Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

শেবাচিম হাসপাতাল: বিকল এনজিওগ্রাম মেশিন সচল হবে কবে?

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শেবাচিম হাসপাতাল: বিকল এনজিওগ্রাম মেশিন সচল হবে কবে?

ফাইল ছবি

শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে প্রায় দু’মাস এনজিওগ্রাম মেশিন বিকল থাকার সংবাদ অনভিপ্রেত।

বরিশালের ৬ জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী আরও ৩ জেলার বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবার প্রধান অবলম্বন এ হাসপাতাল; অথচ এখানকার এনজিওগ্রাম মেশিন বিকল হয়ে পড়ায় হৃদরোগী ও তার স্বজনদের বাধ্য হয়ে এখন ঢাকায় ছুটতে হচ্ছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, এর ফলে জীবনের ঝুঁকি ও ভোগান্তি ছাড়াও মানুষের চিকিৎসা ব্যয় অনেকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। বাড়তি এ ব্যয় ক’জনের পক্ষে বহন করা সম্ভব- এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই কালবিলম্ব না করে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা উচিত।

নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয়সাপেক্ষে সঠিক চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির কোনো বিকল্প নেই; অথচ দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এর ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে।

যেগুলো আছে, তার অধিকাংশই হয় অপ্রয়োজনীয়; নয়তো শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের মতো বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এ সুযোগে দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে।

রোগীরা সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে গাঁটের পয়সা খরচ করে প্রতিনিয়ত সেখানে ভিড় জমাচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়।

এ কথা সর্বজনবিদিত, দেশের অগণিত রোগীর কল্যাণ ও সেবার নামে স্বাস্থ্য খাতে যে লুটপাট ও দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম হয়েছে, এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিক ও এক শ্রেণির চিকিৎসকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এ অবস্থায় লুটপাটের কাজটি যে বাধাহীনভাবে চলবে, তা বলাই বাহুল্য। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে কেনা যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অধিকাংশই বিকল বা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে থাকার বিষয়টি বর্তমানে আমাদের ‘ঐতিহ্য’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, যা থেকে মুক্ত হওয়া জরুরি।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে এক দফা অর্থ লুটপাটের পর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের নামে আরও এক দফা লুটপাট চালানো হয়।

এ অবস্থায় সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় সঠিক চাহিদার ভিত্তিতে মানসম্পন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবস্থা থাকা উচিত।

দক্ষিণাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ব্যয়বহুল হৃদরোগ সংক্রান্ত চিকিৎসার জন্য যাতে ঢাকায় ধরনা দিতে না হয়, সে লক্ষ্যে শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে এনজিওগ্রাম মেশিনটি স্থাপন করা হয়েছিল।

তবে সরকারের এ মহৎ উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে বর্তমানে এটি মানুষের কোনো কাজে না আসায়। দেশের একটি বৃহৎ অঞ্চলের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে বিকল এনজিওগ্রাম মেশিনটি দ্রুত মেরামত অথবা নতুন একটি মেশিন প্রতিস্থাপন করা হবে- এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম