Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ

তদন্তসাপেক্ষে দোষীর বিচার করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ

আবারও পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এবারের ঘটনাস্থল লালমনিরহাট সদর। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের হাতে আটকের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রবিউল ইসলাম খান নামের এক যুবকের মৃত্যু ঘটে। রবিউলের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এসেছে। লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম বলেছেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে লালমনিরহাট সদর উপজেলার একটি ইউনিয়নে জুয়ার আসর বসেছিল। এ খবর পেয়ে সেখানে অভিযানে যায় এসআই হালিমুর রহমানের নেতৃত্বে সদর থানার একটি দল। পুলিশ ধাওয়া করে রবিউলসহ দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার পথে গাড়িতেই রবিউল অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু ঘটে। ওদিকে প্রত্যক্ষদর্শী ও রবিউলের স্বজনরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, রবিউল জুয়ার আসরে ছিলেন না। পুলিশের উপস্থিতিতে সবাই পালিয়ে গেলেও রবিউল রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাকে আটক করে পুলিশ। তিনি জুয়া খেলায় জড়িত নন দাবি করে পুলিশ ভ্যানে উঠতে আপত্তি জানালে তাকে লাথি মেরে ও মারধর করে ভ্যানে তোলা হয়। এতে রবিউল জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রবিউলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়কে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয়রা। এতে আটকা পড়ে অসংখ্য যানবাহন। বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের একটি ভ্যানেও ভাঙচুর চালায়। এসব ঘটনায় সদর থানার ওসি ও স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান দোষী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিযুক্ত এসআই হালিমুরকে প্রত্যাহারসহ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।

রবিউলের মৃত্যুর ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে যা-ই বলা হোক না কেন, এটাই সত্য যে, তার মৃত্যু ঘটেছে পুলিশি হেফাজতে থাকার সময়। তাকে মারধর করা হয়েছিল কিনা এবং তা করা হয়ে থাকলে তার মাত্রা কত, এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর। তবে সামগ্রিকভাবে পুলিশের আচরণ বিবেচনায় নিলে এটা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, রবিউল পুলিশের মারধরের শিকার হয়েছেন। ময়নাতদন্তে এটা প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা যথেষ্ট শাস্তি নয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, অভিযুক্ত আসামিকে মারধর করা পুলিশের এক সাধারণ প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। আইনবিরুদ্ধ এ প্রবণতা থেকে পুলিশকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা রবিউলের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করছি।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম