অবহেলিত চার বিমানবন্দর
অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিকল্প নেই

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশাল বিমানবন্দর
বরিশাল, কুমিল্লা, ঠাকুরগাঁও ও খুলনায় বিমানবন্দর থাকার পরও সেগুলো পুরোপুরি সচল না থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম রূপে পাকিস্তান আমলে এয়ার স্ট্রিপ হিসাবে বরিশাল বিমানবন্দরের যাত্রা শুরুর পর প্রায় ৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও একই জায়গায় পড়ে আছে বিমানবন্দরটি। দৈনিক ৭-৮টি ফ্লাইট চলাচল করলেও বিমানবন্দরটি আধুনিকীকরণের কাজ রহস্যজনক কারণে থমকে আছে। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরটি দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। বিমানবন্দরটি চালু হলে সেখানকার ১৩ উপজেলার মানুষ বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পাবেন। সর্বোপরি এ অঞ্চলে বিনিয়োগে উৎসাহী হবেন ব্যবসায়ীরা।
প্রতিদিন দেশ-বিদেশের কমপক্ষে ৪০টি এয়ারবাস কুমিল্লা বিমানবন্দরের সিগন্যাল ব্যবহার করার সুবাদে এ থেকে মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আয় হলেও সেখানে কোনো বিমান ওঠানামা না করার বিষয়টি বোধগম্য নয়। বিভাগ না হলেও কুমিল্লায় বিভাগীয় সব দপ্তরই রয়েছে। তাছাড়া বর্তমানে কুমিল্লা শীর্ষ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী জেলা হওয়ায় বিমানবন্দরটি চালু হলে তা লাভজনক হবে। দেখা যাচ্ছে, প্রায় দুই যুগেও পূর্ণতা পায়নি বাগেরহাটের খানজাহান আলী বিমানবন্দরও। সেখানে বিমানবন্দর হলে মোংলা পোর্টের আয় ও সুন্দরবনে পর্যটক সমাগম বৃদ্ধির পাশাপাশি এ অঞ্চলে শিল্প-কারখানা স্থাপনে অনেকে আগ্রহী হবেন।
আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা বিনিয়োগ তথা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। এক্ষেত্রে বিমান যোগাযোগ অন্যতম। দেখা যাচ্ছে-বরিশাল, কুমিল্লা, ঠাকুরগাঁও ও খুলনায় বিমানবন্দর থাকলেও এর কোনোটি পরিত্যক্ত, আবার কোনোটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এগুলো সচল হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ার পাশাপাশি মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহণ সহজ হবে। উচ্চ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পূর্বশর্ত হচ্ছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন যত ঘটবে, প্রবৃদ্ধিও তত বাড়বে। পরিতাপের বিষয় হলো, দেশের অবকাঠামোগত অবস্থা এখন পর্যন্ত কাক্সিক্ষত মানে উন্নীত করা যায়নি। এ অবস্থায় শুধু বিমানবন্দর নয়; সড়ক, রেল, সমুদ্রবন্দর এবং অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতিও নজর দেওয়া উচিত। পঞ্চাশের দশকে মাথাপিছু গড় আয়ের দিক থেকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কোরিয়া ও তাইওয়ানের তুলনায় বাংলাদেশ খুব একটা পিছিয়ে ছিল না। কিন্তু এসব দেশ বর্তমানে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করে তথা অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটিয়ে প্রভূত উন্নয়ন করেছে। আমাদেরও সেই পথ অনুসরণ করা উচিত বলে মনে করি।