Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

এ কি সেই আমেরিকা!

Icon

নওরোজ আহমেদ

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এ কি সেই আমেরিকা!

অবশেষে জো বাইডেনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু এ নিয়ে কী তুলকালাম কাণ্ডটাই না ঘটল। আসলে যে ভয়টা ছিল, সেটাই সত্য হল।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে অশান্ত হয়ে উঠল যুক্তরাষ্ট্র। ইলেকটোরাল কলেজের ফলাফল নিয়ে বৈঠকে বসেছিল প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট। সেখানেই সব দিক বিচার করে ঠিক হয়, নির্বাচনে ট্রাম্প পরাজিত এবং জো বাইডেনই প্রেসিডেন্ট হবেন।

এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মার্কিন কংগ্রেসের ক্যাপিটল হাউজের পরিস্থিতি। সেখানে হামলা চালান ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। কয়েক হাজার সমর্থক ট্রাম্পের সমর্থনে স্লোগান দিয়ে ক্যাপিটল ভবনে জোর করে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ক্যাপিটল ভবন চত্বর। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশের।

বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা চত্বর। ক্যাপিটল ভবনের ভেতর পুলিশের গুলিতে নিহত হয় এক মহিলা। পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪। এই লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় ৫২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বস্তুত ট্রাম্প নির্বাচনে তার পরাজয় মেনে নিতে পারছিলেন না। পরাজিত হয়েও হার স্বীকারে রাজি ছিলেন না তিনি। নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন তিনি। বুধবারও এক মিছিল থেকে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা হাল ছেড়ে দেব না।’

এরপর ক্যাপিটল ভবনের সামনের ধাতব ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে প্রতিবাদকারীরা। পুলিশি ব্যারিকেডের সঙ্গে বাধে সংঘর্ষ। পুলিশ সেই ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে ‘মরিচের গুঁড়ো’ ছিটায় ক্ষুদ্ধ ট্রাম্প সমর্থকদের ওপর। এতে পুলিশকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করে ক্যাপিটল হাউজের সামনে জড়ো হওয়া বিক্ষুদ্ধ জনতা।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি চেনেন না। যেটা দেখা যাচ্ছে আমেরিকা সেটা নয়। বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। আর এর শেষ হওয়া প্রয়োজন। আজ যা দেখা যাচ্ছে তার থেকে আগের আমেরিকা অনেক ভালো ছিল।

ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালানোর এ ঘটনা নজিরবিহীন। ফলে নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘মার্কিন কংগ্রেসের ইতিহাসে এটা একটা লজ্জাজনক ঘটনা।’ সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এ ঘটনাকে ‘হৃদয়বিদারক ও ঘৃণ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন।

বস্তুত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর এমন ঘটনার কথা আমাদের জানা নেই। এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘পাগলামোর’ই আরেকটি উদাহরণ। এ ঘটনা বহির্বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করবে, এটা নিশ্চিত। নিউইয়র্ক টাইমস তার সম্পাদকীয়তে লিখেছে, এ ঘটনার জন্য অভিশংসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ট্রাম্পের জবাবদিহি অথবা তার বিচার হওয়া উচিত।

নওরোজ আহমেদ : আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম