চাল নিয়ে কারসাজি: অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কিছুদিন চালের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও বর্তমানে মিলাররা বাজার অস্থিতিশীল করছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা চাহিদা অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করে মজুত করে রাখছেন। পাইকাররা চাল কেনার বেশি চাহিদা দিলেও আড়তদার বা মিলাররা চাল কম বিক্রির নাটক সাজাচ্ছেন। এভাবে কৌশলে বাজারে চালের সরবরাহ সংকটের অজুহাতে দাম বাড়ানো হচ্ছে। জানা যায়, সরকারের গুদামে চালের মজুত পর্যাপ্ত। পাশাপাশি মিল থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে কোনো সংকট নেই। এরপরও বাজারে দাম বাড়ছে। এক মাসের ব্যবধানে মিল পর্যায়ে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। বস্তুত সব নিত্যপণ্যের দামই এখন ঊর্ধ্বমুখী। এতে ভোক্তাদের দুর্ভোগ বাড়ছে। প্রশ্ন হলো, বাজারে যারা কারসাজি করে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করার কথা যাদের, তারা কী করছেন? ২৬ আগস্ট ভারত চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলে বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যায়। ওই সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ফলন ভালো হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ধান-চালের মজুত পর্যাপ্ত রয়েছে; আমদানির দরকার নেই; চালের দাম সহনীয় পর্যায়েই থাকবে। কিন্তু বাস্তবে তা থাকেনি।
ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিছু এলাকায় সেচ সংকট ও পোকামাকড়ের আক্রমণ নিয়ে কৃষক চিন্তিত থাকলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় রোপা আমনের ভালো ফলনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। নতুন ধান বিক্রি শুরু হলেও চালের বাজারে অস্থিরতা চলছে। কয়েক বছর ধরেই এটি লক্ষ করা যাচ্ছে। যেহেতু ধান কাটার মৌসুমেও চালের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে, সেহেতু সিন্ডিকেটের কারসাজির বিষয়ে কোনো সন্দেহই থাকে না। এ চক্রের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বারবার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তা একেবারেই স্পষ্ট নয়। সিন্ডিকেটের কারসাজি বন্ধ না হওয়ায় বোঝা যায়, কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তা যথেষ্ট নয়। অতীতে লক্ষ করা গেছে, দফায় দফায় শুল্ক কমিয়ে বেসরকারি খাতকে চাল আমদানির সুযোগ দেওয়া হলেও ভোক্তারা এর সুফল পায়নি। এ থেকেই স্পষ্ট সিন্ডিকেটের শেকড় কত গভীরে পৌঁছেছে। মানুষকে জিম্মি করে যারা অনৈতিক ব্যবসা করার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। যেভাবেই হোক নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা দূর করতে হবে।