Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

সংকট নিরসনে রাজনৈতিক নেতাদের অভিমত

সব দল নিয়ে বসার পরামর্শ

আন্দোলন নিয়ে সরকার দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করছে -ফখরুল ইসলাম আলমগীর * রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে, বল প্রয়োগের ফল শুভ হবে না -রাশেদ খান মেনন * রাজাকে বাঁচাতে প্রয়োজনে হাতি-ঘোড়া ও মন্ত্রীকেও বিসর্জন দিতে হবে -হাসানুল হক ইনু * ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর দমনপীড়ন বন্ধ করতে হবে -মুজিবুল হক চুন্নু

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সব দল নিয়ে বসার পরামর্শ

ছবি সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট চলমান পরিস্থিতি একটি রাজনৈতিক সংকট-এমন মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন দলের নেতারা। তাদের মতে, আলোচনার মাধ্যমে চলমান সংকট সমাধানের পথ খুঁজে বের করা উচিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বল প্রয়োগ করলে হিতে বিপরীত হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার শঙ্কা আছে। আর আন্দোলনকারী নেতাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ভিডিও বার্তা দেওয়ার ঘটনারও তীব্র সমালোচন করেন।

এর মধ্য দিয়ে দেশবাসীর কাছে একটি ভুল বার্তা গেল। তাদের আরও অভিমত-আন্দোলনে যারা আহত ও নিহত হয়েছেন, তাদের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। তবে ক্ষমতাসীন দলের সরাসরি বিরোধী-এমন দলের নেতারা বলেছেন, সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থাই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।

চলমান সংকট প্রসঙ্গে সোমবার যুগান্তরের সঙ্গে আলাপ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এসব মন্তব্য করেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে নিয়ে সরকার দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করছে। একদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নিরীহ ছাত্রছাত্রী এবং কোটা সংস্কারের নেতাদের নির্যাতন করা হবে না, অপরদিকে প্রতিনিয়ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার অব্যাহত রাখা হয়েছে। গুম করছে, অমানবিক নির্যাতন করছে। সাধারণ মানুষ, প্রতিবন্ধী শিশু এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার এমনকি চাকরিজীবীরা পর্যন্ত এ ধরনের অমানবিক কর্মকাণ্ড থেকে রেহাই পাচ্ছে না। সারা দেশে ৯ হাজারের অধিক বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত সাবেক মন্ত্রী-সংসদ সদস্যসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাদের নিষিদ্ধ সন্ত্রাসীদের মতো ৫ দিন বা ৭ দিন করে রিমান্ডে নির্যাতন করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জনরোষে পড়ার ভয়ে সরকার জোর করে ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশে কারফিউ দিয়ে রেলসহ সব যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে রেখেছে। জনগণকে কর্মহীন রেখে অনাহারে দিনাতিপাত করতে বাধ্য করছে। দ্রব্যমূল্য দিন দিন মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে জাতি দ্রুত মুক্তি চায়। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সমাধান। সরকারকে বলব, সব হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থাই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।

আলোচনার মাধ্যমে চলমান সংকট সমাধানের পথ খুঁজে বের করার দাবি জানিয়ে প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, এটি একটি রাজনৈতিক সংকট। রাজনৈতিকভাবেই এই সংকটের সমাধান করতে হবে। এখানে বল প্রয়োগের ফলাফল শুভ হবে না।

তিনি আরও বলেন, আজকে দেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা সরকারের অতিমাত্রায় আমলাতন্ত্রের ওপর নির্ভরতা এবং বিরাজনীতিকরণেরই ফলাফল। উদাহরণ দিয়ে প্রবীণ এই বামপন্থি নেতা বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ যেভাবে কোটা আন্দোলনের ছয় নেতাকে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে ধরে নিয়ে গেলেন, তারপর চাওমিন খাওয়ায়ে তাদের (নেতাদের) দিয়ে যে ভিডিও বার্তা দিলেন-তাতে সংকট কমবে না, বরং বাড়বে। ছাত্রছাত্রী-অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষের মাঝেও এ বিষয়ে ভুল বার্তা যাবে। মনে হবে ছাত্রনেতাদের চাপ দিয়ে অথবা বল প্রয়োগ করে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে।

রাশেদ খান মেনন বলেন, সরকারের কিছু মন্ত্রীদের বক্তব্যের কারণেও সংকট ঘনিভূত হচ্ছে। তাদের বাড়তি কথা বলা বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কী বক্তব্য, তা জানতে হবে; তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। পাশাপাশি এ আন্দোলনে যারা মারা গেছেন, যারা আহত হয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি করে প্রকাশ করতে হবে। সত্যিকার অর্থে কতজন মারা গেছেন, তা নির্দিষ্ট করতে হবে। যাদের চিকিৎসা দরকার, তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে হবে। পাশাপাশি যারা নাশকতার সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। তা হলেই স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সংকট উত্তরণে প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নেওয়া। এর জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়াসহ যা যা করণীয় তা করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনার সাফল্যের ওপর নির্ভর করছে পরবর্তী করণীয় অর্থাৎ দেশটাকে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। তিনি আরও বলেন, দাবা খেলায় একটা নিয়ম আছে, সেখানে রাজাকে বাঁচাতে হাতি-ঘোড়া, এমনকি মন্ত্রীকেও বিসর্জন দেওয়া হয়। চলমান সংকট থেকে উত্তরণে প্রয়োজনে একই রীতি অনুসরণ করতে হবে। রাজাকে যে কোনো মূল্যে বাঁচাতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে হাতি-ঘোড়া, এমনকি মন্ত্রীকেও বিসর্জন দিতে হবে।

প্রবীণ এই বামপন্থি নেতা বলেন, এবারের ছাত্র আন্দোলন সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের পদ্ধতিগত এবং কৌশলগত ভুল ছিল। তারা বিষয়টি সমাধানের ক্ষেত্রে অযথা কালক্ষেপণ করেছে। সরকারের একাধিক মন্ত্রী অপ্রয়োজনীয় কথা বলেছে, ভুল বক্তব্য দিয়েছে। সরকারি দল তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে আন্দোলনরত সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর আক্রমণাত্মক হতে উসকানি দিয়েছে। পুলিশের এবং গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতাও অস্বীকার করার উপায় নেই। যার সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরসহ স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী গোষ্ঠী কোটা আন্দোলনের মতো একটি অহিংস সাধারণ আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে নিয়ে গেছে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক সংকট। রাজনৈতিকভাবেই এর সমাধান খোঁজাটাই হচ্ছে উত্তম পদ্ধতি। সরকার প্রথমেই দুজন মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রীকে আন্দোলনরতদের সঙ্গে আলোচনার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিল। হঠাৎ তাদের বাদ দিয়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হলো, যা কোনোভাবেই বোধগম্য নয়। সরকার নানা বিষয়ে প্রশাসনকে কাজে লাগাবে-এটাই স্বাভাবিক, তবে প্রশাসনের ওপর সব বিষয়ে নির্ভর করাটা কখনোই মঙ্গলজনক নয়। ছাত্রলীগকে এই বিরোধে জড়ানোটাও বুদ্ধিমানের কাজ হয়নি। এতে করে সমস্যা বেড়েছে, সংকটও বেড়েছে। এ অবস্থায় সংকট উত্তরণে পুলিশের তাড়াহুড়া করাটা বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক নেতা এবং ব্যক্তিদের দিয়ে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। ছাত্ররা যদি মাঠেই থাকে, তাহলে তৃতীয় পক্ষ আবারও সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। তাই যে কোনো মূল্যে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে ফেরাতে হবে। তাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক না করে, রেষারেষি না করে, তাদের মনের ক্ষত দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ থেকে যাবে। তৃতীয় পক্ষ সেই ক্ষোভকে আবার উসকে দেবে।

সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি। তিনি বলেছেন, আর সময়ক্ষেপণ করা ঠিক হবে না। প্রধানমন্ত্রীর উচিত দেশের সব রাজনৈতিক দলকে ডেকে, এক টেবিলে বসিয়ে এই সংকট উত্তরণে আলোচনা করা। একই সঙ্গে সংসদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করে সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এবং কোটাব্যবস্থার বিষয়ে একটি আইন প্রণয়ন করারও উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, এই আইনটি আরও আগেই করা যেত। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীরা বিষয়টিকে সেভাবে আমলে নেননি কিংবা গুরুত্ব দেননি। তারা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছে। হেয় করেছে, আন্দোলনটাকে ছোট করে দেখেছে। এমনকি ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের শায়েস্তা করাতে চেয়েছে। ক্ষমতাসীনরা এমন ভাব দেখিয়েছেন যে, এই দেশ কেবল তাদের একার। এ দেশে তারা যখন যা বলবেন, তাই হবে। এক কথায় বলা যায়, সরকারি দলের মন্ত্রীদের ক্ষমতার দাপট, অহমিকা, দম্ভ এবং অতিকথনের কারণে সাধারণ ছাত্র আন্দোলন এক পর্যায়ে গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, দুর্নীতি, দলীয়করণ, দুঃশাসন, লুটপাট, বিদেশে অর্থ পাচার, বেকারত্বের তীব্র সংকটের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতিতে দেশের সর্বস্তরের মানুষ এমনিতেই বিক্ষুব্ধ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। বিক্ষুব্ধ মানুষও তাই বাধ্য হয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে। তারাও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে সরকারকে একটি বার্তা দিতে চেয়েছে। সরকার তা বোঝার চেষ্টা না করে দমনপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। এখনো তারা একই পথে হাঁটছে। যার ফলাফল শুভকর হবে বলে মনে হয় না।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব আরও বলেন, এখনো সময় আছে, চলমান সংকট থেকে উত্তরণে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ন্যায়সঙ্গত দাবি যত দ্রুত সম্ভব সরকারকে তা মেনে নিতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের ওপর দমনপীড়ন বন্ধ করতে হবে। আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে হবে। নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য কমিশন গঠনের মাধ্যমে নিহতদের প্রকৃত তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নিহত এবং আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিচারের আওতায় আনাটাও এই সময়ে খুবই জরুরি।

তিনি বলেন, এটি এখন রাজনৈতিক সংকট। এই সংকট রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। যদিও আওয়ামী লীগ চালায় এখন হাইব্রিডরা। দলটির অভিজ্ঞ ও ত্যাগী নেতারা হাইব্রিডদের দাপটে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। তারা বসে থাকেন পেছনের সারিতে। তা না হলে কাদের বুদ্ধিতে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ না নিয়ে আন্দোলনকারী ছয় ছাত্রনেতাকে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হলো। কেন ছাত্রনেতাদের দিয়ে ভিডিও বার্তা দেওয়া হলো। এই দায়িত্ব তো পুলিশের নয়। এর মধ্য দিয়ে দেশবাসীর মাঝে আবারও একটি ভুল বার্তা গেল। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করছে ছাত্রনেতাদের ওপর চাপ বা বল প্রয়োগ করে এই ভিডিও বার্তা দেওয়া হয়েছে। এতে করে নতুন করে সংকট তৈরি হচ্ছে।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির একাংশের প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদ বলেন, সরকারকে মনে রাখতে হবে ধামাচাপা দিয়ে কখনো সমস্যার সমাধান হবে না। ছাত্রছাত্রীদের ওপর অমানবিক অত্যাচার হয়েছে। কয়েকশ ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ মানুষকে এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কয়েক হাজার আহত হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার এবং ছাত্রলীগ কীভাবে দায় এড়াতে পারবে? তারা যাকে ইচ্ছা প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে, যাকে ইচ্ছা দোষারোপ করে। ঘটনা ঘটায় সরকার, আর দোষারোপ করা হয় বিরোধী দলগুলোকে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন সশস্ত্র সহিংসতার মাধ্যমে দমন করতে গিয়ে দেশের অবৈধ সরকার দেশে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। ছাত্রছাত্রীদের দাবি যুক্তিসঙ্গত, তাদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। বর্তমান অবৈধ সরকার দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে, পর্বত পরিমাণ সমস্যা সৃষ্টি করেছে; এর থেকে আর বের হতে পারবে না। কারণ ছাত্রছাত্রীদের বা দেশের মানুষদের সমস্যার সমাধান দিতে পারবে না। জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না। এমতাবস্থায় দ্রুত পদত্যাগ করাই একমাত্র সমাধান।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের একটি ন্যায্য আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের পথে না গিয়ে সরকার ছাত্র-জনতার হত্যাকাণ্ডসহ নাশকতার যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তার সমুদয় দায়-দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলের। আমরা সরকারকে জনগণের জানমালের এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতির দায়-দায়িত্ব নিয়ে অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগ করার আহ্বান জানাই। স্পষ্ট করে বলতে চাই সরকার হত্যা, গ্রেফতার, নির্যাতন-নিপীড়ন, মিথ্যা প্রচারের যে পথে হাঁটছে, এই পথে এই সংকটের সমাধান নেই। সংকট উত্তরণে সরকারকে রাজনৈতিক সমাধানের পথ বেছে নিতে হবে। তা না হলে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষায় সরকারকে বিদায় দেওয়া ছাড়া দেশের মানুষের নিজেদের রক্ষার আর কোনো উপায় থাকবে না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম