
প্রিন্ট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৬ এএম
ঘাতক রূপে ময়লার গাড়ি, সিটি করপোরেশনে নেতৃত্ব বলে কিছু আছে কি?

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২২, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় অথবা চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে প্রাণহানির ঘটনা কি চলতেই থাকবে?
বুধবার মিরপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন।
ওইদিন বেলা সাড়ে ৩টায় মিরপুর ১৪ নম্বর স্টাফ কলেজের সামনে ঘটেছে এ দুর্ঘটনা। মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী ছিলেন, তাদের মধ্যে একজন নিহত হয়েছেন, বাকি দুজনের একজন হয়েছেন আহত। ঘটনার পর সিটি করপোরেশনের গাড়িটি ও এর চালককে আটক করেছে কাফরুল থানা পুলিশ।
স্মরণ করা যেতে পারে, গত বছর দুই সিটি করপোরেশনের দুই ময়লার গাড়ির চাপায় ঘটেছিল দুটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। প্রথমটিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় প্রাণ হারিয়েছিলেন নটর ডেম কলেজের এক ছাত্র।
দ্বিতীয়টিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির বেপরোয়া গতি কেড়ে নিয়েছিল এক ব্যবসায়ীর প্রাণ। প্রথম দুর্ঘটনায় ময়লার গাড়িটি চালাচ্ছিলেন এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী আর দ্বিতীয়টিতে একজন বহিরাগত। তখন প্রশ্ন উঠেছিল, গাড়ি দুটি যাদের চালানোর কথা, তারা কেন চালাচ্ছিলেন না?
আরও কথা উঠেছিল, সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি চলাচল করার কথা রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত, অথচ আলোচ্য গাড়ি দুটি চলছিল দিনের বেলায়। উল্লেখ্য, গত বুধবারের দুর্ঘটনাটিও ঘটেছে দিনের বেলায়। আমরা দুই সিটি করপোরেশনের কর্তৃপক্ষের কাছে এই অনিয়মের স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করছি।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। এখানকার গাড়ি চালকরা যার যেমন খুশি তেমনভাবেই গাড়ি চালিয়ে থাকেন। এতে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। কারণ, এ গাড়িগুলো আইনের ঊর্ধ্বে-এমনটাই ভাবেন চালকরা।
বস্তুত বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ময়লার গাড়ি চালকদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়ির সংখ্যা ৫১৩, অথচ নিবন্ধিত চালক রয়েছেন মাত্র ১৪৭ জন, বাকি গাড়িগুলো চালিয়ে থাকেন অনিবন্ধিত অদক্ষ চালকরা, যে কারণে একের পর এক ঘটে চলেছে দুর্ঘটনা। আমরা সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির অদক্ষ চালকের বিষয়টি আর শুনতে চাই না।
বুধবারের দুর্ঘটনার পর সিটি করপোরেশনদ্বয়ের কর্তৃপক্ষ, বিশেষত দুই মেয়র সম্বিৎ ফিরে পাবেন বলেই আমরা আশা করতে পারি। ময়লার গাড়ি চলবে দক্ষ চালক দ্বারা এবং তা ধীরগতিতে। আর দিনের বেলায় এই গাড়ি রাস্তায় নামানোর কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এরপর ময়লার গাড়ির ধাক্কায় কিংবা চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে কেউ নিহত হলে তার দায় নিতে হবে দুই মেয়রকে।