সড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন
কঠোরভাবে প্রতিরোধ করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে সড়ক-মহাসড়কের নৈরাজ্যের বিষয়টি বহুল আলোচিত। সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হওয়ার অন্যতম কারণ ফিটনেসবিহীন যানবাহন। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে সারা দেশে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের সংখ্যা ৫ লাখ ৭১ হাজার ৪৮৪।
এটি যে প্রকৃত সংখ্যা নয়, তা বলাই বাহুল্য। দেশে ফিটনেসবিহীন যানবাহন রয়েছে আরও বেশি। জানা যায়, সড়কে যাতে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল করতে না পারে, সেজন্য নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগের আওতায় গতানুগতিক পদ্ধতির পরিবর্তে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস নবায়ন করা হবে।
এজন্য ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেলে (মিরপুর) ১২ লেনবিশিষ্ট ভেহিক্যাল ইনস্পেকশন সেন্টার স্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। বর্তমানে দুই লেনবিশিষ্ট ভেহিক্যাল ইনস্পেকশনের মাধ্যমে ফিটনেস নবায়ন করা হয়। এর আওতায় শতভাগ ফিটনেস পরীক্ষা সম্ভব হয় না। ১২ লেনবিশিষ্ট ভেহিক্যাল ইনস্পেকশন সেন্টার চালু হলে গাড়ি শতভাগ ফিটনেস পরীক্ষা করা সম্ভব হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
অভিযান অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও সড়ক-মহাসড়কে অনেক ফিটনেসবিহীন যানবান চলাচল করতে দেখা যায়। প্রশ্ন হলো, অভিযান চালানোর পরও সড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল করার সুযোগ পায় কী করে? এক্ষেত্রে অভিযান পরিচালনাকারীরা যাতে দুর্নীতির আশ্রয় নিতে না পারেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
যেসব কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে তা বহুল আলোচিত। বর্তমানে সড়কের নৈরাজ্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, একজন যাত্রী নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রতিমুহূর্তে যাত্রী ও স্বজনদের উৎকণ্ঠায় থাকতে হয়। ফিটনেসবিহীন গাড়ি কোনোভাবেই যাতে সড়কে চলাচল করতে না পারে, সেজন্য কর্তৃপক্ষের কঠোর হওয়ার বিকল্প নেই।
লাইসেন্সবিহীন বা অদক্ষ চালক যাতে সড়কে গাড়ি চালানোর সুযোগ না পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। সড়ককে নিরাপদ করতে হলে সবাইকে সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে হবে। যেসব কারণে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে তাও বহুল আলোচিত। এসব সমস্যার সমাধানে বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হলেও তা যে অরণ্যে রোদনে পর্যবসিত হচ্ছে, দেশে প্রতিদিন ঘটা সড়ক দুর্ঘটনাগুলোই এর বড় প্রমাণ। এসব সমস্যার সমাধানে দুর্নীতি রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। নিরাপদ সড়কের লক্ষ্য অর্জনে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্যও নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।