Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

২৪ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

ভর্তিতে সতর্কতা জারির চিন্তা ইউজিসির

দুই দফায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রথমে আসছে তিনটি * ছয়টির শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন নেই * বৈধ উপাচার্যও নেই

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভর্তিতে সতর্কতা জারির চিন্তা ইউজিসির

দেশের ২৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে সতর্কতা জারি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। দুইভাগে এ সতর্কতা জারি করা হবে। প্রথম দফায় তিনটি এবং পরে বাকিগুলো সম্পর্কে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনিক, আর্থিক এবং একাডেমিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আইনগত প্রশ্ন থাকায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চিহ্নিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোনোটি অবৈধ ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে। আদালতের রায় বা স্থগিতাদেশ নিয়ে কোনোটি পরিচালিত হচ্ছে। কোনোটা আবার সরকারের অনুমোদন পেলেও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পায়নি। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় অননুমোদিত প্রোগ্রাম ও বিভাগও চালাচ্ছে। কয়েকটিতে মালিকানা নিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এছাড়া এ তালিকায় রাষ্ট্রপতি বা চ্যান্সেলর নিযুক্ত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ না থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে।

জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ যুগান্তরকে বলেন, সাধারণত ভর্তি মৌসুম সামনে রেখে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। যাতে কেউ ভর্তি হয়ে প্রতারিত বা কোনো ধরনের বিপাকে না পড়েন। এটা ইউজিসির রুটিন দায়িত্ব। গণমাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে এবং পাশাপাশি ইউজিসির ওয়েবসাইটে এসব বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়। ভর্তির আগে ওয়েবসাইট (www.ugc.gov.bd) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেখে শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়া উচিত।

পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ওমর ফারুখ বলেন, প্রথম দফায় তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি সম্পর্কে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে। বাকিগুলো সম্পর্কে শিগগিরই তথ্য প্রকাশ করা হবে। প্রথম দফায় ইবাইস, আমেরিকা বাংলাদেশ এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা সম্পর্কে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে এটি প্রকাশ করা হবে।

ইবাইস ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে গণবিজ্ঞপ্তির খসড়ায় বলা হয়-বিওটি নিয়ে দ্বন্দ্ব ও আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ক্যাম্পাস ও ঠিকানা নেই। বৈধ উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। কোনো পদেই আইনানুগভাবে কেউ নিয়োজিত নেই। সব শিক্ষাক্রম মেয়াদোত্তীর্ণ। এসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক কার্যক্রমসহ ভর্তি, পরীক্ষা ও এর ফলাফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত বৈধতা নেই।

আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি সম্পর্কেও বিশাল ফিরিস্তি তৈরি করেছে ইউজিসি। এতে বলা হয়-২০০৬ সালের ২২ অক্টোবর একদফায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে সংশ্লিষ্টরা মামলায় রায় পায়। অনুমোদনকালে ঠিকানা বনানী হলেও পরে প্রগতি সরণির নদ্দা ঠিকানা দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়। কিন্তু চার সদস্যের কমিটি ঠিকানা পরিদর্শনে গিয়ে আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মতো কোনো সুযোগ-সুবিধা পায়নি। উপাচার্যসহ দুই কর্মকর্তা এবং কোনো পদেই কর্মকর্তা পাওয়া যায়নি। নেই বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ। শিক্ষাক্রমের মেয়াদও উত্তীর্ণ। প্রতিষ্ঠানটির সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিলসহ একাডেমিক, প্রশাসনিক এবং ভর্তি-পরীক্ষা ও সনদের আইনগত বৈধতা নেই। দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা সম্পর্কেও প্রায় একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। ২০০৬ সালের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করেছিল সরকার। এদিকে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতিও চলছে ইউজিসিতে। এতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে কুইন্স ইউনিভার্সিটি, টাইমস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, গণবিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। এছাড়া রয়েছে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, জেডএইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পুন্ড্রু ইউনিভার্সিটি, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।

ইউজিসির এক কর্মকর্তা জানান, বহু আগে সরকার ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে। তবে এগুলো এখনো শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি পায়নি। এগুলো হলো রূপায়ণ একেএম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকার মাইক্রোল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং কিশোরগঞ্জের শেখ হাসিনা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। আর দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৬ সালে সরকার বন্ধ করেছে। দেশে বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১০৮টি। তবে এগুলোর মধ্যে ৯৯টিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম