জটিলতায় টিকাদান কার্যক্রম: পরিকল্পনার অভাব ও সমন্বয়হীনতাই দায়ী

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২১, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম আবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে, দেখা দিয়েছে জটিলতা। বৃহস্পতিবার মহানগরগুলোয় মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কথা ছিল; কিন্তু অধিকাংশ কেন্দ্র থেকে আগ্রহীদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। অর্থাৎ মডার্নার টিকা দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ওদিকে প্রথম ডোজ দেওয়ার মতো অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ফাইজারের টিকাও নেই।
এ তো গেল টিকার মজুতের কথা। ৭ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত গণটিকা কার্যক্রম ছিল অসঙ্গতিপূর্ণ, ত্রুটিপূর্ণ। মজুত নিশ্চিত না করেই সবাইকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। ফলে যারা টিকা নিতে গিয়েছেন, তাদের অধিকাংশই টিকা ছাড়াই ফিরে এসেছেন। আবার যে কোনো উপায়ে প্রথম ডোজ যারা পেয়েছেন, তারা কবে নাগাদ দ্বিতীয় ডোজ পাবেন, এ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।
এ ছাড়া যেসব নাগরিক এখন পর্যন্ত কোনো ডোজই পাননি, তারা কবে নাগাদ পাবেন তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। ১৪ আগস্ট অর্থাৎ আজ থেকে আবার গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এ কর্মসূচি চলবে কিনা, তা নিশ্চিত নয়, টিকার পর্যাপ্ততার ওপর পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আহমেদ পারভেজ জাবীন বলেছেন, সম্প্রতি পরিচালিত গণটিকা ক্যাম্পেইনে সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে। একটি কমিটি গঠন করে এসবের তদন্ত করা উচিত। এ কর্মসূচিতে পরিকল্পনায় গলদ ছিল, নাকি অন্য কোনো কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তা প্রকাশ করা উচিত। তা না হলে এ ধরনের জটিলতা বাড়তেই থাকবে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। ভারতের অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা যখন প্রথম এসেছিল, সেই টিকা প্রদান কার্যক্রম সফলভাবেই পরিচালিত হয়েছিল। কিন্তু এখন দেশে চার ধরনের টিকা দেওয়ার কার্যক্রম চললেও টিকাদান কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে নানা জটিলতা।
এটা ঠিক, কতসংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব, তা নির্ভর করে টিকাপ্রাপ্তির সংখ্যার ওপর। আমরা মনে করি, টিকার মজুত যা-ই হোক না কেন, সেগুলো শৃঙ্খলার সঙ্গেই প্রয়োগ করা উচিত। কেন্দ্র থেকে টিকা প্রত্যাশীদের ফেরত যাওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। সঠিক পরিকল্পনা ও সমন্বয় থাকলে টিকা প্রদান কার্যক্রম শৃঙ্খলার সঙ্গেই পরিচালনা করা যায় বলে আমাদের বিশ্বাস।
দ্বিতীয়ত, দেশে টিকা প্রদানযোগ্য মানুষের সংখ্যা ১৩-১৪ কোটি হওয়ায় টিকাপ্রাপ্তির বিষয়টিকে নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। বিভিন্ন দেশ থেকে টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হলে টিকা কূটনীতি সফলভাবে পরিচালনা করতে হবে।