করোনার নতুন উপধরন শনাক্ত
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দেশে এ পর্যন্ত পাঁচ বছরের বেশি বয়সি প্রায় ৯৬ শতাংশ মানুষ করোনার টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে, বুস্টার ডোজ পেয়েছে ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ। সম্প্রতি শুরু হয়েছে চতুর্থ ডোজ দেওয়া।
সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং বিশেষজ্ঞদের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলে দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে সন্তোষজনক ফল পাওয়া গেছে। সম্প্রতি চীন থেকে বাংলাদেশে আসা এক চীনা নাগরিকের শরীরে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের উপধরন ‘বিএফ-৭’ শনাক্ত হয়েছে।
চীনে গত কয়েক মাসে নতুন করে সংক্রমণ বেড়েছে। জানা গেছে, করোনার এই নতুন ধরনও চীনে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নতুন ধরন ভারতেও শনাক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসের নতুন এ উপধরনের বৈশিষ্ট্য হলো, এটি ওমিক্রনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সংক্রামক।
যেহেতু করোনার নতুন এ উপধরন খুব দ্রুত ছড়ায়, সেহেতু এ থেকে বাঁচতে টিকা নেওয়ার পাশাপাশি যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। জানা গেছে, যারা করোনার টিকা নেয়নি কিংবা অন্তত দুই ডোজ সম্পন্ন করেনি, তাদের এ নতুন উপধরনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যাদের বয়স বেশি এবং যারা বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত, সংক্রমণ এড়াতে তাদের বেশি সতর্ক থাকতে হয়-এটি বহুল আলোচিত হলেও আমাদের দেশে অতীতে অনেকেই তা আমলে নেয়নি। এমন অনীহা বিপজ্জনক হতে পারে। অতীতে লক্ষ করা গেছে, সংক্রমণ কিছুটা কমলেই মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে উদাসীনতা বেড়ে যায়। বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায় সব বয়সি মানুষকে ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে। কাজেই সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নতুন বছরে পুরোদমে শুরু হয়েছে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার্থীরা যাতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ নজর দিতে হবে। যেসব শিশু এখনো টিকা নেয়নি বা এক ডোজ টিকা নিয়েছে, তাদের টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনতে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।
দীর্ঘ সময় দেশে করোনা রোগী কম থাকায় করোনাসংশ্লিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। দেশে নতুন রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে যাতে সফলভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়, সেজন্য চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়ক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও করতে হবে। তা না হলে করোনা রোগী বাড়লে পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলা করা কঠিন হতে পারে। দেশের বিভিন্ন বন্দরে করোনা শনাক্তকরণ কার্যক্রম যাতে সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়, সেজন্য বন্দরগুলোর যন্ত্রপাতি ত্রুটিমুক্ত রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। অতীতে দেখা গেছে, মানুষের উদাসীনতার কারণে সংক্রমণ বেড়েছিল। এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে; পাশাপাশি অন্যকেও এ ব্যাপারে উৎসাহিত করতে হবে।