৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সামশুল হক চৌধুরী, বিএনপির মো. এনামুল হক, ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) দীপক কুমার পালিত, ইসলামী আন্দোলনের দেলাওয়ার হোসেন সাকী, ইসলামিক ফ্রন্টের মাঈনুদ্দিন চৌধুরী, বাসদের সাইফুদ্দিন মোহা. ইউনুচ ও জাতীয় পার্টির মো. নুরুচ্ছফা সরকার। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী ও বিএনপি প্রার্থী মো. এনামুল হকের মধ্যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে ৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম, ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, গণফোরামের উজ্জ্বল ভৌমিক, ইসলামী আন্দোলনের এরফানুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) নারায়ণ রক্ষিত, খেলাফত আন্দোলনের মৌলভী রশিদুল হক ও ইসলামিক ফ্রন্টের জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও বিএনপি প্রার্থী সরওয়ার জামাল নিজামের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে ৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির শরিক দল এলডিপি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীরবিক্রম, ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মু. আবদুস সামাদ, কমিউনিস্ট পার্টির আবদুল নবী, জাতীয় পার্টির আবু জাফর মো. ওয়ালী উল্লাহ, ইসলামিক ফ্রন্টের মু. জানে আলম নিজামী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির আলী নেওয়াজ খান, ইসলামী আন্দোলনের দেলাওয়ার হোসেন সাকী ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মোহাম্মদ আলী ফারুকী।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও বিএনপির শরিক দল এলডিপির কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীরবিক্রমের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে ৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, বিএনপির শরিক দল জামায়াত (নিবন্ধন বাতিল) আ ন ম শামশুল ইসলাম, গণফোরামের আবদুল মোমেন চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলনের নুরুল আলম ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফজলুল হক। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও বিএনপির শরিক জামায়াতে ইসলামীর আ ন ম শামশুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে ৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী (জামায়াত) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির আশীষ কুমার শীল, ইসলামী আন্দোলনের এইচএম ফরিদ আহম্মদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী বজল আহমদ, ইসলামী ফ্রন্টের মুনিরুল ইসলাম, ইসলামিক ফ্রন্টের মহিউল আলম চৌধুরী।
এ আসনে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (জামায়াত) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের মধ্যে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।