
প্রিন্ট: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৫ এএম

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকা শুল্ক বিভাগের গুদামের লকার থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় শুল্ক বিভাগের কর্মীরাই জড়িত। শুল্ক বিভাগের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেই এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম এবং সিপাহি নিয়ামত হাওলাদার ধাপে ধাপে লকার থেকে প্রায় ৬১ কেজি স্বর্ণ সরিয়েছেন, যার মূল্য প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা। তারা ওই গুদামে বিভিন্ন শিফটে দায়িত্ব পালন করতেন। তবে তারা কীভাবে ও কত দিনে তা সরিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে তাদের আর কেউ সহযোগিতা করেছে কি না, সে বিষয়ে তদন্ত কমিটি কিছু বের করতে পারেনি। গত আগস্টের শেষদিকে গুদাম থেকে স্বর্ণ চুরির বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ৩ সেপ্টেম্বর ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি হয়েছে উল্লেখ করে বিমানবন্দর থানায় মামলা করে শুল্ক বিভাগ। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে শুল্ক বিভাগ একজন অতিরিক্ত কমিশনারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি গত ২ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
সাইফুল ও শহিদুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের আগমনি টার্মিনালের ভেতরে শুল্ক গুদামের লকার থেকে চুরি হওয়া ১ কেজি ৯৬ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করে ডিবি। গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তকালে জানতে পারে কয়েক দফায় লকার থেকে সরানো এসব স্বর্ণ ঢাকার বায়তুল মোকাররম, তাঁতীবাজারসহ বিভিন্ন দোকানে ভাগে ভাগে বিক্রি করা হয়েছে। ডিবি তদন্তকালেই মামলাটি পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে স্থানান্তর করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, নিয়মানুযায়ী প্রতিমাসে একবার করে নিরীক্ষা প্রতিবেদন এনবিআরকে জমা দেওয়ার কথা এবং স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দেওয়ার কথা। এক্ষেত্রে সেটা মানা হয়নি।
কথা হচ্ছে, চোর পালানোর পর কেন বুদ্ধি বাড়বে? বিমানবন্দরের মতো স্পর্শকাতর জায়গার ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরি হওয়া একটি অস্বাভাবিক ঘটনা। এমনিতেই বিমানবন্দরের মতো কেপিআইভুক্ত এলাকায় চোর চক্রের তাণ্ডবে সাধারণত যাত্রীদের ভুগতে হয়। ভেতরের কর্মচারীদের যোগসাজশে ব্যাগ কেটে মালামাল চুরি কিংবা গোটা লাগেজই লোপাট হওয়ার নানা অভিযোগও রয়েছে। তারপরও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা দেখিনি। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং কঠোর বিধানের বিকল্প নেই। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে, এটাই প্রত্যাশা।