নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া
ইয়াসিন রহমান ও আহমেদ মুসা, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রমজানের আগেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট, ব্যাংকে এলসি খোলা নিয়ে জটিলতা-এ ধরনের নানা অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ ধরনের সিন্ডিকেটের হাতেই জিম্মি সাধারণ ক্রেতা। রমজানের পণ্য আনতে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য সরকার বাকিতে পণ্য আমদানির সুযোগ করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে এ সংক্রান্ত এলসি খোলার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর সুফল ব্যবসায়ীরা ভোগ করছেন। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। নিত্যপণ্যের দাম শুধু বাড়ছেই। মূল্যবৃদ্ধির প্রমাণ দিচ্ছে খোদ সরকারি একাধিক সংস্থা। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বলছে, রোজায় আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়বে ৩০ ভাগ। অপরদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য হচ্ছে গত বছরের তুলনায় এখনই গড়ে পণ্যের দাম ৫৯ শতাংশ বেশি। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের প্রভাব আরও প্রকট। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কৌশল পালটেছে। আগে রোজা শুরু হলে দাম বাড়ত। তখন চারদিক থেকে রব উঠত। সরকারের তৎপরতা আরও বেড়ে যেত। ফলে সিন্ডিকেট বেশিদূর যেতে পারত না। এসব কারণে এখন তারা রোজার দেড়-দুই মাস আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতে থাকে। প্রথম রোজা পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে। ব্যবসায়ীদের কৌশলের কারণে ক্রেতাদের সাবধান হতে বলেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা অনুরোধ জানিয়েছেন, কেউ যেন একসঙ্গে অনেক বেশি পণ্য না কেনে। তাদের মতে, ক্রেতারা সাবধান হলেও এখন থেকেই কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে হবে। অন্যথায় রোজার আগে পণ্যের দাম আরও বাড়বে। ১৫ রমজান পর্যন্ত এটা চলতে থাকবে। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের রমজান কাটবে অস্বস্তিতে-
আমদানি পণ্যের মূল্য ৫৯ শতাংশ বেশি
রোজার বাকি এক মাস ১৭ দিন
ইয়াসিন রহমান
ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এবার রোজায় আমদানি করা পণ্যের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি থাকবে বলে জানিয়েছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। তবে সরকারের আরেকটি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, রোজার এক মাস ১৭ দিন আগেই গত বছরের তুলনায় আমদানি করা পণ্যের দাম গড়ে ৫৯ শতাংশ বেশি। তবে আদা সর্বোচ্চ ১১১ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিতে এলসি জটিলতা দূর করা না গেলে রমজানে পণ্যের দাম আরও বাড়বে।
এদিকে এমন পরিস্থিতিতে ক্রেতার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। তারা বলছে, রোজা এলেই সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ে। এবারও সেটাই করা হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের পণ্যের দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বেড়েছে। কিন্তু আয় বাড়েনি।
সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে ট্যারিফ কমিশনের উপ-পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান জানান, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এবার রোজায় আমদানি করা পণ্যের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি থাকবে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম না বাড়লেও দেশে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করবে। এর বেশি বাড়বে না।
কিন্তু টিসিবির বৃহস্পতিবারের মূল্য তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বছরের ব্যবধানে আমদানি করা প্রতি কেজি রসুন ৬৩.৬৪ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আমদানি করা শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬৩.৯৩ শতাংশ বেশি দরে। পাশাপাশি প্রতি কেজি আমদানি করা আদা সর্বোচ্চ ১১১.১১ শতাংশ, জিরা ৯৪.৪৪ শতাংশ, লবঙ্গ ৩৯.৫৩ শতাংশ, গুঁড়া দুধ ৪০ শতাংশ, চিনি ৫০.৩৩ শতাংশ, অ্যাঙ্কর ডাল ৪৭.৯৬ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ছোলা প্রতি কেজি ১৬.৬৭ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। গড়ে ৫৯ শতাংশ বেশি।
জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের পণ্যের দাম বেশি। তারও কিছু যৌক্তিক কারণ আছে। তবে অযৌক্তিক কারণও আছে। তার মধ্যে আছে ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা করার প্রবণতা। রোজা এলেই বাজারে তারা অস্থিরতা তৈরি করে। রোজা শুরুর দুই মাস আগেই পণ্যের দাম বাড়ায়। এবারও সেটা করেছে। ক্রেতাকে জিম্মি করে তারা অতি মুনাফা লুটতে শুরু করেছে। মনে হচ্ছে, এবার রোজায় পণ্যমূল্যে বাড়তি দর ক্রেতাকে অতিষ্ঠ করে তুলবে। তাই এখন থেকেই উদ্যোগ না নিলে মূল্য স্বাভাবিক রাখা কঠিন হবে।
টিসিবি সূত্র জানায়, বাজারে প্রতি কেজি আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা, যা গত বছর একই সময় রোজার আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, যা গত বছর একই সময় ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, যা আগে ৩৫০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি হলুদ বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা, যা আগে ১৮০ টাকা ছিল। গত বছর রোজার আগে ৪২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া জিরা বর্তমানে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩৮০ টাকা কেজি প্রতি দারুচিনি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১১৫০ টাকা বিক্রি হওয়া লবঙ্গ বর্তমানে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর রোজার আগে প্রতি কেজি প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধ ৬২০-৬৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮২০-৯০০ টাকা। ৭৮ টাকা দরে বিক্রি হওয়া প্রতি কেজি চিনি এখন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি অ্যাঙ্কর ডাল বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা, যা আগে ৫০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা, যা গত বছর একই সময় ৮০ টাকা ছিল।
কাওরান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. দুলাল বলেন, বাজারে সব বিক্রেতা এক। তারা ক্রেতার পকেট কাটতে বসেছে। এখন বাজারে সব ধরনের পণ্যের দামে আগুন। রোজার এতদিন আগেই এমন অবস্থা বিরাজ করছে। রমজান মাস যত ঘনিয়ে আসবে পণ্যের দামের পারদ আরও বাড়তে থাকবে। কিন্তু আমাদের আয় আর বাড়বে না। তাই মনে হচ্ছে রোজায় পণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হবে। তাই এখন থেকেই বাজারে তদারকি জোরদার করতে হবে। অসাধু বিক্রেতাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, পণ্যের দাম বাড়ানোর পেছনে আমরা দায়ী নই। আমাদেরই বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। বেশি দামে এনে ক্রেতার কাছে বেশি দামেই বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। দাম যা বাড়ানোর আমদানিকারকরা বাড়াচ্ছে। কারসাজি যা করার তারাই করে।
রাজধানীর শ্যামবাজারের পণ্য আমদানিকারকরা জানান, আদা-রসুন আমদানিতে এলসি স্বাভাবিক না হলে দাম আরও বাড়বে। ডলারের মূল্য অনেক বেড়েছে। ব্যাংকে এলসি খোলা যাচ্ছে না। অনেক জটিল হয়ে গেছে। এ অবস্থায় আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে এলসি জটিলতা দূর করাসহ শুল্ক প্রত্যাহার করে পণ্য আমদানি বাড়ানোর সুযোগ দিতে হবে। এখন থেকে যদি পণ্য আমদানি করা না যায় তাহলে রমজানে পণ্যের দাম আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে ক্যাবের সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন বলেন, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর জন্য একেক সময় একেক বাহানা সামনে নিয়ে আসেন। একসময় বলেন, ডলার সমস্যা। আবার এর মধ্যে বলেছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি দাম বাড়াচ্ছে। এখন আবার এলসি সমস্যাকে অজুহাত হিসাবে এনেছেন। তিনি বলেন, রমজানের জন্য যেসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রয়োজন, সেগুলো ইতোমধ্যেই এলসি করা হয়েছে। কারণ পণ্য আসার দুই থেকে তিন মাস আগে এলসি করতে হয়। সে অনুসারে রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ইতোমধ্যেই বন্দরে এসে পৌঁছেছে। এলসি ইস্যুটা একটা অজুহাত মাত্র।
জানতে চাইলে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে বলেন, আসন্ন রমজান মাসে বাজার মনিটরিং অব্যাহত আছে। তা আরও জোরদার করা হবে। প্রতি বছর রোজায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বাজার অস্থির হয়ে যায়। আসন্ন রমজান মাসে এসব অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে ভোক্তা অধিদপ্তর।
লাগামহীন ছোলা চিনিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম
চাক্তাই খাতুনগঞ্জে সিন্ডিকেটের থাবা
আহমেদ মুসা, চট্টগ্রাম
রমজানের আগেই সিন্ডিকেটের কবলে দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ। একাধিক সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এখানে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এরই মধ্যে বাড়ানো হয়েছে ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল ও মুরগির দাম। সরবরাহ ঘাটতি না থাকলেও দাম বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও বিক্রি হচ্ছে না ভোজ্যতেল। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় এসব পণ্যের দাম আরও বেশি।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয়ের কারণে গত কয়েক বছর ধরে রমজানে দ্রব্যমূল্য তেমন একটা বাড়ানোর সুযোগ পান না পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তারা এখন কৌশল পালটেছেন। রমজান আসার আগেই তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেন, যাতে পরে এ নিয়ে আর প্রশ্নের মুখে পড়তে না হয়। এবারও রমজানের ঠিক আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে চিনির দাম বেড়েছে মনপ্রতি ১২০ থেকে ২০০ টাকা। একই সময়ের ব্যবধানে ছোলা মনপ্রতি ২০০ টাকা থেকে ৩০০ পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি মন (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ১০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৩ হাজার ৮৬০ টাকা। এছাড়া এক সপ্তাহ আগে ছোলা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭০০ টাকায়। এখণ মনে ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ টাকা। দীর্ঘদিন ধরে চিনির বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। চিনির সংকট এখনো কাটেনি। চাহিদা অনুযায়ী চিনির সরবরাহ না থাকায় বাড়ছে দাম। আবার অনেক আমদানিকারক ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে পারছেন না। এ কারণে চিনির চাহিদা অনুযায়ী আমদানি নেই। তাই সংকট সহসাই কাটছে না। সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না চিনি। অতিরিক্ত দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমান বাজারে চিনি সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে খোলা চিনি প্রতি কেজি ১১৮ টাকা। অথচ খুচরা দোকানগুলোতে প্যাকেট চিনি ১১০ থেকে ১১২ টাকা ও খোলা চিনি ১১৫ থেকে ১১৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এর চেয়ে অনেক বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে আখের লাল চিনি। মোড়কজাত এ ধরনের চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে।
পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে দুই সপ্তাহ আগে চায়না আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন দাম ঠেকেছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়। যা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩শ টাকায়। পাশাপাশি ৯০ টাকায় বিক্রি হওয়া ভারতীয় আদা বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা। অন্যদিকে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে চায়না রসুন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া বাজারে আসা নতুন দেশি পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চালের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। মোটা ব্রি-২৮ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজি, চিকন চাল মিনিকেট ৭০ থেকে ৭৫ টাকা ও নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। তবে আটা-ময়দার দাম কিছুটা কমছে। দুই কেজির প্যাকেটে ২০ টাকা কমে আটা ১৩৫ ও ময়দার প্যাকেটে ১০ টাকা কমে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি মসুর ডাল ১৩০ টাকা ও আমদানি করা ডাল ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের চিনি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম মুন্না যুগান্তরকে জানান, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে গুটিকয়েক সিন্ডিকেট। আমদানি মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ দামে চিনি বিক্রি করছে তারা। চিনির বাজারে সরকারের তেমন নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিত হবে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তোলা। অপরদিকে ছোলার বাজারও রয়েছে গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে। রমজানের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে তারা আগেভাগেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
বাজারদর : চট্টগ্রামের শীতকালীন সবজির দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। নগরীর কাঁচা বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ফুলকপি ৩০, পেঁপে ২৫, বাঁধাকপি ২৫, লাউ ৩০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, শিম ৪০, বেগুন ৩০, শালগম ৩০, শসা ৪০, মূলা ২৫, টমেটো ৩০ ও নতুন আলু ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারে প্রতি কেজি রুই ২৪০ থেকে ২৮০, কাতল ২৭০, কার্প ২২০ থেকে ২৫০, তেলাপিয়া ২০০, কই ২২০, মৃগেল ২০০, চিংড়ি ৫৬০, পোয়া ৪শ, রূপচাদা ৬শ; প্রতি কেজি ইলিশ ১ হাজার, কোরাল ৫৫০, পাবদা ৪শ, শিং ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা। আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৭০ টাকা কেজি। দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৫০০ টাকা। আগের সপ্তাহে ছিল ৪৭০ থেকে ৪৮০ টাকা কেজি।