Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

রক্ষকই যখন ভক্ষক

ডিএসইর পরিচালকই শেয়ার কারসাজিতে

Icon

মনির হোসেন

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ডিএসইর পরিচালকই শেয়ার কারসাজিতে

শেয়ারবাজারে সরষের মধ্যে ভূত। আবার এ ভূতের চরিত্রে ছোটখাটো কোনো কর্মচারী নন, একেবারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্য। নাম অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। যিনি বিধি লঙ্ঘন করে শেয়ার কেনাবেচা করেছেন। শুধু তাই নয়, এটি করতে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে বেশিমাত্রায় লাভবান হওয়ার জন্য কারসাজিতে সহায়তা করেছেন। যুগান্তরের দীর্ঘ অনুসন্ধানে বিশদ তথ্যপ্রমাণসহ এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় স্বতন্ত্র পরিচালক হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্টের এই অধ্যাপককে ডিএসইর পর্ষদে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আলোচ্য সময়ে ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের ৩টি বিও অ্যাকাউন্টে ১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা শেয়ার লেনদেনের তথ্য মিলেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ কাজের মাধ্যমে তিনি তিনটি অপরাধ করেছেন। প্রথমত, তিনি স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদে থেকে বেআইনি ও অনৈতিকভাবে শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, কারসাজির কারণে যেসব কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এর অধিকাংশের শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন এবং তৃতীয়ত, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তায় পর্ষদ ভেঙে যেসব কোম্পানি দখল করা হয়েছে, এর সবকটি থেকেই তিনি আগাম তথ্য জেনে শেয়ার লেনদেন করে লাভবান হয়েছেন। তাদের মতে, রক্ষক যদি ভক্ষক হন, তাহলে বিনিয়োগকারীদের দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না। মূলত উল্লিখিত কারণেই শেয়ারবাজারে আজকের এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। তবে অভিযুক্ত পরিচালকের দাবি, তিনি পরিচালক হওয়ার পর কোনো শেয়ার কেনেননি। এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ও শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বুধবার যুগান্তরকে বলেন, নিয়ম অনুসারে স্টক এক্সচেঞ্জের কোনো স্বতন্ত্র পরিচালক পর্ষদে থাকলে তার শেয়ার লেনদেন করার কথা নয়। কারণ, তিনি ভেতরের খবর জানেন। যদি আগে তার কোনো বিও অ্যাকাউন্ট থেকেও থাকে, স্টক এক্সচেঞ্জে যোগদানের পর সেটিও নিষ্ক্রিয় করে রাখতে হয়। কোনোভাবেই শেয়ার লেনদেন করার কথা নয়। তিনি বলেন, শুধু স্টক এক্সচেঞ্জ নয়, বিএসইসির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। কারণ, ওনারা নিয়ন্ত্রক সংস্থা। স্বাভাবিকভাবে ভেতরের খবর তারা জানবেন। তাই এটিই নিয়ম। এর বাইরে কোনো কিছু ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক।

প্রসঙ্গত, শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে ২০১৪ সালে স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশন (ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা আলাদা বা বিন্যস্তকরণ) করে সরকার। এর উদ্দেশ্য ছিল ব্রোকারদের প্রভাব কমিয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগ সম্পূর্ণ পেশাদার ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হবে। এ পেশাদার ব্যক্তিদের বাজারের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা থাকবে না। ফলে এখানে কোনো অনিয়ম হলে ব্যবস্থাপনা বিভাগ স্বাধীনভাবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এ কারণে স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদে ১৩ জন পরিচালকের মধ্যে ৭ জনই স্বাধীন পরিচালক দেওয়া হয়। বাকি ৬ জনের মধ্যে ৪ জন শেয়ারহোল্ডার প্রতিনিধি, কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের মধ্য থেকে ১ জন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদাধিকার বলে পর্ষদে থাকেন। কিন্তু সেই রক্ষকই এখন ভক্ষক হয়ে বাজার থেকে বেআইনি ও অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন। স্বাধীন পরিচালকরাই ভেতরের তথ্য জেনে শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে বাজার থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। নিয়ম অনুসারে স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালকদের কেউ শেয়ার লেনদেন করলে এক মাসের মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জকে জানাতে হয়। কিন্তু ডিএসই সূত্র যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছে, অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শাওন কোনো তথ্য দেননি। যুগান্তরের অনুসন্ধানে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শাওনের তিনটি বিও অ্যাকাউন্টের তথ্য মিলেছে। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, এসব অ্যাকাউন্ট থেকে অস্বাভাবিক শেয়ার লেনদেন করেছেন তিনি। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তার শেয়ার লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে যুগান্তর।

যেসব ব্রোকারেজ হাউজে তার বিও অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেগুলো হলো-গ্রিনল্যান্ড ইক্যুইটি, আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজ এবং ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ। গ্রিনল্যান্ড ইক্যুইটিতে বিও অ্যাকাউন্টটির নম্বর ১২০২১৯০০৬৬৪০৩৫৬১। ক্লায়েন্ট কোড ই-৪২৮। তবে ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। স্টক এক্সচেঞ্জে পর্ষদে যোগদান করার ৬ মাস পর ২০২৩ সালের ৫ জুলাই এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিও অ্যাকাউন্টটি খোলার সময় সোনালী ব্যাংকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শাখার ২০০২৭১৭৫০ নম্বর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়। সেক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ২৬৯৬৪০৬৬৮১৪০৫। করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর ৮৮২৪০১৬৮৮৭৭৮। ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজে বিও অ্যাকাউন্ট নম্বর ১২০৪৪৯০০৭৩৫৫২৬৭৮। ক্লায়েন্ট কোড ১৩৫৯৪। বর্তমানে এটি সচল রয়েছে। আইআইডিএফসিতে বিও অ্যাকাউন্ট নম্বর ১২০৪৪৮০০৬৯০৫১৫৪১। ক্লায়েন্ট কোড ০৮০২৩। এই বিও অ্যাকাউন্টের জন্য সিটি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল ব্র্যাঞ্চের ২৪০১৯৬১২৫৭০০১ নম্বর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।

এদিকে শেয়ারবাজারে পর্ষদ ভেঙে কোম্পানি দখল করা নিয়ে ১২ মে রিপোর্ট প্রকাশ করে যুগান্তর। সেখানে এমারেল্ড অয়েলসহ বেশ কিছু কোম্পানিতে কারসাজির বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এসব কোম্পানির কারসাজিতে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শাওনের সম্পৃক্ততা মিলেছে। এমারেল্ডের শেয়ার ১৬ টাকা থেকে কেনা শুরু করেন আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। পরে তা এক বছরের মধ্যে ১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। দ্রুত এভাবে কম সময়ের ব্যবধানে প্রায় ১২ গুণ বেড়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক ঘটনা। আর অস্বাভাবিক ঘটনার পেছনে যারা কলকাঠি নাড়েন, তাদের সমর্থনে যা করার, তা করেছেন আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। তিনি এখানে নিজে লাভবান হয়েছেন বেশ কৌশল করে। যেমন: ১৬ টাকায় শেয়ার কেনার ৫ মাসের ব্যবধানে যখন তা ৩৫ টাকায় পৌঁছে যায়, তখন বিক্রি করেন ১০ হাজার শেয়ার। ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা লাভ করেন। পরে ৪১ টাকা করে বিক্রি করেন ৩ হাজার শেয়ার। এর কিছুদিন পর বিক্রি করেন ১২২ টাকা করে। এভাবে তিনি কারসাজির এ শেয়ার বিক্রি করে ব্যক্তিগতভাবে অস্বাভাবিক লাভবান হয়েছেন, যা একজন পরিচালক হিসাবে করতে পারেন না। এটি আমানতের খেয়ানতের শামিল। আবার অন্যার্থে অফিশিয়াল অপরাধ।

যুগান্তরের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে আলোচ্য সময়ে তিনি ২৩ লাখ ৫২ হাজার ২২৭টি শেয়ার লেনদেন করেছেন। যার মোট মূল্য ১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৬ কোটি ৯৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৮৩ টাকার শেয়ার কিনেছেন। বিক্রি করেছেন ৬ কোটি ২২ লাখ ১ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকার শেয়ার। এক্ষেত্রে এমারেল্ড ওয়েলের ২৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করেছেন। এছাড়াও সিএনএ টেক্সটাইলের ২৪ লাখ ৭৪ হাজার, সোনালী পেপারের ২ কোটি ৬১ লাখ ৯৫ হাজার, ফরচুন শুজের ১ কোটি ৯১ লাখ ২৯ হাজার, জেনেক্স ইনফোসিসের ১ কোটি ২৬ লাখ ১৩ হাজার, নিটল ইন্স্যুরেন্সের ২৫ লাখ ৩৮ হাজার, আলহাজ্ব টেক্সটাইল ৫ লাখ ২৮ হাজার, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন ৮৩ লাখ ৮৪ হাজার, এশিয়ান ইন্স্যুরেন্স ১ কোটি ২৯ লাখ ৩৭ হাজার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ১ লাখ ৪ হাজার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স ২৭ লাখ ৭৫ হাজার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ৮ লাখ ২৭ হাজার, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স ৮৯ লাখ ৪০ হাজার, ফারইস্ট ফাইন্যান্স ১৩ লাখ ২০ হাজার, ফাস ৪ লাখ ২১ হাজার, ফুয়াং ফুড ২৮ লাখ ৮৩ হাজার, জেনারেশন নেক্সট ৪ লাখ ৫২ হাজার, গ্রামীণফোন ২ লাখ ৫ হাজার, জিএসপি ফাইন্যান্স ৬ লাখ ১৭ হাজার, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট ৮৮ হাজার ১৪০, মালেক স্পিনিং ৩২ লাখ ৮০ হাজার, নাহি অ্যালুমিনিয়াম ১ কোটি ৬৫ লাখ ২৩ হাজার, ওয়ান ব্যাংক ১ লাখ ১৪ হাজার, ওরিয়ন ফার্মা ১০ লাখ ৭৪ হাজার, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ৯ লাখ ৫২ হাজার এবং রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের ১৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করেছেন।

স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশন (ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা আলাদাকরণ) আইন অনুসারে গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদসহ ৪ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বিএসইসি। এর তিন মাস পর ১৭ মে ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ থেকে এমারেল্ড অয়েলের ৫শ শেয়ার কেনেন তিনি। আবার ১১ জুলাই এমারেল্ডের ৬ হাজার ১৫০টি শেয়ার কেনেন। যার মূল্য ছিল ৯ লাখ ৯৩ হাজার ২২৫ টাকা। একই অ্যাকাউন্টে ১৯ অক্টোবর সিএনএ টেক্সটাইলের ৭ হাজার শেয়ার কেনেন। আবার ওই বছরের ৬ জুন অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেনের ৫০ হাজার শেয়ার বিক্রি করেন। যার মূল্য ছিল ১৮ লাখ ২৫ হাজার। এক মাস ৪ দিন পর আসোসিয়েটেড অক্সিজেনের ৬০ হাজার শেয়ার বিক্রি করেন। যার মূল্য ২১ লাখ ৯৪ হাজার। চলতি বছরের ২২ এপ্রিল সোনালী পেপারের ৫ হাজার ৭৯২টি শেয়ার ২৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৭ টাকায় বিক্রি করেন।

এদিকে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর স্টক এক্সচেঞ্জে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জমা দেয় এমারেল্ড অয়েল, যা অত্যন্ত গোপনীয়। এছাড়াও এমারেল্ড ও সিএনএ টেক্সটাইলের পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে কমিশন। ডিএসইর পরিচালক হিসাবে যার পুরো খবরই আগে জানতেন আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। অর্থাৎ পদে থাকার কারণে কোম্পানির গোপন সংবাদ জানার সুযোগ রয়েছে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি নিজের শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন।

জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শাওন বুধবার যুগান্তরকে বলেন, স্বতন্ত্র পরিচালকরা সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ার লেনদেন করতে পারেন। তবে অস্বাভাবিক কিছু করছেন কি নাম তা বোঝার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জে স্টেটমেন্ট দিতে হয়। আপনি কোনো শেয়ার লেনদেন করছেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ডিএসইর পরিচালক হওয়ার পর কোনো শেয়ার কিনিনি। আগে আমার ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার শেয়ার ছিল। এখানে আসার পর আর শেয়ার কিনিনি। আগের কিছু বিক্রি করেছি।’ তিনি দাবি করেন, ‘আমার শেয়ার লেনদেনের ব্যাপারে কেউ যদি আপনাকে কোনো কথা বলে থাকে, সেটি বানোয়াট। এর কোনো ভিত্তি নেই।’ তবে এই পরিচালকের শেয়ার কেনাবেচাসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ যুগান্তরের হাতে সংরক্ষিত আছে।

অন্যদিকে শেয়ারবাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কারসাজির বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচিত। এ কারণে ইতোমধ্যে এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ওয়ান ব্যাংক, জেনেক্স ইনফোসিস, নিটল ইন্স্যুরেন্স, ফরচুন শুজ, বিডিকম, আইপিডিসি এবং এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ারে কারসাজির ঘটনায় বহুল সমালোচিত আবুল খায়ের হিরুসহ বিভিন্ন গ্রুপকে জরিমানা করেছে বিএসইসি। এর মধ্যে এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের কারসাজিতে ঘটনায় আবুল খায়ের হিরুকে ৭২ লাখ, এনআরবিসি ব্যাংকের কারসাজিতে হিরুর বোন কনিকা আফরোজকে ৩ কোটি ৭৫ লাখ, ফরচুন শুজের কারসাজির ঘটনায় হিরুর পরিবারসহ সহযোগীদের ১ কোটি ৫০ লাখ, বিডিকম অনলাইনের কারসাজির ঘটনায় ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ৫৫ লাখ, ওয়ান ব্যাংকের কারসাজিতে আবুল কালাম মাতবরকে ৩ কোটি এবং আইপিডিসির শেয়ার কারসাজিতে আবুল খায়ের হিরু চক্রকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স শেয়ার কারসাজির ঘটনায় আরেক চক্র মো. জসিম উদ্দিনকে ১ কোটি টাকা জরিমানা করে কমিশন। কিন্তু এর সবকটি কোম্পানির শেয়ারে কারসাজির মাধ্যমে সুবিধা নিলেও শাস্তি দেওয়ার তালিকায় আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের নাম নেই। এছাড়াও শেয়ার কারসাজিতে সাম্প্রতিক সময়ে নিটল ইন্স্যুরেন্সসহ আরও কয়েকটি কোম্পানিকে জরিমানা করেছে বিএসইসি। এ জরিমানার আগের স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। কিন্তু বড় অঙ্কের শেয়ার লেনদেন করা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের তথ্য আড়াল করে প্রতিষ্ঠানটি।

জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম যুগান্তরকে বলেন, যেহেতু স্বার্থের (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট) দ্বন্দ্ব আছে, তাই শেয়ার লেনদেন না করাই ভালো। তবে কেউ যদি লেনদেন করে, তাকে সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে কনফ্লিক্ট মিটিগেশন কমিটিতে রিপোর্ট করতে হয়। তবে কেউ লেনদেন করে ওই কমিটিতে রিপোর্ট না করলে সেটি অপরাধ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম