বিউটি কনটেস্টের মাধ্যমে টাওয়ার কোম্পানির লাইসেন্স

সাইফুল ফয়সাল
প্রকাশ: ২২ মে ২০১৮, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের সব মুঠোফোন কোম্পানির মালিকানাধীন ৩০ হাজারেরও বেশি টাওয়ার পরিচালনায় ৪টি কোম্পানিকে লাইসেন্স দেয়ার অনুমোদিত নীতিমালা করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
অনুমোদিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, দেশি ৩০ শতাংশ ও বিদেশি ৭০ শতাংশ যৌথ বিনিয়োগে নতুন টাওয়ার পরিচালনা করতে পারবে কোম্পানিগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বখ্যাত এটিসি-আমেরিকান টাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে স্থানীয় কোম্পানি কনফিডেন্স টাওয়ার যৌথ বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।
এ যৌথ কোম্পানিই নানা নামে সব মিলে পাঁচটি আবেদন কিনেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া ইডটকো একাধিক আবেদন কিনেছে। আবেদন কিনেছে ফাইবার অ্যাট হোম ও সামিট কমিউনিকেশনও।
গত ১৩ মে আবেদনের শেষ দিন থাকলেও পরে তা বাড়িয়ে ১১ জুন করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, স্যাটেলাইট সংক্রান্ত নানা জটিলতার কারণেই সময় বাড়ানো হয়েছে।
নীতিমালা অনুসারে চার কোম্পানিকে টাওয়ার কোম্পানির লাইসেন্স দেয়া হবে। ‘বিউটি কনটেস্টের’ মাধ্যমে দেয়া হবে এ লাইসেন্স। ফলে কোনো রকম নিলাম বা টাকার লড়াই এখানে হবে না।
বিউটি কনটেস্ট হল, যে কোম্পানির প্রস্তাব যত ভালো হবে সেটিই লাইসেন্স পেতে যোগ্য বিবেচিত হবে। আবেদনকারীদের জয়েন্ট ভেঞ্চারের কোনো একটি কোম্পনির ন্যূনতম পাঁচ হাজার সাইট পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকার শর্ত আছে।
টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স দেয়া হলে তখন মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো কোনো নতুন টাওয়ার স্থাপন করতে পারবে না। একই সঙ্গে লাইসেন্স পাওয়া টাওয়ার কোম্পানির কাছে তাদের টাওয়ার বিক্রি করতে পারবে। তবে নিজেরা আর টাওয়ার ভাড়া দিতে পারবে না।
বর্তমানে রবি’র সহযোগী কোম্পানি হিসেবে টাওয়ার ব্যবসায় আছে ইডটকো বাংলাদেশ। নীতিমালা অনুযায়ী লাইসেন্স ফি ধরা হয়েছিল ২৫ কোটি টাকা, আবেদন ফি ৫ লাখ টাকা।
লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্বিতীয় বছর থেকে গ্রস রেভিনিউ শেয়ারিং করতে হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে। এছাড়া দ্বিতীয় বছর থেকে বিটিআরসির সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে (এসওএফ) আয়ের এক শতাংশ জমা করতে হবে।
আর পারফরম্যান্স ব্যাংক গ্যারান্টি জমা দিতে হবে ২০ কোটি টাকা। অফার সিকিউরিটি মানি জমা দিতে হবে এক কোটি টাকা। লাইসেন্স পাওয়ার পর প্রথম বছর কোম্পানিটিকে দেশের সব বিভাগীয় শহরে সেবা সম্প্রসারণ করতে হবে। দ্বিতীয় বছর জেলা শহর, তৃতীয় বছর ৩০ শতাংশ উপজেলা, চতুর্থ বছর ৬০ শতাংশ উপজেলা ও পঞ্চম বছর দেশের সব উপজেলায় টাওয়ার নিতে হবে।
নেটওয়ার্ক অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায় বিপুল ব্যয়ের পাশাপাশি অনেক জনবল লাগছে টাওয়ার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষেণ। এছাড়া টাওয়ারের অনিয়ন্ত্রিত সংখ্যা, ভূমি ও বিদ্যুতের সংকট ছাড়াও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব রয়েছে।
এসব কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টাওয়ার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থেকে নিজেদের সরিয়ে আনছে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। এক্ষেত্রে অবকাঠামো ভাড়া প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সেবা নিয়ে থাকে তারা। ফলে একই অবকাঠামো ভাগাভাগির মাধ্যমে তা থেকে সেবা পেতে পারে একাধিক অপারেটর। দেশেও তা অনুসরণ করা হবে।