ই-পাসপোর্ট সেবা: সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ দূর হোক

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২০, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দেশে বহু প্রতীক্ষিত ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট সেবা চালুর বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। পাসপোর্ট নিয়ে নানারকম জালিয়াতি ও নাগরিক দুর্ভোগ দুটিই বহুল আলোচিত। বাংলাদেশের নাগরিক নন এমন ব্যক্তিও একসময় জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে সক্ষম হতেন।
দেশে পুরোপুরি ই-পাসপোর্ট সেবা কার্যক্রম চালু হলে আশা করা যায়, এমন জালিয়াতি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হবে। বর্তমানে রোহিঙ্গারা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ করছে। ই-পাসপোর্ট চালু হলে তা আর সম্ভব হবে না। এটি স্বস্তির বিষয়। পাসপোর্ট পেতে সাধারণ নাগরিকের দুর্ভোগের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসে।
যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট বা এমআরপির তুলনায় ই-পাসপোর্ট তৈরিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেশি থাকায় তা পেতে নাগরিক দুর্ভোগ অনেক কমে যাওয়ার কথা। তবে এক্ষেত্রে নাগরিক দুর্ভোগ কতটা কমবে, তা অনেকটাই নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট কর্তকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও আন্তরিকতার ওপর।
ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা ও অন্যান্য কাজে জরুরি পাসপোর্টের প্রয়োজন হলেও নির্দিষ্ট সময়ের আগে এমআরপি প্রদান করা সম্ভব হয় না। জানা গেছে, একজন সাধারণ নাগরিক নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করে এমআরপির তুলনায় অনেক কম সময়ের মধ্যেই অতি জরুরি ভিত্তিতেও ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।
জরুরি ফি প্রদানের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে। অতীতে বারবার এমন অভিযোগ এসেছে। কেন সময়মতো পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না তার উত্তর পেতেও কখনও কখনও একজন সাধারণ নাগরিককে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমনটি যাতে আর না হয় তা নিশ্চিত করা জরুরি।
দালালদের দৌরাত্ম্য কমাতে পাসপোর্ট অফিস ও এর আশপাশে বারবার অভিযান পরিচালনা করা হলেও সেখানে তাদের আনাগোনা কেন থেকেই যায়, এটাও এক প্রশ্ন। একজন সাধারণ নাগরিক কাক্সিক্ষত সেবা পেতে হয়রানির শিকার হলেই দালালদের কাছে যান। পাসপোর্ট অফিসে সংশ্লিষ্ট কর্তকর্তা-কর্মচারীদের কাছে সাধারণ মানুষ প্রত্যাশিত সেবা পেলে স্বাভাবিকভাবেই দালালদের প্রভাব কমবে।
পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানির অভিযোগও পুরনো। প্রশ্ন হল, এনআইডির তথ্য যাচাইয়ের প্রয়োজন হবে কেন? এক্ষেত্রে এনআইডি যাতে নকল হতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশে ই-পাসপোর্ট সেবা চালুর ফলে নতুন এ সেবা পেতে মানুষ উৎসাহিত হবে এটাই স্বাভাবিক। এ সেবা পেতে গিয়ে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।