Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পাটুরিয়ায় ফেরিডুবি, মেরামত ছাড়াই চলছিল কীভাবে?

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পাটুরিয়ায় ফেরিডুবি, মেরামত ছাড়াই চলছিল কীভাবে?

‘ঘাটে এসে ডুবল তরী’ বলে যে প্রবাদটি চালু আছে, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া শাহ আমানত ফেরির ক্ষেত্রে তা শতভাগ প্রযোজ্য।

উল্লেখ্য, ফেরিটি বুধবার সকালে ১৭টি ট্রাক ও বেশকিছু মোটরসাইকেল নিয়ে দৌলতদিয়া থেকে আসার পর পাটুরিয়া ৫নং ঘাটে এসে ডুবে যায়। দেশে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের নৌযান ডুবির ঘটনা ঘটলেও যানবাহন বহনকারী ফেরিডুবির ঘটনা এটাই প্রথম।

জানা যায়, ফেরিটি যখন দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে এসে মাঝ নদীতে পৌঁছায়, তখন সামনের দিকের একটি ছিদ্র দিয়ে এতে পানি উঠতে শুরু করে। শাহ আমানতের মাস্টার তখন ইঞ্জিনের গতি বাড়িয়ে দিয়ে দ্রুত ফেরিটিকে পাটুরিয়া ঘাটে নিয়ে আসেন।

ঘাটে পন্টুনের সঙ্গে রশি না বাঁধতেই ফেরির ডালা নামিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় দুটি ট্রাক ফেরি থেকে নামতে সক্ষম হয়। আরেকটি ট্রাক অর্ধেক নামার পরপরই ফেরি কাত হয়ে ডুবে যায়।

এ সম্পাদকীয় লেখার সময় পর্যন্ত ১০টি ট্রাক ও দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানি বা কারও নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি-এটুকুই স্বস্তির বিষয়।

আর উদ্বেগের বিষয় হলো, আমানত শাহ ফেরিটি ৪২ বছরের পুরোনো। ফলে এর আয়ুষ্কাল আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আইন অনুযায়ী ৪০ বছরের বেশি বয়সি নৌযানের ফিটনেস সনদ দেওয়া হয় না। ফলে আমানত শাহ ফেরিটি চলছিল ফিটনেসহীনভাবে, জোড়াতালি দিয়ে।

এর তলদেশে ছিদ্র দেখা দিলেও তা মেরামত না করেই মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে ফেরিটি চালু রাখা হয়েছিল। এতে সংশ্লিষ্টদের চরম উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতারই প্রমাণ মেলে। বুধবার ফেরিডুবির ঘটনার পর দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা যায়।

প্রশ্ন হলো, এসব তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আদৌ আলোর মুখ দেখবে কি? অথবা রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি হবে কি? অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, নৌ দুর্ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির নজির খুবই কম। তাই আমরা জোরের সঙ্গে বলতে চাই, যাদের গাফিলতির কারণে এ ফেরিডুবির ঘটনা ঘটেছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

তবে শুধু এই একটি ফেরি নয়, দেশের নৌপথে চলাচলকারী বেশিরভাগ ফেরিই পুরোনো, যেগুলোর মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে, চলছে জোড়াতালি দিয়ে। এসব ফেরি ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলতে দেওয়া মোটেই সমীচীন নয়। বস্তুত গোটা ফেরি চলাচল ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা উচিত বলে মনে করি আমরা।

সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। অথচ ফেরিব্যবস্থা রয়ে গেছে ‘মান্ধাতার আমলের’- এমনটি চলতে পারে না। নৌ কর্তৃপক্ষ এ দিকটিতে জরুরিভাবে দৃষ্টি দেবে, এটাই কাম্য।

 

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম