বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে ৭ নাম্বার বাদ
‘ভাঙন ঠেকাতেই এ উদ্যোগ’
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অবশেষে গঠনতন্ত্র থেকে ৭ নাম্বার ধারা বাদ দিয়েছে বিএনপি। দল ভাঙার চেষ্টায় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে পারে এই আশঙ্কায় ধারাটি বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সদস্যদের চাঁদার হার নির্ধারণ, প্রতিটি ইউনিট কমিটি কত সদস্যের হবে- তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। সংশোধিত গঠনতন্ত্র রোববার নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে দলটি।
বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ নাম্বার ধারার ‘কমিটির সদস্য পদের অযোগ্যতা’ শিরোনামে বলা ছিল, ‘নিন্মোক্ত ব্যক্তিগণ জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জাতীয় স্থায়ী কমিটি বা যেকোনো পর্যায়ের যেকোনো নির্বাহী কমিটির সদস্য পদের কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী পদের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।’ তারা হলেন- (ক) ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ৮-এর বলে দণ্ডিত ব্যক্তি, (খ) দেউলিয়া, (গ) উন্মাদ বলে প্রমাণিত ব্যক্তি, (ঘ) সমাজে দুর্নীতিপরায়ণ বা কুখ্যাত বলে পরিচিত ব্যক্তি।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপিকে ভাঙতে সরকারের একটি মহল থেকে চেষ্টা-তৎপরতা চালাতে পারে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের পর এ তৎপরতা গতি পেতে পারে। মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা হলে ‘দুর্নীতিপরায়ণ’ ব্যক্তি দলের সদস্য পদের অযোগ্য হবেন বলে যে কথাটি গঠনতন্ত্রে আছে, তা সামনে এনে ওই মহল বিএনপিতে বিভক্তি সৃষ্টির জন্য দলের একটা অংশকে ব্যবহার করতে পারে। এ আশঙ্কার কারণে গঠনতন্ত্রের ৭ ধারাটি তুলে দেয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে গঠনতন্ত্রে কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব পাস হয়। আগের গঠনতন্ত্রের ৭ (ঘ) ধারাটি ছিল বলে জানা গেছে। কিন্তু এতদিন দলটি নির্বাচন কমিশনে গঠনতন্ত্র জমা দেয়নি। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে চিঠিও দেয়। ১ বছর ১০ মাস পর ওই ধারা বাদ দিয়ে রোববার গঠনতন্ত্র জমা দিল দলটি।
অবশ্য গঠনতন্ত্রের ৩-এ ‘সদস্য পদ লাভের যোগ্যতা’ ও ‘সদস্য পদ লাভের অযোগ্যতা’ ধারাটি বলবৎ আছে। তাতে বলা হয়- বাংলাদেশের আইনানুগ নাগরিক নন, এমন কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য হতে পারবেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতায়, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার বিরোধী, গোপন সশস্ত্র রাজনীতিতে বিশ্বাসী, সক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা সমাজবিরোধী ও গণবিরোধী কোনো ব্যক্তিকে সদস্য পদ দেয়া হবে না।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, ‘৩ নাম্বার ধারার নির্দেশনাই দলের যেকোনো কমিটির সদস্য ও সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী পদের অযোগ্যতা হিসেবে ধরে নেয়া হবে।’