Logo
Logo
×

শিল্প বাণিজ্য

নতুন রেলপথ হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে

২৬ দশমিক ৫২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ ও সংস্কারে ব্যয় ৩৩৬ কোটি টাকা

Icon

হামিদ-উজ-জামান

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০১৮, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের সর্বোচ্চ ব্যয়ের প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে রেলপথ। এজন্য ২৬ দশমিক ৫২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯ কিলোমিটার রেলপথ একেবারেই নতুনভাবে নির্মিত হবে। বাকি ১৭ দশমিক ৫২ কিলোমিটার রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হবে। ফলে ঈশ্বরদী বাইপাস টেকঅফ পয়েন্ট থেকে রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত স্থাপিত হবে নতুন রেলপথ। এজন্য ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সিগন্যালিংসহ রেললাইন সংস্কার ও নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর মধ্য দিয়ে দেশের সর্ববৃহৎ এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নিরাপদ, দ্রুত ও মালবাহী ট্রেন সেবা চালু করা সম্ভব হবে। এছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ের আয়ও বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইতিমধ্যেই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সব প্রক্রিয়া শেষ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। শিগগিরই একনেকে উপস্থাপন করা হবে প্রকল্পটি। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ একনেকের জন্য তৈরি করা সারসংক্ষেপে উল্লেখ করেছেন, বিবেচ্য প্রকল্পটির মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনসহ মালবাহী ট্রেন সার্ভিস চালু করা সম্ভব হবে। ফলে নিরাপদ ও দ্রুত এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি ও মালামাল পরিবহনে সহায়তা করবে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটি গ্রহণের যৌক্তিকতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। যেটি প্রধানমন্ত্রী সরাসরি পর্যবেক্ষণ করছেন। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পূর্ত কাজ বর্তমানে চলছে। প্রকল্পটির সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য ভারি যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য মালামাল রেলওয়ের মাধ্যমে পরিবহন করা হবে বলে এর আগেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের চাহিদার ভিত্তিতে রেলপথ মন্ত্রণালয় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রেল সংযোগের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়েকে নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সার্বিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপনা সিস্টেম স্থাপনে সহায়তার জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করেছে। যেহেতু এটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত তাই প্রকল্পটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ২৬ দশমিক ৫২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা। এছাড়া একটি বি শ্রেণীর রেলওয়ে স্টেশন তৈরি, ১৩টি লেভেলক্রসিং এবং ৭টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কম্পিউটার বেইজড কালার লাইট সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন, অফিস স্টেশনারি, কম্পিউটার সামগ্রী, ফার্নিচারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং একটি জিপ ও ৪টি মোটর সাইকেল ক্রয় করা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) সূত্র জানায়, চলমান সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের ওপর গুরত্বারোপ করা হয়েছে। এ পরিকল্পনায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার ও সম্প্রসারণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করবে। তাই এটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। সূত্র জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায়ে মূল প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মোট ৭ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। এর আগে প্রকল্পটি প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ৮৭৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এ পর্যায়টি প্রায় সমাপ্ত হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম