Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ইউক্রেন সংকটের সম্ভাব্য প্রভাব, বাজারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২২, ০১:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ইউক্রেন সংকটের সম্ভাব্য প্রভাব, বাজারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে ইতোমধ্যেই জনমনে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।

কারণ জ্বালানি তেলের দামের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে পণ্য ও সেবার মূল্য। আমদানি-রফতানি পণ্যের দামেও এর প্রভাব পড়ে। গত বছর নভেম্বরে দেশে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা করে বাড়ানোর পর দ্রব্যমূল্য ও পরিবহণ ভাড়া বাড়ানো হয়।

এছাড়া অন্যান্য সেবা খাতেও পড়ে এর প্রভাব। বর্তমানে ইউক্রেন সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তেল-গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থায়। ফলে ২০১৪ সালের পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে।

বুধবার প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ছিল ১১৩ ডলার। জ্বালানি তেলের বাজারের এ অস্থিরতা কোথায় গিয়ে ঠেকবে, তা কেউ জানে না। উল্লেখ্য, রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। শুধু তেল নয়, ইউক্রেন ও রাশিয়া বিশ্বের বৃহৎ গম উৎপাদনকারী দেশও বটে।

ফলে এ সংকটে বিশ্বে খাদ্য সরবরাহও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। ইতোমধ্যেই বিশ্ববাজারে গমের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সব মিলে আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে এসবের সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণ করতে হবে এখনই।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে এমন এক সময়ে, যখন আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে বিরাজ করছে অস্থিরতা। বেশ কয়েক মাস ধরে ক্রমেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল ইত্যাদি পণ্যের দামবৃদ্ধি এর একটি কারণ হলেও একমাত্র কারণ নয়।

দেখা যাচ্ছে, দেশের প্রধান খাদ্যশস্য চালের ভরা মৌসুমেও, এমনকি দাম সহনীয় রাখতে চাল আমদানি করার পরও বাজারে এর দাম ঊর্ধ্বমুখী। বস্তুত বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দামই ঊর্ধ্বমুখী, যার পেছনে যৌক্তিক কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সংকট সৃষ্টি করে অনেক পণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে।

কিন্তু এসব সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আমরা মনে করি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাব্য প্রভাবের কথা মাথায় রেখে বাজার নজরদারির ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এ দেশে বিভিন্ন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে থাকে।

আবার সাধারণ মানুষও দামবৃদ্ধির আশঙ্কায় আগেভাগে বেশি পরিমাণে পণ্য কিনে মজুত করে। এর ফলেও বাজারে সৃষ্টি হয় সংকট। কাজেই মানুষকেও এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

দেশে ক্রমাগত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। এ অবস্থায় বাজার প্রশ্নে উদাসীন থাকার সুযোগ নেই। বস্তুত বিশ্বে জ্বালানি সংকট তীব্র হলে এর প্রভাব শুধু অভ্যন্তরীণ বাজারে নয়, সার্বিক অর্থনীতিতেই পড়বে। তাই সরকারের নীতিনির্ধারকদের উচিত জ্বালানির মজুত বৃদ্ধির পাশাপাশি নিজেদের জ্বালানি উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হওয়া।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম