Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

রাজধানীর খাল-নর্দমা এখনো বেহাল

কথা বেশি কাজ কম ২ সিটির

খালের সংখ্যা বেড়ে ৬৯টি হলেও নর্দমা ও নদীর সঙ্গে পানি নিষ্কাশন নেটওয়ার্ক না থাকায় জলাবদ্ধতা * খালের বিকল্প হিসাবে মাস্টার ড্রেন তৈরির উদ্যোগ ডিএসসিসির

Icon

মতিন আব্দুল্লাহ

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কথা বেশি কাজ কম ২ সিটির

রাজধানীতে ১১ মে ভোরে ১ ঘণ্টা ধরে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়। এতে তলিয়ে যায় সড়ক, ফুটপাত ও অলিগলি। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ না পেয়ে ঢুকে পড়ে বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে।

অথচ ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা ওয়াসা থেকে খাল ও নর্দমা বুঝে পাওয়ার পর থেকে বিগত প্রায় সাড়ে ৩ বছর ধরে খাল ও নর্দমা উন্নয়নের নানা সফলতা দাবি করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। বিদ্যমান বাস্তবতা বলে দিচ্ছে খাল ও নর্দমা উন্নয়নে দুই সিটি যত সফলতা দাবি করছে, সেই অনুযায়ী কাজ তেমন হয়নি।

ঢাকা ওয়াসা থেকে দুই সিটি খাল ও নর্দমাগুলো বুঝে নেওয়ার পর ২০২১ ও ২০২২ সালে বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টি অপেক্ষাকৃত কম হয়। এতে রাজধানীতে জলজট ও জলাবদ্ধতাও কম হয়। সে সময় ঢাকার দুই সিটি দাবি করেছে-বৃষ্টির পর ১৫ মিনিটের মধ্যে পানি সরে যায়। আবার কখনো ৩০ মিনিটের মধ্যে পানি নিষ্কাশনের দাবি করেছে।

শুধু তাই নয়, রাজধানীতে জলাবদ্ধতা মুক্ত হয়েছে-এমন কথাও বলেছে ঢাকার দুই সিটি। কিন্তু ২০২৩ সালে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে জলাবদ্ধতা হওয়ায় সেসব দাবি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এ বছরও ভয়াবহ জলাবদ্ধতার পূর্বাভাস দিচ্ছে রাজধানীর ভঙ্গুর নর্দমা ও খালের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। দুই সিটির আওতাধীন খালগুলো দখলে সরু নালায় পরিণত হয়েছে। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় খালে কিছুটা পানির প্রবাহ দেখা গেলেও সারা বছর সমতল ও খালের পার্থক্য বোঝা যায় না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, সিটি করপোরেশন খাল ও নর্দমাগুলো যথাযথভাবে পরিষ্কার করে না। এজন্য সামান্য বৃষ্টিতে ঢাকার সড়ক, ফুটপাত পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। একদিন, দুদিন পানি জমে থাকছে। তবে এটাও সত্য যে, খাল, জলাশয় ও পুকুরগুলো নির্বিচারে ভরাট করে ফেলায় বৃষ্টির পানি জমার কোনো জায়গা নেই। এজন্য ভারি বৃষ্টি হলেই জলজট, জলাবদ্ধতার তৈরি করছে। সিটি করপোরেশনতো পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে, কঠিন কাজ হলেও তাদের তা করতে হবে।

তিনি জানান, খাল ও নর্দমা দখলমুক্ত ও উন্নয়নে দুই সিটি মেয়র অনেক সফলতার দাবি করলেও বিদ্যমান বাস্তবতায় তার প্রমাণ মিলছে না। খাল ও নর্দমাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না, বৃষ্টি হলেই নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বিদ্যমান খালের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯টি। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় খাল রয়েছে ৩০টি, সবগুলো ডিএনসিসির তত্ত্বাবধানে রয়েছে। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় বিদ্যমান খালের সংখ্যা ৩৯টি, এরমধ্যে ২৫টি ডিএসসিসির তত্ত্বাবধানে রয়েছে। বাকি ১৪টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রয়েছে; যা শিগশিগরই ডিএসসিসিতে হস্তান্তর করা হবে। আর দুই সিটির পানি নিষ্কাশন নর্দমা রয়েছে প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ঢাকা ওয়াসার নিকট খালের তত্ত্বাবধান থাকা অবস্থায় রাজধানীতে ২৬টি খাল রয়েছে বলে তথ্য দেওয়া হতো। প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগে স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে খালগুলো দুই সিটিতে হস্তান্তর করা হয়। এরপর দুই সিটি খালের আদি-অন্ত খুঁজতে গিয়ে খালের সংখ্যা বেড়েছে। আরও কয়েকটি বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। রাজধানীতে খালের সংখ্যা বাড়লেও কমেনি জলাবদ্ধতা; বরং অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা প্রকট হয়েছে।

ডিএনসিসির ৩০ খাল : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এলাকার বিদ্যমান খালগুলোর মধ্যে রয়েছে-কাটাসুর খাল, রামচন্দ্রপুর খাল, কল্যাণপুর প্রধান খাল, কল্যাণপুর ক খাল, কল্যাণপুর খ খাল, কল্যাণপুর ঘ খাল, কল্যাণপুর ঙ খাল, কল্যাণপুর চ খাল, রূপনগর প্রধান খাল, রূপনগর শাখা খাল-আরামবাগ, রূপনগর শাখা খাল-দুয়ারীপাড়া, রূপনগর শাখা খাল-চিড়িয়াখানা, মিরপুর দিয়াবাড়ী খাল, ইব্রাহিমপুর খাল, বাউনিয়া খাল, আব্দুল্লাহপুর খাল, দ্বিগুণ খাল, ধউর খাল, বাইশটেকি খাল, সাংবাদিক কলোনি খাল, কসাইবাড়ী খাল, মহাখালী খাল, উত্তর দিয়াবাড়ী খাল, বেগুনবাড়ী খাল, শাহজাদপুর খাল, সূতিভোলা খাল, ডুমিনি খাল, বোয়ালিয়া খাল, গোবিন্দপুর খাল ও নরাই খাল। এ খালগুলোর দৈর্ঘ্য প্রায় ৮৪ কিলোমিটার। তবে সীমানা নির্ধারণ কাজ চলমান রয়েছে, শেষ হলে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বাড়বে বলে মনে করছেন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্তরা।

খাল উদ্ধারে ডিএনসিসির ভূমিকা ও প্রতিবন্ধকতা : খালের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর ডিএনসিসির খালের সীমানা নির্ধারণের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোন রেকর্ড ধরে সীমানা নির্ধারণ করবে, তা এখনো ঠিক করতে পারেনি। কোথাও সিএস, কোথাও আরএস এবং কোথাও মহানগর জরিপ ধরে খালের সীমানা নির্ধারণ করা যাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং খালের সীমানা নির্ধারণ কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ইতোমধ্যে ওই কমিটি কয়েকটি সভাও করেছে। এ কমিটির সিদ্ধান্ত ক্রমে সীমানা নির্ধারণ কাজ চলবে।

ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ওয়াসা থেকে খাল বুঝে নেওয়ার পর অভিজ্ঞ প্রকৌশল, পাম্প অপারেটরসহ বিভিন্ন পদে বেশ কিছু জনবল নেওয়া হয়েছিল। তবে প্রকৌশলীদের সঙ্গে অন্তর্কোন্দল তৈরি হওয়ায় ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলীদের নিজ সংস্থায় ফেরত নেওয়া হয়। পরে ডিএনসিসি ড্রেনেজ সার্কেল গঠন করে মন্ত্রণালয়ে পদ সৃষ্টির প্রস্তাব প্রেরণ করে। যা এখনো আলোর মুখ দেখেনি, কবে দেখবে তাও অজানা রয়েছে। পাশাপাশি খালের আধুনিকায়নে একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও তা সেখানে স্থবির হয়ে রয়েছে। কার্যত খালের দায়িত্ব পাওয়ার ডিএনসিসি খালের পরিষ্কার ও গুটি কয়েক অবৈধ স্থাপনা অপসারণ ছাড়া তেমন কিছুই করেনি। তবে খালের ময়লা জড়ো করে প্রদর্শনীর আয়োজন করে বেশ আলোচনায় ছিল ডিএনসিসি, যেটা কার্যত টেকসই খাল উন্নয়ন বা পানি নিষ্কাশনে তেমন কোনো সুফল বয়ে আনছে না।

ডিএসসিসির ৩৯ খাল : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বিদ্যমান খালগুলোর মধ্যে রয়েছে-সেগুনবাগিচা খাল, বেগুনবাড়ি খাল, কাটাসুর খাল, খিলগাঁও-বাসাবো খাল, জিরানী খাল, মান্ডা খাল, হাজারীবাগ খাল, শ্যামপুর খাল, তিতাস খাল, শাহজাহানপুর খাল, নন্দীপাড়া খাল, কুতুবখালী খাল, খিলগাঁও খাল, দোলাইরপাড় খাল, কাজলা খাল, ফকিরখালী খাল, সুকুরসি খাল, ডগাইর খাল, বাইগদা খাল, জিয়া সরণি খাল, সুতিভোলা খাল, কদমতলা খাল, বাসাবো খাল, মৃধাবাড়ী খাল ও মাতুয়াইল কবরস্থান খাল, এ খালগুলো এখন সরাসরি সিটি করপোরেশন তত্ত্বাবধান করছে। তবে এর বাইরে ডিএনডি এলাকায় ডিএসসিসির আওতাভুক্ত অংশে ১৫টি খাল রয়েছে। যেগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রয়েছে, কয়েক দফা মিটিং হয়েছে। ওই খালগুলোও সিটি করপোরেশনে হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-প্রধান পানি নিষ্কাশন খাল-এমডিসি-২, সারুলিয়া এলাকা দিয়ে প্রবাহিত এসডিসি-১ খাল, ডেমরা বামেল বাজার থেকে পশ্চিম সানারপাড় এলাকার খাল এসডিসি-২ খাল, মাতুয়াইল এলাকার হাসেম রোডের এসডিসি-৩ খাল, শ্যামপুর এলাকার এসডিসি-৪ খাল, পাগলা শাখা খাল, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে পাগলা শাহী বাজার পর্যন্ত ডিএল-১ খাল, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ডগাইর পর্যন্ত ডিএল-২ খাল, বড় ভাঙ্গা বোর্ড থেকে মহাকাশ মিল রোড পর্যন্ত এল-১ খাল, কোনাপাড়া স্টেশন হতে হাশেম রোড পর্যন্ত ঢাকা ওয়াসার ডিএল-৩ খাল, মৃধাবাড়ি, জিয়া সরণি ও শ্যামপুর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত ডিএল-৪ খাল, গ্যাস রোড থেকে জুরাইন মিষ্টির দোকান পর্যন্ত আর-১ বা তিতাস খাল, কুতুবখালী খাল এবং প্রধান সেচ খালের ঢাকার অংশ। ডিএসসিসির খালগুলোর দৈর্ঘ্য কত তা সংস্থার সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে জানা সম্ভব হয়নি।

খাল উদ্ধার ও উন্নয়নে ডিএসসিসির উদ্যোগ ও বাস্তবতা : রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রের একটি বড় অংশের বৃষ্টির পানি মান্ডা, জিরানী, শ্যামপুর ও কালুনগর খাল হয়ে নিষ্কাশন হয়ে থাকে। এ চারটি খালের দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। কাগজে-কলমে খালগুলো থাকলেও বাস্তবে দখল ও ভরাটে অচল হয়ে রয়েছে। এসব খালের বর্জ্য ও পলি অপসারণের পাশাপাশি সৌন্দর্য বর্ধন কাজের জন্য ২০২২ সালের অক্টোবরে ৮৯৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে সরকার। ওই প্রকল্পের কাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। মাঠপর্যায়ের কাজ কোথাও শুরু হয়েছে আবার কোথাও শিগগিরই শুরু হবে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা ওয়াসার নিকট থেকে খাল বুঝে পাওয়ার পর ডিএসসিসি শুধু চারটি খাল নিয়ে পরিকল্পনা করেছে। বাকি খালগুলো নিয়ে তেমন কোনো কাজ করেনি। যে খালগুলো নিয়ে কাজ করেছে, সেগুলোও দখল ও ভরাটে। ডিএসসিসির আওতাভুক্ত বাকি ১৮টি খালের কোনো উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ করেনি। আর ডিএসসিসির আসার প্রক্রিয়াধীন ১৪টি খালের সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। রুটিন পচির্যা না হওয়ায় সেগুলো আবর্জনায় ভরাট। তবে ডিএসসিসির উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে-বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে উদ্ধার ও খনন কাজ। অন্যান্য খালের সীমানা নির্ধারণ, দখলমুক্তকরণ এবং অন্যান্য কাজ কবে শেষ হবে তা ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা বলতে পারেন না।

তথ্যানুসন্ধানে আরও জানা যায়, বৃষ্টির পানি কোনো এলাকা বা সড়ক থেকে নর্দমার মাধ্যমে খাল দিয়ে রাজধানীর চারপাশের নদীতে যায়। কোথাও সরাসরি যাওয়ার সুযোগ আছে আবার কোথাও পাম্পিং করে নদীতে পানি ফেলা হয়। বাস্তবতা হচ্ছে নর্দমাগুলো আবর্জনায় পূর্ণ থাকা এবং খাল, নর্দমা ও নদীর সঙ্গে বেশিরভাগ এলাকার নেটওয়ার্ক না থাকায় পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। এজন্য ডিএসসিসি নর্দমা ও খালের নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের পাশাপাশি প্রয়োজনের আলোকে মাস্টার ড্রেন তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যেটা পানি নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে অনেকটা খালের ভূমিকা পালন করবে।

প্রাথমিকভাবে নিউমার্কেট থেকে বিজিবির ভেতর দিয়ে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল, বংশাল এলাকা দিয়ে বুড়িগঙ্গা, জুরাইন ও শ্যামপুর এলাকায় মাস্টার ড্রেন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। পরে প্রয়োজন বিবেচনায় আরও মাস্টার ড্রেন করতে চায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। কোথাও সড়কের পানি নর্দমা হয়ে খাল দিয়ে নদীতে যাবে। যেখানে খাল নেই সেখানে সড়কের পানি নর্দমা হয়ে মাস্টার ড্রেন দিয়ে নদীতে যাবে।

এদিকে ঢাকা ওয়াসা থেকে খাল ও নর্দমা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব গ্রহণের সাড়ে ৩ বছরেও ডিএসসিসি ড্রেনেজ সার্কেল তৈরি করতে পারেনি। প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও তা অনুমোদন হয়নি এখনো। কবে অনুমোদন হবে তারও অনিশ্চয়তা রয়েছে।

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, খাল ও নর্দমা উন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। খালের আবর্জনা পরিষ্কার ও দখলমুক্ত করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এজন্য নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি ডিএনসিসির কাজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, খালের দায়িত্ব পাওয়ার পর সিটি করপোরেশন নিরন্তন প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আপনারা দেখেছেন যে, লাউতলা খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেখানে সবুজায়ন করা হয়েছে। সেখানে একটি ১০তলা ভবনও ভাঙা হয়েছে। আমার মেয়াদের বাকি সময়টা খাল দখলমুক্ত ও উদ্ধার কাজ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করব।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন-বহমান নদীর মতো খালের সীমানা নির্ধারণ, সংস্কার ও উন্নয়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বহু বছর ধরে ধাপে ধাপে খালগুলো ধ্বংস হয়েছে। এসব পুনরুদ্ধারেও অনেক সময়ের প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সিএস রেকর্ড ধরে খালের সীমানা নির্ধারণ করা হচ্ছে। সীমানা নির্ধারণ শেষে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হবে। তবে খালগুলো পরিষ্কার রাখা হচ্ছে, যাতে করে আসন্ন বর্ষায় পানি নিষ্কাশন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত না হয়। তিনি জানান, ইতোমধ্যে আদি বুড়িগঙ্গার পুনর্খনন কাজ অনেকাংশে শেষ হয়েছে। এছাড়া একটি প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে, ওই প্রকল্পের আওতায় কালুনগর, শ্যামপুর, জিরানি ও মান্ডা খালের আধুনিকায়ন কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য খালের সীমানা নির্ধারণ, দখলমুক্ত, সংস্কার ও আধুনিকায়ন কাজ করা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম