সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন
বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের যাত্রা শুরু
পাঁচ দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, দেশ পরিচালনায় ৯ দফা * ‘প্রকৃত গণতন্ত্র’ ফিরিয়ে আনার জন্য সবাইকে পাহারা দিতে হবে -ড. কামাল * আলোচনার ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন * গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন * নির্বাচন পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করা * নির্বাচনের এক মাস আগে ম্যাজিস্ট্রেসিসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন * ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা ও পরিকল্পনা বাদ দেয়া
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০২:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জাতীয় প্রেস ক্লাব লাউঞ্জে শনিবার যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কর্মসূচিতে হাতে হাত ধরে ড. কামাল হোসেনসহ নেতারা -যুগান্তর
ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আজ থেকে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’র কার্যক্রম শুরু হল। এই প্লাটফর্ম থেকে আগামীতে একসঙ্গে আন্দোলন, নির্বাচন এবং সরকার পরিচালনার অঙ্গীকার ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতাবিরোধী দল ও ব্যক্তি ছাড়া, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল, সামাজিক শক্তি ও নাগরিক সমাজকে ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানান বিশিষ্ট এ আইনজীবী। এর অংশ হিসেবে অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট এবং ড. কামাল হোসেনের ঐক্য প্রক্রিয়ার পাঁচ দফা দাবি এবং আরও নয় দফা লক্ষ্য ঘোষণা দেয়া হয়।
শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে দুই জোটের পক্ষে ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন এ ঘোষণা দেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে এটি ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে অনুষ্ঠান করতে না দেয়ায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে তারা এ ঘোষণা দেন। ড. কামাল এ সময় জোটবদ্ধ নির্বাচন, সৎ, যোগ্য ব্যক্তিদের নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আইন প্রণয়ন এবং শাসন কাজ পরিচালনার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, জনগণকে সুসংগঠিত করে অভিন্ন দাবি আদায় এবং লক্ষ্য বাস্তবায়নে শান্তিপূর্ণ ও অহিংস গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে তিনি বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ার কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখবেন। সংবাদ সম্মেলনে ‘বৃহত্তর ঐক্য’র পাঁচ দফা দাবি ও নয় দফা লক্ষ্য পাঠ করে শোনান মাহমুদুর রহমান মান্না।
সংবাদ সম্মেলনে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’র কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন ড. কামাল হোসেন। তিনি এই ‘বৃহত্তর ঐক্য’ প্রক্রিয়ায় ‘স্বাধীনতার পক্ষের সব শক্তিকে’ যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রত্যেক পাড়ায়, ঘরে ঘরে ঐক্য করার আহ্বান জানান। দেশে ‘প্রকৃত গণতন্ত্র’ ফিরিয়ে আনার জন্য সবাইকে পাহারা দিতে হবে, যেন কেউ আর ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। কালো টাকার প্রভাব খাটাতে না পারে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে না পারে। তিনি বলেন, সময় এসেছে পরিবর্তনের। সমতার ভিত্তিতে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে এখনই ঐক্য প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে হবে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের প্রকৃত মালিক জনগণ। এটা বাস্তবায়ন করতে সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। স্বাধীনতার ৫০ বছর সামনে রেখে জাতীয় সংসদে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যখনই নির্বাচন দেয়া হয়, তখনই আমাদের সামনে আসতে হয়। নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হবে, আমরা আশাবাদী, সন্ত্রাস-কালো টাকামুক্ত নির্বাচনে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সবাই ভোট দিতে পারবেন। এ জন্য প্রত্যেক পাড়ায় পাহারা দিতে হবে। কার্যকর গণতন্ত্র শুধু সংবিধানেই লেখা আছে, কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ জন্য আমরা কাজ করছি। প্রকৃত অর্থে যারা জনগণের প্রতিনিধি তারাই দেশ পরিচালনা করবেন। আজ থেকে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’র কার্যক্রম শুরু হল।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের উদাহরণ টেনে ড. কামাল বলেন, আমরা কোটার তরুণদের কাছ থেকে আন্দোলনের রূপ ধারণ করতে পারি। কোটা সংস্কারের দাবি শতভাগ সঠিক। অথচ সরকার শিক্ষার্থীদের এমন যৌক্তিক দাবির সঙ্গে বিরোধিতা করছে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ-ছাত্রলীগ মিলে হামলা করছে। তরুণ শিক্ষার্থীরা হাল ছাড়েনি। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের কাছ থেকে আন্দোলন শিখতে পারি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করল, তা-ও রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বিশেষ শিক্ষা।
প্রবীণ এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘সমাজে যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে, তা থেকে মানুষ মুক্তি চায়। আর একমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনই পারে জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে। খুন, হত্যা, দুর্নীতি থেকে মানুষ মুক্তি চায়। আর এই মুক্তি আন্দোলনে শরিক হতেই আমরা ঐক্য প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি।’
এ সময় আ স ম আবদুর রব বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকার সেখানে যেতে দেয়নি। তারা আমাদের জানিয়েছে, শহীদ মিনারে যাওয়া যাবে না। সেখানে পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। সে জন্য প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করতে হল।
যুক্তফ্রন্টের শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, ঐক্য প্রক্রিয়ার শরিক দল ফরোয়ার্ড পার্টির আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমিন প্র্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। যুক্তফ্রন্টের প্রধান শরিক দল বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী অসুস্থতার কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি। দলটির মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানও অনুপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি থেকে বেরিয়ে বিকল্প ধারা গঠন করেন বি. চৌধুরী আর আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গণফোরাম গড়েন ড. কামাল হোসেন। জাতীয় ঐক্য গড়ার ঘোষণাপত্রে এ দুই প্রবীণ নেতা বর্তমান ক্ষমতাসীনদের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তারা সরকারকে জনসমর্থনহীন, অনির্বাচিত বলেও উল্লেখ করেন। লিখিত প্রস্তাবে দাবি করেন, সন্ত্রাস, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশ প্রশাসন ব্যবহার করে সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে। জনসমর্থন নিয়ে কেউ যাতে ক্ষমতায় না আসতে পারে, সে জন্য তারা জনগণের অবাধ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অধিকারসহ গণতান্ত্রিক ও ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। আগামী নির্বাচনে যে কোনোভাবে জয়লাভের জন্য ইভিএম পদ্ধতি প্রবর্তন, ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করার জন্য একের পর এক কূটকৌশল অবলম্বন করছে।
তারা আরও দাবি করেন, সন্ত্রাস, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং নির্বিচারে জেল-জুলুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকারসহ, মৌলিক, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রসমাজের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন পুলিশ ও সরকারি নামধারী ছাত্র সংগঠন অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে দমনে লিপ্ত। এখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই, ভিন্ন মতের কাউকে নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হয় না। রাষ্ট্রের আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ, বিচার বিভাগসহ সমগ্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বেচ্ছাচারী নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
এই দুই নেতা মনে করেন, এ পরিস্থিতি থেকে দেশ, জাতি ও জনগণকে মুক্ত করে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বত্র কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ার কোনো বিকল্প নেই। জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে যুক্তফ্রন্ট এবং ঐক্য প্রক্রিয়া পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করবে।
এই দাবিগুলো হল-
আসন্ন জাতীয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সুবিধা অর্থাৎ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
২। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।
৩। ‘কোটা সংস্কার’ এবং ‘নিরাপদ সড়ক’ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রছাত্রীসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা মামলাসমূহ প্রত্যাহার করতে এবং গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। এখন থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা যাবে না।
৪। নির্বাচনের ১ (এক) মাস আগে থেকে নির্বাচনের পরের ১০ (দশ) দিন মোট ৪০ (চল্লিশ) দিন প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে।
৫। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা ও পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর যুগোপযোগী সংশোধনের মাধ্যমে গণমুখী করতে হবে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনায় নয়টি লক্ষ্যের কথাও জানিয়েছে তারা। রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে তারা কী করবে, এ লক্ষ্যে তা বলা হয়েছে। তাদের লক্ষ্য হল-
১। বাংলাদেশে স্বেচ্ছাচারী শাসন ব্যবস্থা থেকে পরিত্রাণ এবং এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক নির্বাহী ক্ষমতার অবসানের লক্ষ্যে সংসদে, সরকারে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনাসহ প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ, ন্যায়পাল নিয়োগ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কার্যকর করা। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদসহ যুগোপযোগী সংশোধন করা এবং জনগণের ক্ষমতায়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করাসহ সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানসমূহের গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ ও সৎ যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগদানের জন্য সাংবিধানিক কমিশন গঠন করা।
২। দুর্নীতি দমন কমিশনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত করা হবে। দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দুর্নীতিকে কঠোর হাতে দমন এবং ইতঃপূর্বে দুর্নীতির দায়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
৩। দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি, বেকারত্বের অবসান ও শিক্ষিত যুবসমাজের সৃজনশীলতাসহ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়োগদানের ক্ষেত্রে মেধাকে একমাত্র যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা।
৪। কৃষক-শ্রমিক ও দরিদ্র জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সরকারি অর্থায়নে সুনিশ্চিত করা।
৫। জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে দুর্নীতি ও দলীয়করণের কালো থাবা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের সার্বিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও কাঠামোগত সংস্কার সাধন করা।
৬। রাষ্ট্রের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, জনগণের আর্থিক সচ্ছলতা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা নিশ্চিত, জাতীয় সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, সুষম বণ্টন ও জনকল্যাণমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
৬। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গঠন এবং প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা ও নেতিবাচক রাজনীতির বিপরীতে ইতিবাচক সৃজনশীল এবং কার্যকর ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা।
৮। ‘সকল দেশের সাথে বন্ধুত্ব-কারো সাথে শত্রুতা নয়’- এই নীতির আলোকে জনস্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তা সমুন্নত রেখে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা এবং প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে পারস্পরিক সৎ প্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্ব ও সমতার ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৯। বিশ্বের সব নিপীড়িত মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ও সংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফেরত ও পুনর্বাসনের কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার এবং দেশের সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সুরক্ষার লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আধুনিক প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও সমর-সম্ভারে সুসজ্জিত, সুসংগঠিত ও যুগোপযোগী করা।