Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সংকট

পর্যাপ্ত খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করুন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২১ মে ২০২২, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সংকট

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হতেই উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জে বন্যা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সিলেট অঞ্চলের বন্যাকবলিত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। দুর্গত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে ত্রাণের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে। সরকারিভাবে ত্রাণ দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বন্যাকবলিত এলাকায় শুকনা খাবারের পাশাপাশি পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট, ওরস্যালাইন প্রভৃতি প্রাণরক্ষা-সহায়ক উপাদানের পর্যাপ্ত সরবরাহ যতদিন প্রয়োজন অব্যাহত রাখা উচিত। সরকারি ত্রাণ তৎপরতার পাশাপাশি প্রয়োজন বেসরকারি উদ্যোগও। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ পাঠানো এবং তাদের পুনর্বাসনের বিকল্প নেই। এমনিতেই করোনার কারণে বহু মানুষের আয়-রোজগারের পথ হয়ে গেছে বন্ধ, তার ওপর বন্যার কারণে অনেকের বাসস্থান, কৃষিক্ষেত্র, মাছের ঘের ও গবাদি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের পাশাপাশি এনজিওগুলোরও উচিত দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো। জানা যায়, বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে ঝুঁকি নিয়েই অনেকে দূষিত পানি পান করছেন। এতে পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা রয়েছে। অনেক এলাকার নলকূপ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় শৌচাগার সমস্যায় মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন অনেকে। কাজ না থাকায় কষ্টে আছেন দিনমজুররা।

এবার বন্যার পূর্বাভাস না পাওয়ায় এ অঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় মানুষের ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগ বেড়েছে। এ অবস্থায় দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। ত্রাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনোরকম অনিয়ম না ঘটে, সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে যখন দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি উজানেও টানা কয়েকদিন বৃষ্টিপাত হচ্ছিল, তখনই যদি বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া হতো, তাহলে এ অঞ্চলের মানুষকে এতটা দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর মানুষের হাত নেই। তবে অপরিকল্পিত নগরায়ণ, বৃক্ষনিধন, নদীর নাব্য সংকট, মানসম্মত বাঁধের অভাব, জলাশয়, খাল, নদী ভরাট করে ফেলা-এসব কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা বাড়ছে। মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে। সামনে বর্ষাকাল। বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে যাতে মানুষের দুর্ভোগ না বাড়ে, সেজন্য এখনই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। জানা যায়, বন্যাকবলিত অঞ্চলের কোনো কোনো এলাকায় হাসপাতালের নিচতলায়ও পানি প্রবেশ করেছে। এটি বিবেচনায় নিয়ে সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বন্যাপরবর্তী পুনর্বাসন কর্মকাণ্ডে যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে, সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্গতদের কৃষিকাজে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা দরকার। গত কয়েক দশকে দেশে প্রচুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তৈরি হয়েছে। তবে বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ সাফল্যের পরিচয় দিতে পারছে না-এটি এক বড় সমস্যা। সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব এবং অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করতে না পারাই এর মূল কারণ। দেশে প্রতিবছরই কমবেশি বন্যা দেখা দেয়। তাই এ বিষয়ে আমাদের পূর্বপ্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম