করোনা ও ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যবিধি চর্চার বিষয়টি ফিরিয়ে আনতে হবে

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

করোনা ও ডেঙ্গি এখন বাড়ছে সমানতালে। দেশে টানা তৃতীয় দিনের মতো ২৪ ঘণ্টায় ছয়শ’র বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার পৌঁছেছে ১৫ শতাংশের কাছাকাছি।
বুধবার ৪ হাজার ৩৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৪১ জন নতুন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে, তবে এদিন করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। এর আগের দিন মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সর্বশেষ গত ২১ জুলাই সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
ওইদিন ৮৮৪ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এদিকে আবহাওয়া ও ঋতু পরিবর্তনজনিত কারণে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী এবং এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
বুধবার ৪৩১ জন ডেঙ্গি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন মারাও গেছেন। এ নিয়ে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর সবচেয়ে বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সেপ্টেম্বরের প্রথম ২১ দিনে। এ সময় ৬ হাজার ২৫৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন।
বলা বাহুল্য, দেশে বর্তমানে যে হারে করোনা ও ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। দেশে করোনার প্রকোপ কমে এসেছিল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে এক ধরনের স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এখন আবার নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ওদিকে ডেঙ্গি নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।
ফলে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিধি কেউ আর মানছেন না। সবকিছুই যেন চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। আমাদের কথা হলো, করোনার প্রকোপ যেহেতু বেড়ে চলেছে, তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি এখন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।
সরকারি নির্দেশের অপেক্ষা না করেই মাস্ক পরতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। ডেঙ্গি প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হলো এডিস মশার বিস্তার ঠেকানো। এডিস মশার জন্ম হয় যেসব জায়গায়, সেসব জায়গা নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে যেমন, তেমনি দায়িত্ব রয়েছে সিটি করপোরেশনের।
মশারি ব্যবহার করে এডিস মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। আমরা আশা করব, দুই প্রাণঘাতী রোগের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার লক্ষ্যে নাগরিক সমাজ সচেতনতার সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে।