
প্রিন্ট: ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪০ এএম

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২২, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
সরকারি প্রতিষ্ঠানে কেনাকাটায় দুর্নীতির বিষয়টি বহুল আলোচিত। এবার দেশের ১২ সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য ব্যয়বহুল ‘উইড হারভেস্টার’ ক্রয়ের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি ‘উইড হারভেস্টার’ ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে যন্ত্রগুলো দেশে এসে পৌঁছেছে। বর্তমানে যেখানে সর্বক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তখন দেশে এত ব্যয়বহুল যন্ত্র ক্রয় করা কতটা যৌক্তিক? ইতোমধ্যে এসব যন্ত্রের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মান যাচাই-বাছাইয়ে গঠিত কারিগরি কমিটি বলেছে, পরীক্ষায় স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী যন্ত্রগুলোর সক্ষমতার প্রমাণ মেলেনি। এজন্য সরবরাহকৃত যন্ত্রগুলো না নেওয়ার সুপারিশ করেছে কারিগরি কমিটি। প্রথম কারিগরি কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন না করে গত মাসে নতুন করে কারিগরি কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যন্ত্রগুলো গ্রহণ করাতে তোড়জোড় শুরু করছে। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন কমিটির সদস্যদের চাপ প্রয়োগ বা ম্যানেজ করে নিম্নমানের যন্ত্রগুলো গ্রহণ করানোর পদক্ষেপ নিতে পারে তারা।
সিটি করপোরেশন এলাকায় এ ধরনের যন্ত্রের ব্যবহারে কী সুফল পাওয়া যায়, তা পর্যবেক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে একটি বা দুটি যন্ত্র ক্রয় করা যুক্তিসংগত ছিল। এসব যন্ত্রের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হলে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠত না। সরকারি তহবিলের অর্থ খরচের আগে কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সরবরাহকৃত যন্ত্রগুলো যে জার্মানি থেকে আমদানিকৃত, তার সমর্থনে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কারিগরি কমিটিকে সনদ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যন্ত্রগুলো ‘মানসম্মত’ বলে চালিয়ে দিতে নানারকম কৌশল অবলম্বন করতে পারে। সেদিকেও কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে। আমরা আশা করব, নতুন কমিটির সদস্যরা সব ধরনের চাপ বা বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালন করবেন।
উইড হারভেস্টার জলাশয় ও সমতলের আগাছা কাটতে ব্যবহৃত হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় এ মেশিনের প্রয়োজন নেই, সেটি মৌখিকভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানিয়েছেন একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। কাজেই অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় এ মেশিনের প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা তা এখনই যাচাই করা দরকার। নিম্নমানের কোনো যন্ত্র ক্রয় করে যাতে কোনো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা দেশের সম্পদের অপচয় করতে না পারে, সেদিকে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সব ধরনের সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।