জুয়াবাজির ফাঁদে নিঃস্ব যুবসমাজ
যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চলছে ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক দেশীয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লীগ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এবং অস্ট্রেলিয়ান প্রিমিয়ার লীগ বিগব্যাশ। আর টি-টোয়েন্টির এসব জমজমাট লীগকে ঘিরে এক ধরনের অসাধু চক্র প্রতিনিয়তই হাজার হাজার টাকার ফলাফল বাজি, ওভার বাজি, রান বাজিসহ বিভিন্ন ধরনের জুয়া খেলছে। জুয়াবাজির ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকেই।
এই জুয়াবাজি প্রকাশ্য দিবালোকেই চলছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে বা গোয়েন্দা নজরদারিতে কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও বন্ধ হচ্ছে না জুয়াবাজি। পাশাপাশি অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন সাইটেও সক্রিয় হয়ে উঠছেন জুয়াড়িরা। ফলে অবৈধ আর্থিক লেনদেন দিনদিন বাড়ছেই। এদিকে বিপিএল, বিগব্যাশ শেষ হতে না হতেই মাসখানেক পর শুরু হচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ আইপিএল। কাজেই জুয়ার এ মৌসুম সহসাই শেষ হচ্ছে না।
ম্যাচ নিয়ে জুয়া ১২ জনকে দণ্ড
সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুরে শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বিপিএল নিয়ে জুয়া খেলার সময় ১২ জনকে আটকের পর জেল-জরিমানা করা হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জনকে ৭ দিন করে কারাদণ্ড এবং বাকিদের ৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। ৫ জানুয়ারি, শনিবার সন্ধ্যায় বিপিএল ম্যাচ চলাকালে তাদের আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ১২ জনই স্টেডিয়ামে বিপিএল খেলা চলাকালে বাজি ধরে জুয়া খেলছিল। আটকদের মধ্যে মো. খোকন ও মো. আশিক নামে দু’জনকে ৭ দিন করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। বাকি ১০ জনকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বিপিএল চলাকালীন ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
বিপিএলে ভারতীয় জুয়াড়ি
ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলো জুয়াড়িদের প্রধান লক্ষ্য। কোটি কোটি টাকার বাজি ধরা হয় এই টুর্নামেন্ট ঘিরে। বিপিএলও তার বাইরে নয়। দেশি-বিদেশি জুয়াড়িরা তৎপর হয়ে উঠেছে বিপিএল ঘিরে। অবশ্য জুয়াড়িদের কর্মকাণ্ড ঠেকাতে তৎপর বিপিএল কর্তৃপক্ষও। তাই খেলা চলাকালীন গ্যালারিতে নজরদারি করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
টুর্নামেন্টের প্রথম দুই দিনেই ১৫ জুয়াড়িকে আটক করেছিল পুলিশ। গত মঙ্গলবার শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে আরও ৫ জুয়াড়িকে আটক করা হয়েছে। পাঁচ জনই ভারতীয় নাগরিক। এর মধ্যে তিন জন ভারতের হারিয়ানা রাজ্যের নাগরিক।
এরা হলেন- দীপক, সঞ্জিব কুমার ও সুনিল কুমার। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জুয়া নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। তবে তাদের প্রত্যেককে ৪ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি জব্দ করা হয়েছে তাদের মোবাইল ফোন। সেই সঙ্গে তাদের মাঠে আসার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান।
বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন
ক্রিকেট খেলা নিয়ে বাজি ধরে অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় সোহাগ হোসেন (২৫) নামে এক যুবককে তার বন্ধু খুন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২ জানুয়ারি বুধবার রাতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সোহাগ মদনপুর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। নিহতের মামা শহিদুল ইসলাম বাবু ও স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার ক্রিকেট খেলা নিয়ে বন্ধু সাগরের সঙ্গে সাত হাজার টাকা বাজি ধরেছিল সোহাগ। বাজিতে সোহাগ হেরে গেলে সেই টাকা পরিশোধ নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে ঝামেলা বাধে। এক পর্যায়ে সাগর ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগকে রানীরহাট বটতলা এলাকায় ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় সাগরের সঙ্গে তার কয়েকজন সহযোগীও ছিল। পরে বাজির পাওনা টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সাগর লাঠি দিয়ে সোহাগের মাথায় আঘাত করে। এতে সোহাগ গুরুতর আহত হন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যান তিনি। জুয়ার ফাঁদে শুধু সোহাগই নন প্রতি বছর একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।
বিপিএলকে ঘিরে বাজিকররা
শুরু হয়েছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া টি-২০ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল)। এবার বিপিএল অনুষ্ঠিত হবে সিলেট, ঢাকা এবং চট্টগ্রামে। ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে ৭টি দল- ঢাকা ডায়নামাইটস, রংপুর রাইডার্স, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, খুলনা টাইটানস, রাজশাহী কিংস, চিটাগং ভাইকিংস ও সিলেট সিক্সার্স। দিনে দুটি করে ম্যাচ হচ্ছে। প্রথম ম্যাচ দুপুরে, দ্বিতীয় ম্যাচ বিকাল সাড়ে ৫টায়। আর শুক্রবারের দুই ম্যাচ শুরু হবে যথাক্রমে দুপুর ২টা ও সন্ধ্যা ৭টায়। মোট ৩টি ভেন্যু হচ্ছে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম ও সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।
ঢাকার মিরপুরে ইতিমধ্যে প্রথম পর্বের খেলা শেষ। দ্বিতীয় পর্ব সিলেটে, তৃতীয় পর্ব ঢাকায়, চতুর্থ পর্ব চট্টগ্রামে। লীগ পর্বের খেলা শেষে শুরু হবে শেষ চার দলের লড়াই। ৮ ফেব্র“য়ারি মিরপুরে ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট আসর। এবারের আসরে প্রতি ম্যাচে দলগুলোতে খেলতে পারবেন চারজন বিদেশি খেলোয়াড়। ফলে বিপিএলে যোগ হয়েছে বাড়তি উন্মাদনা। তবে জমজমাট এ আসরকে ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠছেন বাজিকররা। হাজার হাজার টাকা খোয়ানোর পাশাপাশি জুয়াবাজিতে প্রাণহানি বা হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে অহরহ।
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম আলোচিত বিষয় ক্রিকেট বা ফুটবল ম্যাচ ঘিরে স্পট ফিক্সিং এবং বাজি। আন্তর্জাতিক বা ঘরোয়া বিভিন্ন ক্রিকেট বা ফুটবল ম্যাচকে ঘিরে বাজিকরদের চলে দর কষাকষি। দুর্বল টিমের সঙ্গে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের খেলা থাকলে সেক্ষেত্রে দেয়া হয় লোভনীয় সব অফার। বাংলাদেশেও আনাচে-কানাচে বাজির ঘোড়া প্রায়ই লাফিয়ে ওঠে। চলে রমরমা বাজি-ব্যবসা। আইপিএল, বিপিএল, বিগব্যাশ, বিশ্বকাপ এমনকি দেশ-বিদেশের ঘরোয়া লীগগুলোকে ঘিরেও বাজিকরদের চলে রমরমা ব্যবসা। পরিসংখ্যান বলে, পাশের দেশ ভারত এবং পাকিস্তানে স্পট ফিক্সিংসহ বাজির প্রভাবটা অনেক বেশি। বিশ্বে পাঁচটি বাজিকর বা জুয়াড়ি অধ্যুষিত দেশের মধ্যে থাকবে এ দুই দেশের নাম। বিশ্লেষকদের মতে, আমাদের দেশে বাজিটা এসেছে এ দুই দেশ থেকেই। আর ছড়িয়ে পড়ছে দেশের আনাচে-কানাচে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ-বিপিএলকে ঘিরে সক্রিয় জুয়াড়িদের ধরতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড ও বিপিএল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বিপিএল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, লীগকে ঘিরে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা থাকলে বা জুয়াড়িদের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গেই যেন পুলিশকে জানানো হয়।
ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, এর মধ্যেই রাজধানীজুড়ে পুলিশ নজরদারি বাড়িয়েছে। পাড়া-মহল্লা এমনকি অলিগলিতে যেসব স্থানে টিভিতে খেলা দেখানো হয় সেসব স্থানে গোয়েন্দা মোতায়েন করা হয়েছে। বিপিএল নিয়ে কোনো বাজি বা জুয়ার সঙ্গে কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
তাদের বিচরণ ক্ষেত্র
আমাদের দেশে ঘরোয়া বাজিকরদের বিচরণটা অনেক বেশি। চলছে বিপিএল আর বিগব্যাশ। রাস্তার মোড়ের দোকানগুলোতে ভালোভাবে চোখ রাখলেই দেখা যায় সেখানে চলছে বাজির দর কষাকষি। তবে যারা বাজি ধরেন তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৫ থেকে ২৫ বছর। আর যাদের বয়স বেশি কিন্তু বাজি ধরেন তারাই হলেন ঘরোয়া বাজির মাফিয়া ডন। রাজধানীর মিরপুর, পুরান ঢাকা, টঙ্গী এবং কামরাঙ্গীর চরে বাজিকরদের বিচরণটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তবে জুয়াড়িদের এ নতুন ধান্দায় থেমে নেই নগরীর অভিজাত এলাকাগুলো। ধনীর দুলালরা বাজি ধরেন বিভিন্ন বার এবং অভিজাত হোটেলে গিয়ে, তাদের বাজি ধরার ধরনটাও কিছুটা ভিন্ন এবং অবশ্যই ‘বিগ বাজেট’। বিভিন্ন ম্যাচকে ঘিরে জুয়াড়িদের এ প্রভাবটা দেখা যায় গ্রামবাংলাতেও।
লাভের গুড় খাচ্ছে বাজির ডিলার
বাজিতে এক পক্ষ লাভবান হয় আর অন্যপক্ষ পরাজিত হয়। এটাই নিয়ম। কিন্তু এখানে তৃতীয়পক্ষ সবসময় লাভবান হন। এই তৃতীয় পক্ষ হচ্ছেন বাজির ডিলার। যিনি দুই পক্ষের বাজির মধ্যস্থতা করেন। এই মধ্যস্থতাকারীকে বলা হয় বাজির ডিলার। এই ডিলাররা বাজির দর নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ম্যানেজ করে ব্যবসা চালান। ধরা যাক, কোন ম্যাচে বাজির রেট যদি হয় ১৫/১৭। সেক্ষেত্রে যদি ছোট দল জিতে যায় তাহলে যিনি বড় দল নেবেন তাকে ১৭০০ দিতে হবে আর যিনি ছোট দল নেবেন তিনি পাবেন ১৫০০ টাকা। এই মাঝের ২০০ টাকা তাহলে কোথায় যাচ্ছে? এই টাকাটাই লাভ হয় ডিলারের। অর্থাৎ ডিলার যদি ৫০টা ম্যাচ করে দেন তাহলে তার বসে থেকেই ১০ হাজার টাকা লাভ হবে। আবার অনেকক্ষেত্রে বাজির রেটে পার্থক্য অনেক বেশি হয়। সেক্ষেত্রে ডিলারের লাভও বেশি হয়। আর বড় দল জিতলে প্রতি হাজারে চার্জের নামে ডিলারের লাভ হয় ২০ থেকে ৫০ টাকা। ফলে জুয়াবাজিতে কেউ নিঃস্ব আবার কেউ বড় লোক হলেও লাভের গুড় সবসময় খায় ডিলার। আজকাল গ্রামগঞ্জে বাজির এমন অসংখ্য ডিলার গড়ে উঠেছে। যারা জুয়াকে নানাভাবে উৎসাহিত করছেন।
সবচেয়ে ক্ষতি করছে ‘বেট ৩৬৫’
বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় বেটিং সাইট ‘বেট ৩৬৫’। অ্যালেক্সার হিসেবে সাইটটির গ্লোবাল র্যাঙ্কিং ২৩২ আর বাংলাদেশে সাইটটির অবস্থান ২৫। বোঝাই যাচ্ছে সাইটটি ভিজিট হচ্ছে লাখ লাখ বার। ল্যাপটপ, ডেস্কটপ বা মোবাইল দিয়ে সাইটটি সহজে ব্রাউজ করা যায়। বিপিএল, আইপিএল, বিগব্যাসের মতো জমকালো টি-২০ আসর কিংবা মৃতপ্রায় ঘরোয়া ফুটবলের ম্যাচ হলেও পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় সব তথ্য। ‘বেট ৩৬৫’ মূলত ক্রীড়াবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক বেটিং (বাজি ধরার) সাইট; যেখানে বিশ্বের যে কোনো স্থানের ১৮ বছর বা এর বেশি বয়সের যে কেউ যে কোনো খেলা নিয়ে অন্যদের সঙ্গে বাজি ধরতে পারেন। সহজ পথে স্বল্প সময়ে ‘বড়লোক’ হতে গিয়ে অনেকে হারান সর্বস্ব। তবে হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হলেও লাভের অঙ্কে ফুলেফেঁপে উঠছে বেট ৩৬৫ ডটকম নামক যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেটিং সাইটটির; সঙ্গে লাভবান হচ্ছেন এ সাইট ব্যবহারকারী দেশি ও ভিনদেশি কিছু অভিজ্ঞ জুয়াড়িও।
জুয়াবাজির হিসাব সংরক্ষণ
নগদ বাজির পাশাপাশি চলে মাসব্যাপী বাকি বাজির পসরা। এটাকে অনেক বাজিকর মাসিক ইনকামের অংশ হিসেবে দেখেন। তবে অনেক সময় কেউ কেউ নিঃস্ব হয়ে যান বাজির টাকা পরিশোধ করতে। মাসিক বাজির ক্ষেত্রে বাজির দলিল দস্তাবেজ সংরক্ষণ করা হয় মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে। তবে পরিবারের লোকজনের কাছে ধরা পড়ার ভয়ে এক্ষেত্রে বেশ সতর্ক জুয়াড়িরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা দুটি মোবাইল ব্যবহার করেন। বাজির দরটা বেশি হলে মোবাইলে রেকর্ডিংটাও করে রাখা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাজিকর জানান, মাসিক বাজিটা সাধারণত করা হয় দীর্ঘদিনের বাজির পার্টনারের সঙ্গে। তবে এক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকা জরুরি। মাসের নির্দিষ্ট একটা তারিখ দেয়া থাকে ওইদিনই টাকা পরিশোধ করতে হয়। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেশি হলে একটা নির্দিষ্ট অংশ অবশ্যই পরিশোধ করতে হয় বলে জানান তিনি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাসিক বাজির ক্ষেত্রে তালিকায় যোগ হয় স্পেন, ইতালির বিভিন্ন লীগের ফুটবল ম্যাচগুলো। এক্ষেত্রে র্যাঙ্কিং দেখে বাজির দরটা ঠিক করা হয়।