Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব, সংশোধিত বিধিমালার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব, সংশোধিত বিধিমালার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে

অবশেষে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিষয়টি আইনে রূপ পেতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালের আচরণ বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ‘সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-২০২২’ শিরোনামের খসড়া চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

বিধিমালাটি করা হচ্ছে সরকারি চাকরি আইনের অধীনে। জানা গেছে, বিধিমালাটি বলবৎ হলে সম্পত্তির হিসাব না দেওয়ার পক্ষে কোনো অজুহাতই দাঁড় করাতে পারবেন না সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রতিবছর আয়কর বিবরণী জমা দিলেও সরকারের নির্ধারিত দপ্তরে সম্পদের হিসাব দিতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে।

সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার এ উদ্যোগটি যে ভালো তাতে কোনো সন্দেহ নেই। জনপ্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধিমালাটি ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ থাকায় তা সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। এবার বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে আইনে রূপ পেলে তা একটি ভালো পদক্ষেপ বলে বিবেচিত হবে।

জানা গেছে, বিধিমালার খসড়া শিগগির সচিব কমিটিতে পাঠানো হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।

সম্পদের হিসাব দাখিলের ব্যবস্থা বিশ্বের প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত ও শ্রীলংকায় অনেক আগেই এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সেসব দেশে সম্পদের হিসাব দাখিল বাধ্যতামূলক। অথচ আমাদের দেশে এ সক্রান্ত একটি বিধিমালা ছাড়া সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সম্পদের হিসাব দাখিলের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি নির্দেশনা রয়েছে।

তবে এ নির্দেশনা পালনে তাদের মাঝে রয়েছে অনীহা। এর অন্যতম কারণ বিধিমালায় বর্ণিত কতিপয় শর্ত, যে কারণে তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, বিদ্যমান বিধিমালা অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর সম্পদের হিসাব বলতে শুধু একজনের নয়, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর পরিবার ও তার ওপর নির্ভরশীল সবার হিসাব দেওয়া বাধ্যতামূলক। মূল সমস্যাটি এখানেই।

কারণ এ ক্ষেত্রে সম্পদের হিসাব নিতে হবে বিপুলসংখ্যক মানুষের। এ সক্ষমতা সরকারের আছে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান বিধিমালার সংশোধন বা নতুন একটি আইন করা জরুরি হয়ে উঠেছিল। এবার সেটা হচ্ছে। তাছাড়া এ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আজ পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নজির না থাকায় কর্মচারীদের মধ্যে এ নির্দেশনা অমান্য করার প্রবণতা রয়েছে।

কাজেই আমরা মনে করি, আইন বা বিধিমালা থাকাই যথেষ্ট নয়, এর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আইন বা বিধিমালাটি সঠিকভাবে বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না। তাই আমরা আশা করব, সংশোধিত বিধিমালাটি বলবৎ হওয়ার পর এদিকটিতেও দৃষ্টি দেবেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিধিমালা সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব প্রদানের ক্ষেত্রে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখবে, এটাই কাম্য।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম