ভাল্ব প্রতিস্থাপনে সাফল্য
এর সুফল ছড়িয়ে পড়ুক সারা দেশে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২০, ০১:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে প্রথমবারের মতো রোগীর বুক না কেটে সফলভাবে ‘এওর্টিক ভাল্ব’ প্রতিস্থাপন করেছেন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের একদল চিকিৎসক।
নিঃসন্দেহে এটি দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি সুসংবাদ ও বড় ঘটনা। এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি দেশে না থাকার কারণে রোগীদের বিদেশে গিয়ে অনেক টাকা ব্যয় করে চিকিৎসা নিতে হতো।
উল্লেখ্য, এওর্টিক ভাল্ব প্রতিস্থাপনের দুই ধরনের চিকিৎসা রয়েছে। এর একটি হল বুক কেটে ভাল্ব প্রতিস্থাপন, যা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ এবং এতে রোগীর পুরোপুরি সুস্থ হতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যায়।
অন্যটি হল বুক না কেটে, অজ্ঞান না করে কুঁচকি দিয়ে ‘এওর্টিক ভাল্ব’ প্রতিস্থাপন। এ পদ্ধতিতে অস্ত্রপচারের পর একজন রোগী এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে কাজে ফিরে যেতে পারেন।
কাজেই দেশে এ ক্ষেত্রে সাফল্য একটি আশাব্যঞ্জক ঘটনা। কারণ হৃদরোগের চিকিৎসা এমনিতেই ব্যয়বহুল। আর ভাল্ব প্রতিস্থাপনের সামর্থ্য সাধারণ মানুষের অনেকেরই থাকে না।
বুক না কেটে ভাল্ব প্রতিস্থাপনের এ চিকিৎসা পদ্ধতি দেশে পরিপূর্ণভাবে চালু হলে রোগীদের আর বিদেশে যেতে হবে না। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এর আগে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর দেহে সফলভাবে অস্থিমজ্জা (বোনম্যারো) প্রতিস্থাপনে সফল হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপনও শুরু হয়েছে দেশে। তবে এখনও এগুলো মূলত রাজধানীকেন্দ্রিক হওয়ায় এর সুফল ভোগ করা সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। ঢাকায় এসে দীর্ঘদিন অবস্থান করে চিকিৎসা করানো দরিদ্র লোকের জন্য দুরূহই বটে।
বিভাগীয় শহরগুলোতে এ ধরনের চিকিৎসালয় গড়ে তোলা গেলে সাধারণ মানুষ এর সুফল পাবে অনেক বেশি। তাই এসব সেবা ক্রমান্বয়ে দেশের বড় শহরগুলোয় ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
আমরা আশা করব, পরবর্তী সময়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোও এ চিকিৎসাব্যবস্থা গড়ে তুলতে এগিয়ে আসবে। এ ব্যাপারে সহায়তার জন্য নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।
সুযোগ ও সহায়তা পেলে দেশে চিকিৎসা ক্ষেত্রে আরও অনেক সাফল্য আসতে পারে। সেজন্য এ সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। দূর করতে হবে এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো।