Logo
Logo
×

প্রকৃতি ও জীবন

সুশোভন রক্তকাঞ্চন

Icon

মোহাম্মদ নূর আলম গন্ধী

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ফুলপ্রেমী মানুষের কাছে কাঞ্চন ফুল একটি পরিচিত নাম। কাঞ্চন ফুলের কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে- দেবকাঞ্চন, শ্বেতকাঞ্চন ও রক্তকাঞ্চন। ফুলের রং, শোভা আর সৌন্দর্যে সবাই রক্তকাঞ্চনকেই বেশি পছন্দ করেন। তাই কাঞ্চনের মধ্যে রক্তকাঞ্চনই সেরা। কাঞ্চনের জন্মস্থান ভারত ও বাংলাদেশ। ইংরেজি নাম : orchid tree, camel's foot tree, kachnar and mountain-eboû. পরিবার : Caesalpinaceae. উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Bauhinia variegat.

রক্তকাঞ্চন ছোট আকারের কষ্ট সহিষ্ণু গাছ। গাছের কাণ্ড খাট। কাণ্ড ও শাখা-প্রশাখা বেশ শক্ত এবং ছড়ানো। তবে মাঝে মধ্যে বড় আকৃতির গাছও চোখে পড়ে। রক্তকাঞ্চন পত্রঝরা গাছ। শীত মৌসুমে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। ফুল ফোটার সময় গাছ থাকে পত্রশূন্য। এ সময়ে রক্তিম ফুলে ফুলে গাছ ভরে যায়। ফুটন্ত ফুল গাছ সবার নজর কাড়া। ফুল মূলত ঘন মেজেন্টা রঙের। ফুলে কোমল পাঁচটি পাপড়ি থাকে, এর মাঝে একটি পাপড়ি রঙে ব্যতিক্রম, গোড়ার দিকে গাঢ় বেগুনি রঙের কারুকার্য। ফুলের মাঝে কাস্তের মতো বাঁকা পরাগ অবস্থিত। বিস্তৃত শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে এক বা একাধিক ফুল ফুটতে দেখা যায়। শীতের শেষে ফুল ফোটা শুরু হয়ে গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত গাছে ফুল থাকে। তবে মৌসুমের শুরুতে গাছে বেশি সংখ্যক ফুল ফোটে। বসন্তের মাঝামাঝি গাছে নতুন পাতা গজায়। কাঞ্চনের পাতা তার অনন্য বৈশিষ্ট্য। দুটি পাতা জোড়া দিলে দেখতে যেমন, পাতার শেষ প্রান্ত অবিকল সে রকম। ফুল শেষে গাছে ফল হয়, ফলে বীজ থাকে। ফল দেখতে শিমের মতো চ্যাপ্টা। প্রথমে রং সবুজ থাকে, পরিপক্ব হলে কালচে রং ধারণ করে এবং শুকিয়ে গেলে ফেটে বীজগুলো চার পাশে ছড়িয়ে পড়ে। পরিপক্ব বীজের রং কালচে খয়েরি। বীজ ও ডাল কাটিংয়ের মাধ্যমে বংশবিস্তার করা যায়।

রক্তকাঞ্চনের রয়েছে ভেষজ গুণাগুণ। উঁচু ভূমি, রৌদ্র উজ্জ্বল পরিবেশ থেকে হালকা ছায়াযুক্ত স্থান ও প্রায় সব ধরনের মাটিতে রক্তকাঞ্চন জন্মে। আমাদের দেশে কোনো কোনো বসতবাড়িতে বা প্রতিষ্ঠানের বাগানে, বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের আইল্যান্ড, পার্ক, উদ্যান, বন-জঙ্গল ও পাহাড়ি এলাকায় রক্তকাঞ্চন গাছ দেখা যায়।

লেখক : প্রকৃতিবিষয়ক লেখক

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম