Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ভোটে থাকার সিদ্ধান্ত জাতীয় পার্টির

২৮৩ আসনে দলীয় প্রার্থী * আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা ২৬ আসনে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভোটে থাকার সিদ্ধান্ত জাতীয় পার্টির

সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৮৩টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দলটি। এর মধ্যে আবার ২৬টি আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ভোট করবে তারা। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে এদিন বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও অর্থবহ হয় সেই লক্ষ্যে আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করব। তবে এই মুহূর্তে বলতে চাই, আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, এবার আওয়ামী লীগকে ছাড়াই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। ২৮৩ আসনে দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচন করবেন তারা।

মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করে আসছিল।

সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের একটিই দাবি ছিল যে, যেন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হয়। যাতে মানুষ ভোট দিতে আসতে পারে। তাহলে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আশ্বাসে আমাদের আস্থা এসেছে যে, তারা নির্বাচনটা ভালোভাবে করতে চান। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং নির্বাচন যেন প্রতিযোগিতামূলক হয় সেই আলোকে আমরা কাজ করে যাব।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, আমরা আশা করি এ দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে ভোট দেবে। এ দেশের মানুষ অনেক সচেতন। আমরা আশা করি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম হবে। আমরা নির্বাচনটা করার জন্য আমাদের সব প্রার্থীকে আজকে (রোববার) চিঠি দিচ্ছি। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ২৮৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। কিছু কিছু আসনে সমঝোতা হচ্ছে বা হবে। নির্বাচনে আমরা যাচ্ছি। সব বাধা উপেক্ষা করে আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য জাতীয় পার্টির ওপর কোনো চাপ ছিল কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, আমাদের ওপর কোনো চাপ ছিল না। জাতীয় পার্টি স্বতন্ত্র একটা দল, আমাদের নিজস্ব একটা রাজনীতি আছে।

মো. মুজিবুল হক বলেন, কোনো জোট হয়নি। আসন সমঝোতা হয়নি। তবে কিছু আসনের ক্ষেত্রে কিছু কৌশল রয়েছে। এর আগে একইদিন বেলা ১টার পর সাংবাদিকদের মুজিবুল হক বলেছিলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে কিনা তা বিকালে জানানো হবে। এরপর বিকালে ২৮৩ আসনে ভোট করার ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে সকাল থেকেই জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের একটি অংশ নির্বাচন বর্জনের দাবি জানিয়ে মিছিল করেছেন। তারা ‘দালালি না রাজপথ’, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ নয়, বর্জন বর্জন’ স্লোগান দিয়েছেন। দলের নেতাকর্মীরা দিনভর অপেক্ষায় ছিল সিদ্ধান্তের আশায়। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাওযায় একটি অংশ খুশি হলেও বড় একটি অংশ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কোথাও সমঝোতা, আবার কোথাও সমঝোতা ছাড়াই ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এদিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণার আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে কার্যালয়ে পৌঁছান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তার আগে ও পরে কার্যালয়ে আসেন দলের মহাসচিব মো. মুজিবুল হক, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান। নেতারা নিজেদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলাপ-আলোচনা করেন। মো. মুজিবুল হক চুন্নু ২৮৩ আসনে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করলেও ইতোমধ্যে ঢাকা-৬ আসনসহ বিভিন্ন আসন থেকে তাদের মনোনীত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক এবং আসন সমঝোতা প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কত আসনে ছাড় পাওয়া গেছে বা কত আসন পাব, এটি আমাদের দলীয় কৌশল। এটি এখানে বলা যাবে না। আপনারা সময়মতো জানতে পারবেন অথবা জেনে যাবেন। এর পরপরই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসন তারা ছেড়ে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দিয়ে রোববার বিকালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব আসনে তাদের প্রার্থী থাকছে না। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান, জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দেওয়া আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

যেসব আসনে সমঝোতা : জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের যেসব আসনে সমঝোতা হয়েছে, সেগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও-৩, নীলফামারী-৩ ও ৪, রংপুর-১ ও ৩, কুড়িগ্রাম-১ ও ২, গাইবান্ধা-১ ও ২, বগুড়া-২ ও ৩, সাতক্ষীরা-২, পটুয়াখালী-১, বরিশাল-৩, পিরোজপুর-৩, ময়মনসিংহ-৫ ও ৮, কিশোরগঞ্জ-৩, মানিকগঞ্জ-১, ঢাকা-১৮, হবিগঞ্জ-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ফেনী-৩, চট্টগ্রাম-৫ ও ৮ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আগে থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিল না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম