Logo
Logo
×

প্রকৃতি ও জীবন

রক্তকাঞ্চন

Icon

মো. মিজানুর রহমান

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কিউ সাইন্সের মতে রক্তকাঞ্চনের আদিভূমি বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত, পাকিস্তান, পূর্ব হিমালয়, দক্ষিণ-মধ্য চীন, থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম, পানামা। রক্তকাঞ্চন বহুবর্ষজীবী, পাতাঝরা, দ্রুত বৃদ্ধিসম্পন্ন, বহু শাখাযুক্ত, ঝোপানো আকর্ষণীয় ছোট আকারের বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদ। আট মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। আকর্ষণীয় ফুলের জন্য শোভাময় উদ্ভিদ হিসেবে বাগানে, হেজে বা রাস্তার পাশে লাগানো হয়। বাকল হালকা বাদামি-ধূসর, মসৃণ থেকে সামান্য গোটা গোটা ও আঁশযুক্ত। বয়স্ক গাছের বাকল লম্বালম্বিভাবে ফাটা। পাতার বিন্যাস একান্তর। পাতার দৈর্ঘ্য ৫ থেকে ৯ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার। লতিকার মাঝের খাঁজের গভীরতা পাতার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।

গোড়ার দিক হৃদয়াকার, লতিকার অগ্রভাগ গোলাকার। পাতার উপরিভাগ মসৃণ, চকচকে, রং সবুজ। নিচের পিঠ রোমশ ও রং ফ্যাকাশে সবুজ। প্রধান শিরা ৯ থেকে ১৩টি, নিচের দিক গ্রন্থিময়। হেমন্তের শেষ থেকে শীতের শুরুতে গাছের পাতা ঝরে যায়। শীতের শেষে ঝরা পাতার শাখা থেকে ফুলের কলি বের হয়। কলি লম্বা, নিচের দিক মোটা আগার দিক চিকন। ফুল এককভাবে বা গুচ্ছাকারে থাকে। পাপড়ি বিডিম্বাকার (গোড়ার দিক ক্রমশ চিকন এবং আগার দিক মোটা)। চারটি পাপড়ির রং হালকা এবং মাঝের বড় পাপড়িটির রং ভিন্ন। কেন্দ্রীয় পাপড়ির রং ভিন্ন হওয়ায় শিরাগুলো স্পষ্ট দেখা যায়। এই পাপড়িটি পাশের অপর দুটি পাপড়িকে ঢেকে রাখে। ফলে উপরের তিনটি পাপড়ি একসঙ্গে থাকে এবং নিচের দুটি পাপড়ি আলাদা থাকে। পাপড়ি ম্যাজেন্ডা, লেভেন্ডার, গোলাপি, বেগুনি, নীল ও সাদা রঙের হয়। ফুল হালকা সুগন্ধযুক্ত ও উভলিঙ্গ। প্রজননক্ষম পুংকেশর পাঁচটি ও গর্ভকেশর একটি। সাদা রঙের কাঞ্চনটির সবগুলো পাপড়িই সাদা, তবে কেন্দ্রীয় পাপড়ির মাঝের রং হালকা সবুজাভ সাদা। কাঁচা ফল সবুজ, পাকা ফল শক্ত, রং কালচে-বাদামি। গ্রীষ্মের শেষে ফল পাকে। একটি ফলে ১০ থেকে ১৫টি বীজ থাকে। বীজ চ্যাপ্টা, ফ্যাকাশে বাদামি, গোলাকার বা ডিম্বাকার। বীজ ও কলমের মাধ্যমে বংশবিস্তার।

রক্তকাঞ্চনের কাঠের রং বাদামি। মোটামুটি শক্ত, ভারী ও আকর্ষণীয়। এই কাঠ ঘর-বাড়ি তৈরি, গৃহস্থালি ও কৃষি সরঞ্জাম তৈরির কাজে লাগে। জ্বালানির কাজে লাগে সবচেয়ে বেশি। এর কচি পাতা, ফুল, ফুলের কলি ও ফল শাক হিসেবে খাওয়া হয়।

লেখক : প্রকৃতিবিষয়ক লেখক

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম