খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতে আগের শর্তই বহাল থাকবে : আইনমন্ত্রী

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ফাইল ছবি
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তার পরিবারের করা আবেদন স্বরাষ্ট্র থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এখনো এ বিষয়ে মতামত দেননি। কারণ ফাইলটি এখনো তার কাছে উপস্থাপন করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকের এমন তথ্য জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে আবেদনটি এলে আমি নিষ্পত্তি করব। আপনারা কিছুদিনের মধ্যে সে বিষয়ে জানতে পারবেন। আমাদের মতামত দেওয়ার পর সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আমি যেটা মনে করি যে শর্ত আছে, সেই শর্তই থাকবে, এটাই আমার বিশ্বাস।’ খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়ার তথ্যটি সর্বৈব মিথ্যা ও অসত্য বলে জানান তিনি।
বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে বাইরে এডভান্স সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছি। ২৪ মার্চ শেষ হচ্ছে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ। বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সোমবার তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। আবেদনে এবারও তার সাজা মওকুফ ও শর্ত শিথিল করে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আসিনুল হক বলেন, ‘জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের, সরকারের নয়। প্রথমবার যখন তার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়, তখন দুটি শর্ত দেওয়া হয়। দুটি শর্তের মধ্যে রয়েছে তিনি ঢাকায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। শেষবার যখন মেয়াদ বাড়ানো হয়, তখনো এই শর্তগুলো ছিল।
খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি এ ব?্যাপারে একটা পরিষ্কার কথা বলতে চাাই। আমি আগে যেটা বলেছিলাম, সেটা আইনের বইতে কী আছে আপনারা দেখে নিন। আমি এটার ব?্যাপারে আর কথা বলব না। আমার কাছে এটি ডেড ইস্যু।
এ প্রসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেছেন, আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার কোনো সুযোগ নেই। তার যদি বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাহলে আদালতে এসে দরখাস্ত দেবেন। আদালত সেটা দেখবেন। আদালতের ওপর তো সরকার নয়।
২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে দুটি শর্তে ছয় মাসের মুক্তি দেয়। ২৫ মার্চ কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি। এরপর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ছয় দফায় ৬ মাস করে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায় সরকার।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্র“য়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর ওইদিনই খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। প্রায় দুই বছর কারাভোগ করে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান তিনি।