Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি

প্রকল্পে শৃঙ্খলা রক্ষার পদক্ষেপ নিতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০১:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট এবং ডলার সংকটের সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের নির্মাণ খাতে। অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে নির্মাণসামগ্রীর দাম।

বিশেষ করে রডের দাম আকাশছোঁয়া। ডলারের তীব্র সংকটের কারণে অনেকে এলসি খুলতে পারছেন না। সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা বিরাজ করছে।

পাশাপাশি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ইট, বালু ও সিমেন্টের দাম। জীবনযাত্রার সার্বিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকের মজুরিও এখন দ্বিগুণের কাছাকাছি। এসব কারণে নির্মাণ খরচ বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।

এ পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প ছাড়াও ব্যক্তিপর্যায়েও নির্মাণকাজ একরকম থমকে গেছে। লোকসানের ঝুঁকি থাকায় সরকারি অনেক প্রকল্পে কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদাররা।

কাজ না করার ঘোষণা দেওয়ায় বাধ্য হয়ে সরকারের কোনো কোনো প্রকল্পে দ্বিতীয় দফা দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। জানা গেছে, বেশিরভাগ সরকারি প্রকল্পের কাজ আটকা পড়েছে ধীরগতির ফাঁদে। ঠিকাদাররা বসে আছেন রেট শিডিউল বাড়ানোর অপেক্ষায়।

ইতোমধ্যে বেশকিছু সরকারি সংস্থা রেট শিডিউল পুনর্নির্ধারণ করা সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধির পাগলা ঘোড়ার সঙ্গে ঠিকাদাররা পেরে উঠছেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রায় এক বছর ধরে নির্মাণসামগ্রীর বাজার অস্থির। বাজার স্বাভাবিক হওয়ার লক্ষণ নেই। তবে এবারের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে অন্য বছরের দাম বৃদ্ধির কোনো মিল নেই। প্রায় ছয় মাস ধরে নির্মাণসামগ্রীর বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে, সেটাও ধারণা করা যাচ্ছে না।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে অন্যান্য নির্মাণসামগ্রীর আমদানি খরচ। বস্তুত ইট, বালু, পাথর, রড, সিমেন্ট, রেডি মিক্স, বিটুমিন এবং লোহাজাতীয় সব জিনিসের দাম উপকরণভেদে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। ডলারের তীব্র সংকটের কারণে শতভাগ মার্জিন দিয়েও অনেকে এলসি খুলতে পারছেন না।

বড় অনেক ব্যাংকেও প্রয়োজনীয় ডলার নেই। এই যখন অবস্থা, তখন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুই শতাংশ ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্ল্যাট প্রকল্প নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ডেভেলপাররা। যারা চলমান অস্থিরতার আগে অন্যের জমি নিয়ে ফ্ল্যাট প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি করেছিলেন, তারা পড়েছেন লোকসানের মুখে। অনেকে কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছেন। বাজার স্থিতিশীল হওয়ার নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অনেকে নতুন করে প্রকল্প নেওয়া স্থগিত রেখেছেন।

প্রকল্পের ধীরগতির কারণে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয় তা বহুল আলোচিত। এ অবস্থায় বাজারমূল্য বিবেচনায় নিয়ে সরকারি প্রকল্পের রেট শিডিউল পুনর্নির্ধারণ করা সম্ভব কিনা, তা বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। তবে বিদ্যমান সংকটকে অজুহাত হিসাবে নিয়ে কেউ যাতে প্রকল্পের কাজে গাফিলতি না করে, সে জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে। প্রকল্পের কাজের শৃঙ্খলা যাতে নষ্ট না হয় সেদিকেও কর্তৃপক্ষকে খেয়াল রাখতে হবে।

সৃষ্ট সংকট কোনো কারণে দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হলেও কাজের গতি যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বর্তমান বাস্তবতায় সব খাতের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা রোধে কর্তৃপক্ষকে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম