ভিসার ধরন না বুঝে কুয়েতে এসে বিপাকে পড়ছেন প্রবাসীরা। কুয়েতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ক্যাটাগরির ভিসা। তার মধ্যে ফ্যামেলি ভিসা, টুরিস্ট ভিসা, মাছনা, মাছুরা ভিসা খাদেম ভিসা (২০ নাম্বার) রিলিজ দিলে এক কুয়েতির ঘর থেকে অন্য কুয়েতির ঘরে ভিসা লাগাতে হয়। অন্য কোথাও ভিসা পরিবর্তন করা যায় না। মাজরা রায় শোন (১৮ নাম্বার) এ ভিসায় খামার অথবা বাগানের নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে কাজ করা অবৈধ। চেকে পড়লে যে কোনো সময় গ্রেফতার করতে পারে স্থানীয় প্রশাসন। আহলি (১৮ নাম্বার) শোন ভিসা কোম্পানির চুক্তির নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার পর অন্য যে কোনো কোম্পানিতে ভিসা লাগাতে পারে প্রচলিত নিয়ম মেনে। তবে বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগ পাওয়ার কারণে বাংলাদেশিদের জন্য সব ধরনের ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। বর্তমানে কুয়েতে সরকারিভাবে আকদ হুকুমা নামে (১৮ নাম্বার) ভিসা চালু রয়েছে। যে ভিসাগুলো কুয়েত সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে প্রদান করছে বিভিন্ন কোম্পানি। এ ভিসায় কাজ হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মী হওয়া, এই কর্মী অন্য কোনো কোম্পানিতে ট্রান্সফারযোগ্য নয়। বেতন কুয়েতি ৬০ দিনার (বাংলা টাকায় প্রায় ১৭ হাজার টাকার মতো) আর রয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা ও কুয়েতের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভিসা। আসার দুই বছর পর যে কোম্পানির মাধ্যমে আসছে সেই কোম্পানির লোকদের টাকা দিয়ে যে সাইটে কাজ করছে সেই সাইট থেকে অন্য সাইটে পরিবর্তন করতে পারে। অথবা এ ধরনের ভিসাগুলো অন্য কোনো কোম্পানি নিয়ে থাকলে সেই কোম্পানিতে একই ধরনের কাজে সেই কোম্পানিতে যেতে পারে বেতন একই, সুযোগ-সুবিধা একই। ভারত, শ্রীলংকা, নেপালি নাগরিকরা শুধু ১ লাখ টাকা খরচ করে ২ বছর মেয়াদি এ ভিসায় আসে। আর কোম্পানির কিছু কর্মকর্তা ও ভিসার দালালরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশির কাছে এ ভিসাগুলো নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধার কথা বলে ৭ লাখ টাকা থেকে ৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে। মানবাধিকার কর্মী কুয়েত প্রবাসী নুর আলম বাশার বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিলে আমাদের বাংলাদেশিরাও এক লাখ টাকায় এই ভিসায় কুয়েতে আসতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে কিছু অর্থলোভী অসাধু ভিসার দালালদের সিন্ডিকেটের কারণে দেশের শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবকরা তাদের ফাঁদে পড়ে না জেনে উচ্চ মূল্যে ভিসা নিয়ে আসার পর আফসোস করে। যাদের পরিচিত লোক আছে তারা হয়তো কেউ কেউ পার্টটাইম জব খুঁজে পাচ্ছে। বেশিরভাগই পাচ্ছে না। যে আকামা সেখানে ছাড়া অন্যত্র কাজ করা কুয়েতি আইনে অবৈধ। আবার কুয়েতে অনেক জায়গায় কাজ থাকলেও বিভিন্ন ক্যাটাগরির আকামা সমস্যা থাকার কারণে কাজে নিতে চায় না কেউ। যার কারণে দালালের লোভনীয় কথা ৭ লাখ ৮ লাখ টাকায় ভিসা নিয়ে এখানে আসার পর বাস্তব পরিস্থিতি হয় হতাশাজনক। এভাবেই মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেক কুয়েত প্রবাসী।