ক্যারিয়ার হিসেবে ভিডিও এডিটিং

এম এ রশিদ
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০১৯, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে আপগ্রেড করে নিতে পারলে সব সময়ই সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো সম্ভব। ভিডিও এডিটিং এমন একটি পেশা যেখানে আপনি এ পেশায় জড়িয়ে থাকতে পারবেন। বিশ্বব্যাপী রয়েছে এ পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্র। খ্যাতি, সুনাম, পরিচিতির সঙ্গে রয়েছে সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি। চিত্রগ্রাহকদের ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ এডিটিং সফটওয়্যারের সাহায্যে কাটছাঁট করে দর্শকদের দেখার উপযোগী করে তোলাই ভিডিও এডিটরের কাজ। তাই একজন ভিডিও এডিটর দক্ষ কারিগরি জ্ঞানদ্বারা দর্শকের ভালো লাগা আর মন্দ লাগা অনেকটাই জড়িয়ে থাকে।
সৃজনশীলতা বরাবরই আপনাকে আকাশ ছোঁয়াতে পারে। তাই আপনি শুরু থেকেই চমকপ্রদ এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেই পারেন। আপনি আপনার সৃজনশীল কাজ দিয়ে সিনেমা, নাটক, বিজ্ঞাপনকে বহুগুণ আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন।
বর্তমানে হলিউডের প্রায় প্রতিটি চলচ্চিত্রই অ্যানিমেশনের হাত ধরে দর্শকের দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে। তাই তো অ্যানিমেশন মাস্টারদের কারিশমাতে ভর করা হলিউডের সঙ্গে ঢালিউডের এতটা ফারাক! বাংলাদেশে এখনও অ্যানিমেশনের তেমন কোনো ছোঁয়া পড়েনি, হাতেগোনা কিছু কাজ হয়েছে মাত্র। দেশে যে পরিমাণ সৃজনশীল জনবল রয়েছে তাদের আধুনিক একটি কর্মক্ষেত্র তৈরি করে দিতে পারলে অচিরেই এ দেশের নির্মাতারা সাধারণ জনগণকে হলিউডের মতো চলচ্চিত্র উপহার দিতে পারবেন বলে আশাবাদী।
পড়াশোনা ও অন্যান্য পেশা থেকেও ভিডিও এডিটিং পেশায় নিযুক্ত হয়ে আপনি আয়ের উৎস বাড়াতে পারেন। রীতিমতো অনেকে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া নিজস্ব ব্যবসা বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও কাজ করতে পারেন। আর সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ফার্ম এবং ওয়েবসাইট তো বসেই আছে আপনার প্রতীক্ষায়!
বাংলাদেশে এখন প্রায় ২৫-২৬টি টিভি চ্যানেল রয়েছে। সবগুলো টিভি চ্যানেলেই প্রয়োজন দক্ষ ভিডিও এডিটরের। টিভি চ্যানেলগুলোতে সংবাদের পাশাপাশি অসংখ্য অনুষ্ঠান, নাটক, ম্যাগাজিন, বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়। সব অনুষ্ঠান টিভি চ্যানেল ছাড়াও প্রযোজনা সংস্থাও নির্মাণ করে থাকে। তাই ফুলটাইম-পার্টটাইম দু’ভাবেই ভিডিও এডিটর হিসেবে কাজ করা যায়।
দেশে টিভি চ্যানেল দিন দিন বাড়ছে। এই বাড়াটা স্বাভাবিক। ফলে বর্তমান সময়ে ভিডিও এডিটরদের প্রসার ও প্রচার ঘটছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। প্রতিটি চ্যানেলে মোটামুটি ২৫ থেকে ৫০ জন ভিডিও এডিটর রয়েছে। সেটি জানলে হয়ত চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাটা অনুধাবন করা সহজ হবে। একটা চ্যানেলে ৫ ধরনের ক্যাটাগরিতে ভিডিও এডিটরস নেয়া হয়।
১. ভিডিও এডিটর ইনচার্জ, ২. সিনিয়র ভিডিও এডিটর, ৩. ভিডিও এডিটর, ৪. জুনিয়র ভিডিও এডিটর এবং ৫. নতুন যারা আসতে চায় ফ্রেশার বা শিক্ষানবিশ সেখানে শিক্ষানবিশ নিয়োগ দেয়া হয়।
একজন ভিডিও এডিটর মাসিক পারিশ্রমিক হিসেবে ১৮-২০ হাজার এবং পরবর্তী সময়ে তা ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকাও হতে পারে। যত বেশি চ্যানেল তত বেশি নাটক ও সিনেমা আর বিজ্ঞাপন। মাল্টিমিডিয়া জগতে শিক্ষাগত যোগ্যতাকে কোনো সঠিক মাপ কাঠিতে মাপা সম্ভব নয়। কারণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জ্ঞানের পরিধি যত বিস্তৃত তত বেশি করে বিস্তার ঘটিয়ে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। তাই আপনার মেধা কাজে লাগিয়ে ভালো কাজ প্রদর্শন করে কাজের শৈল্পিক নান্দনিকতা বাড়াতে এই পেশাটাকে আপন করতে পারেন। বেকারত্ব, হতাশা, দরিদ্রতা শুধু কিছুদিনের প্রশিক্ষণে আপনার আগামী জীবন সুন্দর, ভবিষ্যৎ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।
সফলতার পথে যাত্রা করলে সেই পথে বাধা-বিপত্তি আসবেই তবে সেই হারকে নেতিবাচকভাবে না নিয়েই ইতিবাচকভাবে নিন। আপনি যতবার হারবেন আপনার জেতার সম্ভাবনা তত বেশি বেড়ে যাবে। আপনার চাই স্থির চিন্তা শক্তি ও অটুট অত্মবিশ্বাস। প্রযুক্তি আপনার জন্য; আপনি প্রযুক্তির জন্য।
লেখক : ভিডিও এডিটর