
প্রিন্ট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৫ পিএম
করোনা উপসর্গে মৃত্যু: গ্রামাঞ্চলে নমুনা পরীক্ষার সুযোগ তৈরি করতে হবে

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২১, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
দেশে দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে করোনা পরিস্থিতি। প্রতিদিন করোনা রোগীর মৃত্যু ও নতুন শনাক্তের যেসব তথ্য আমরা পাই, এর বাইরেও এ বিষয়ক আরও তথ্য রয়েছে। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, করোনা উপসর্গ নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় কয়েকটি জেলায় ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা উপসর্গ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।
অনুমান করা যায়, এসব মানুষের সিংহভাগই ছিলেন করোনার রোগী। গত কিছুদিন ধরে সারা দেশেই, বিশেষত গ্রামাঞ্চলে জ্বরের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ নিয়ে স্বজনসহ সংশ্লিষ্টরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেও জ্বরে আক্রান্তদের কতজন করোনা পজিটিভ, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। রাজধানী ও বিভিন্ন বড় শহরের বাইরে করোনার নমুনা পরীক্ষার সুযোগ সীমিত। প্রাথমিক পর্যায়ে চিহ্নিত না হওয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক করোনা রোগীকে জটিল অবস্থায় রাজধানীসহ বিভিন্ন বড় শহরে চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে।
বস্তুত সচেতনতার অভাবে গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষ করোনাসহ বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা যথাসময়ে করাতে চায় না। নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা শহরে গিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানোর সামর্থ্যও অনেকের নেই। এছাড়া সামর্থ্য ও ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা শহরে স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন পরীক্ষার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় অনেক জটিল রোগীর রোগ চিহ্নিত হয় বেশ দেরিতে। করোনা রোগীর ক্ষেত্রেও একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে।
এ ধরনের নানা কারণে দেশে করোনায় আক্রান্ত অনেক রোগীর অবস্থা জটিল আকার ধারণ করছে। জটিল করোনা রোগীর অক্সিজেন ও আইসিইউ বেড প্রয়োজন হয়। কাজেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও যাতে এমন জটিল রোগী প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পেতে পারেন সেজন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
বর্তমানে ঘরে বসেই যে কোনো ব্যক্তি নিজের দেহের অক্সিজেনের মাত্রা নিরূপণ করতে পারেন। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কোন পর্যায়ে পৌঁছালে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে, তাও অনেকেই জানেন। সময়মতো অক্সিজেনের মাত্রা নিরূপণ করা গেলে এবং জটিল রোগীকে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হলে অনেক ক্ষেত্রেই দ্রুত সুফল পাওয়া যায়।
করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অতি সংক্রামক। তবে মানুষ সচেতন হলে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানলে এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এর বিপরীতে মানুষ সচেতন না হলে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানলে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ও হাসপাতালের বেড যতই বাড়ানো হোক, পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হতে পারে।