Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

কুসিকে প্রচার শেষ, কাল ভোট 

বহিরাগত ও কালো টাকা নিয়ে শঙ্কা

কুসিক নির্বাচন : প্রার্থীদের পালটাপালটি অভিযোগ * উদ্বেগের মধ্যেও নগর জুড়ে উৎসবের আমেজ

Icon

হাসিবুল হাসান, তাবারক উল্লাহ কায়েস ও আবুল খায়ের, কুমিল্লা থেকে

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২২, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বহিরাগত ও কালো টাকা নিয়ে শঙ্কা

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সর্বত্র ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানারে। সোমবার নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় -যুগান্তর

টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের শেষ দিনের প্রচার-প্রচারণা। সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালিয়েছেন প্রার্থীরা। যার যার মতো করে শোডাউন করেছেন নগরীর বিভিন্ন সড়ক এবং পাড়া-মহল্লায়।

প্রচারের শেষ দিনে নানা উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল ভোটারদের মধ্যে। কারণ নগরীতে ছিল বিপুলসংখ্যক বহিরাগত লোকের সমাগম। তবে শেষ মুহূর্তে এসব বহিরাগতের বেশির ভাগই নগর ছেড়েছে। শেষ দিনেও প্রার্থীরা ভোটারদের দিয়েছেন নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি।

পাশাপাশি করেছেন মেয়র প্রার্থীরা পালটাপালটি অভিযোগও। একে অপরের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনা এবং প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলেছেন। ভোটের মাঠে বহিরাগত নিয়ে এসে মাঠ দখলের শঙ্কাও রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামীকাল বুধবার সকাল থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। 

এবারের নির্বাচনে ২৭ ওয়ার্ড এবং ১০৫ কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০। সব কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে সাধারণ মানুষ বেছে নেবেন তাদের পছন্দের প্রার্থী। নির্বাচিত করবেন গোমতী নদীপারের শহর কুমিল্লার নতুন নগরপিতা।

শেষ দিনেও প্রার্থীরা ভোটারদের দিয়েছেন নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি। এদিকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। 

ভোটের মাঠে মেয়র প্রার্থীদের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আওয়ামী লীগের সবাই দলীয় প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে মাঠে নামেননি। রিফাতের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ-সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা থাকলেও মেয়র পদে মনোনয়ন চাওয়া অপর ১৩ নেতা ও তাদের অনুসারীদের অনেককেই মাঠে সক্রিয় দেখা যায়নি।

ভোটের মাঠে তাদের নৌকার পক্ষে সক্রিয় রাখা আওয়ামী লীগ ও তাদের প্রার্থী রিফাতের বড় চ্যালেঞ্জ। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী। তারাও নিজেদের ভোট নিয়ে ব্যস্ত। আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা অধ্যক্ষ আফজল খানের পরিবারের রয়েছে ভোটব্যাংক।

কিন্তু তারাও প্রকাশ্যে মাঠে নেই। এ ছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সরকারের নানা নেতিবাচক দিক, সরকার দলের নেতাকর্মীদের কর্তৃক প্রভাব বিস্তার, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজির মতো নানা বিষয় নৌকার প্রার্থীর ভোটে প্রভাব পড়তে পারে।

অন্য দিকে টানা দুই দফায় মেয়র থাকা মনিরুল হক সাক্কুর বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। উন্নয়নকাজ নিুমানের, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নিজের সম্পদ বৃদ্ধি, নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি, সরকার দলের সঙ্গে আঁতাতসহ আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে সাক্কুর বিরুদ্ধে।

তাই নগরবাসী এবার ভোট দিতে সেসব বিষয়ও হিসাব-নিকাশ করবেন। পাশাপাশি নগরের জলাবদ্ধতা ও যানজট এবং উন্নয়নবঞ্চিত হওয়ায় অনেকেই সাবেক মেয়রের ওপর ক্ষুব্ধ। নগরীর দক্ষিণ অংশে রয়েছে প্রায় ৬৫ হাজারের মতো ভোটার। ওই এলাকায় উন্নয়নকাজ কম হওয়ায় ক্ষুব্ধ ভোটাররা।

সাবেক মেয়রের এমন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে তার সঙ্গে নেই দলীয় নেতাকর্মীরা। বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী সবকটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা রয়েছেন অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সারের সঙ্গে। ঘোড়া প্রতীক নিয়ে কায়সার নগরীতে প্রচারে অনেক চমক সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন।

দলীয় হিসাবে সাক্কু ও কায়সার দুজনই বিএনপি নেতা। তবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করায় তাদের দুজনকেই বরখাস্ত করেছে বিএনপি। তাই কেন্দ্র থেকে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর কোনো দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ফলে বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীরা অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন।

এতে এক দিকে যেমন ভোট ভাগ হবে অন্য দিকে নেতাকর্মীদের অনেকেই কেন্দ্রবিমুখ হতে পারেন। এবারের নির্বাচনে তরুণ, শিক্ষিত, সচেতন ও নারী ভোটার বড় ফ্যাক্টর। এ ছাড়া সদর দক্ষিণের ৬৫ হাজার ভোটার জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে বড় ফ্যাক্টর।

ইসি জানিয়েছে, বিগত ২০১৭ সালের কুসিক নির্বাচনে ভোটার ছিল দুই লাখ সাত হাজার ৫৬৬ জন। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন ও পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন।

তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন দুজন। সেই হিসাবে গত নির্বাচনের তুলনায় এবার ভোটার বেড়েছে ২২ হাজার ৩৫৪ জন, যাদের প্রায় সবাই তরুণ। এ ছাড়া এখানে পুরুষ থেকে নারী ভোটার বেশি। আর সংখ্যালঘু ভোটারও প্রায় ৩৫ হাজার। তাই যে মেয়র প্রার্থী সিটির নারী, তরুণ ও সংখ্যালঘু ভোট নিজের দিকে টানতে পারবেন তিনিই হাসবেন শেষ হাসি।

পালটাপালটি অভিযোগ : নির্বাচনি প্রচারের শেষ দিনে কুসিকের দুই বারের মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত।

সোমবার নগরীর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিফাত অভিযোগ করেন, ভোটের মাঠে সমানে কালো টাকা ছড়াচ্ছেন সাক্কু। তার দাবি, মেয়র থাকার সময় দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ আয়ের টাকাই এখন ছড়ানো হচ্ছে ভোটারদের মাঝে।

নৌকা প্রার্থীর এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মনিরুল হক সাক্কু। প্রচারের শেষ দিনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রমাণ না থাকায় কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন। যারা অভিযোগ করছেন তারাই বরং কালো টাকার ব্যবহার করছেন।

মানুষ আমাকে এমনিতেই ভালোবাসেন, আমাকে তাদের টাকা দিতে হয় না। আমার প্রতিপক্ষ টাকা নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন, এমন খবর আমার কাছে আছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, নির্বাচনি নিয়ম না মেনে এমপি বাহার এলাকায় থাকায় ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনও এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সেই সঙ্গে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তিনিই জিতবেন বলেও আশাবাদ জানান সাক্কু।

নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি কায়সারের : নগরীর ধর্মসাগর পাড়ের নির্বাচনি কার্যালয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, আমার কোনো কালো টাকা নেই। তাই ব্যবহার করার প্রশ্ন আসে না।

প্রতিপক্ষ দুই প্রার্থীর কালো টাকা আছে, তারা টাকা বিলি করছেন, এমন খবর মাঠ থেকে বিভিন্নভাবে আসছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে কায়সার বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ-সদস্য হাজি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বিষয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় সংসদ-সদস্য প্রচারণার শুরু থেকেই ভোটের মাঠে অবস্থান করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করছেন।

নিজের সম্মান হারালেন এমপি বাহার-নির্বাচন কমিশনার : এদিকে কুমিল্লা ফয়জুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে প্রিজাইডিং অফিসারদের ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, (কুমিল্লা সদর আসনের) সংসদ-সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার একজন জনপ্রতিনিধি।

তারা আইন প্রণয়ন করেন। যদি তারাই আইন না মানেন তাহলে আর কী বলার আছে! তাকে তো আর আমরা টেনেহিঁচড়ে নামাতে পারি না। চিঠিতে এলাকা না ছেড়ে তিনি নিজেই নিজের সম্মান হারিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ভোটের পরিস্থিতি ভালোই আছে। কোনো ধরনের খারাপ পরিস্থিতির ঘটনা এখনো ঘটেনি। নির্বাচনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভোটের জন্য যা যা করা দরকার সবই করা হয়েছে। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। তিনি বলেন, যদি ভোটের পরিস্থিতি ভালো না থাকে তাহলে নির্বাচন স্থগিত করা হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা রয়েছে। এমপি বাহারের কুমিল্লায় অবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি আইন অমান্য করে নির্বাচনি এলাকায় আছেন।

তবে আইনের কিছু ফাঁকফোকরকে তিনি ব্যবহার করছেন। আমাদেরও সময় আসবে। ‘ওয়েট অ্যান্ড সি।’ এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।

নগরজুড়ে ভোটের উৎসবের আমেজ, আছে উদ্বেগও : টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে শেষ দিনের প্রচার-প্রচারণা। সোমবার দিনভর প্রার্থীরা যার যার মতো করে শোডাউন করেছেন নগরীর বিভিন্ন সড়ক এবং পাড়া-মহল্লায়। প্রচারের শেষ দিনে ছিল ভোটারদের মাঝে কিছুটা উদ্বেগ।

কারণ নগরীতে ঘটেছিল বিপুলসংখ্যক বহিরাগত লোকের সমাগম। তবে প্রচারের শেষ মুহূর্তে এসব বহিরাগতের বেশির ভাগই নগর ছেড়েছে। এদিকে টানা ১৮ দিনের প্রচারে প্রার্থীরা পরস্পরবিরোধী বক্তব্য প্রদান করলেও কোনো প্রার্থীই জড়াননি সংঘাত-সহিংসতায়।

যার ফলে ভোটের মাঠে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। এতে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদানে ভোটারদের আগ্রহ বেড়েছে। সব মিলিয়ে কুমিল্লা এখন ভোটের উৎসবের নগরী।

৮৯ কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ : ৫ স্তরের নিরাপত্তা : নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে সদর ও দক্ষিণ উপজেলার ২৭টি ওয়ার্ডের সব কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কুসিকের দুই উপজেলার ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮৯ ভোটকেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সাতটি কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৯টি সাধারণ ভোটকেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে সদর দক্ষিণ উপজেলার ৯টি ওয়ার্ডের (১৯ থেকে ২৭ নম্বর) ৩২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে সব কেন্দ্রই অধিক ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে।

অবশিষ্ট সব কেন্দ্র সদর উপজেলায়। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে অন্তত ৬-৭ জন পুলিশ সদস্য, ২০ জন পুরুষ ও মহিলা আনসার সদস্য, কেন্দ্রের বাইরে পুলিশের একটি মোবাইল টিম, প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য বাহিরে একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে টহল, ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থাকবে মোবাইল টিম।

এ ছাড়াও নির্দিষ্ট কেন্দ্র এলাকায় থাকবে বিজিবি ও র‌্যাবের টহল টিম। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নজরদারি থাকবে বলেও পুলিশ জানিয়েছে। কুসিক নির্বাচনে সব মিলিয়ে অন্তত ছয় সহস াধিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও কর্মকর্তা মাঠে থাকবেন।

এদিকে ভোটের দিন কুসিক এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাচনি পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে নগরীর প্রবেশপথে মোতায়েন থাকবে পুলিশের ৭৫টি চেকপোস্ট ও ১০টি পিকেট টিম। সব মিলিয়ে ভোটের দিনে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে ভোটকেন্দ্রসহ পুরো কুসিক নগরী।

মাঠে মোতায়েন থাকবে অন্তত ছয় হাজারেরও অধিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য। এ ছাড়াও নগরীর প্রতিটি প্রবেশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে থাকবে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে থাকবে বুলেট গ্রুপ-আরমোরেড পারসোনাল ক্যারিয়ার (এপিসি) ও জলকামান গাড়ি। জেলা পুলিশ সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ বলেন, কুসিক নির্বাচনকে আমরা অধিক গুরুত্ব দিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। জেলা পুলিশের বাইরেও আশপাশের জেলা থেকে আনা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য।

এ ছাড়াও ঢাকা থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও চট্টগ্রাম থেকে রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) সদস্য আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভোটের দিন রাস্তায় থাকবে এপিসি ও জলকামান গাড়ি। নির্বাচনের দিন সব প্রকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। 

র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, নির্বাচনে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এজন্য কুসিক এলাকায় র‌্যাবের অন্তত ২৭ টিম কাজ করছে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ প্রত্যাশা করছে কুসিকের প্রার্থী ও ভোটাররা। তাই আমরা এ বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আশা করি এ ভোট হবে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর।

তিনি আরও বলেন, ‘ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রে কঠোর নিরাপত্তা থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট ও ১২ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়াও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সহায়তা করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবে।’
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম