Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ঋণ অবলোপনের আদায়ে হতাশা

ট্রাইব্যুনাল গঠন করা ছাড়া গত্যন্তর নেই

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঋণ অবলোপনের আদায়ে হতাশা

সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে ঋণ অবলোপনের আদায় খুবই নাজুক। বিপুল অঙ্কের টাকা অবলোপন করা হয়েছে, কিন্তু তা থেকে আদায় হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ০৫ শতাংশ। অর্থাৎ মোট অবলোপন স্থিতি ৪৪ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা থেকে ৯৯ শতাংশ ঋণই আদায় হয়নি। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৮২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে ব্যাংকগুলো। যা ২০১৯ সালের একই সময়ে ছিল মাত্র ৯৫৭ কোটি টাকা। এই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে নতুন করে ঋণ অবলোপন বেড়েছে ২ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ অবলোপনই বেসরকারি ব্যাংকের।

বলা ভালো, ব্যাংক ঋণ অবলোপন মানে ঋণের টাকা মাফ করে দেওয়া নয়। বড়জোর সুদের পরিমাণ কমানো যেতে পারে। এই যে বিপুল পরিমাণ ঋণ অবলোপনের টাকা অনাদায়ী থেকে যাচ্ছে, এর প্রতিকার কী? বলা বাহুল্য, প্রভাবশালীদের খেলাপি ঋণই অবলোপন হচ্ছে বেশি। বিশেষ করে ব্যাংকের পরিচালকদের যোগসাজশের ঋণ সাধারণত আদায় হয় না। এসব ঋণই অবলোপনে গুরুত্ব পায়। বিআইবিএমের সাবেক মহাপরিচালক ড. মইনুল ইসলাম বলেছেন, বড় ও ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ঋণ অবলোপনের টাকা আদায় হবে না। তার এ কথায় সারবত্তা রয়েছে। শুধু নিয়মিত নয়, ২০ থেকে ২৫ বছরের পুরোনো মামলাও ঝুলে আছে অর্থঋণ আদালতে।

এই ঝুলে থাকার পেছনে কাজ করছে বিপুল অঙ্কের টাকা ও প্রভাবশালীদের খুঁটির জোর। অর্থঋণ আদালতে যেহেতু মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হচ্ছে না, তাই প্রস্তাব এসেছে মন্দ ঋণ আদায়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করার। এ ধরনের ট্রাইবুন্যাল গঠন করে প্রতিটি ব্যাংকের শীর্ষ ১০ ঋণখেলাপির বিচার করা গেলে খারাপ ঋণ আদায় করার বিষয়টি সহজ হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, সরকারের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ গ্রহণের কোনো তাড়া লক্ষ করা যাচ্ছে না। বরং ঋণখেলাপিদের একের পর এক সুবিধা দিতে দেখা গেছে।

খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি অর্থনীতির এক দুষ্ট ক্ষত। অর্থনীতির পর্যবেক্ষকদের চোখে ধরা পড়েছে, খেলাপি ঋণের একটি বড় অংশই ইচ্ছাকৃত। একইসঙ্গে এই খেলাপিদের অধিকাংশই সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের ঋণের টাকা আদায় হয় না এবং একটা সময়ে তা মন্দ ঋণের তালিকায় চলে যায়। এই ঋণ আদায় করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের যে প্রস্তাব করা হচ্ছে, আমরা তার প্রতি সমর্থন জানাই। বস্তুত ঋণখেলাপিদের শাস্তির উদাহরণ তৈরি না হলে অবলোপনের টাকা ফেরত আসবে না।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম