Logo
Logo
×

অর্থনীতি

পর্যটনে অপার সম্ভাবনা সীতাকুণ্ড

Icon

এসএম ফোরকান আবু, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পর্যটনের অপার সম্ভাবনার দুয়ার নিয়ে বসে আছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড। সাগর, নদী, পাহাড়, লেক, ঝর্ণা, বন, মন্দির, উপজাতি কি নেই এখানে। সীতাকুণ্ডের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে ২ থেকে ৩ দিন কাটিয়ে দেয়া যায়। এখানে রয়েছে ভিন্ন ধরনের গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত, সদ্বীপ ঘাট, কুমিরা ঘাট, চন্দ্রনাথ মন্দির, মহামায়া লেক, সুপ্তধারা ঝর্ণা, কমলদাহ ঝর্ণা, ইকো পার্কসহ আরও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের উপকরণ।

মেঠো পথ পেরিয়ে যতদূর চোখ যায়, চারদিকে সবুজ আর সবুজ, মাথার উপর বিশাল আকাশ, তার নিচে কেওড়ার বন, খানিক দূরেই সমুদ্রের বিশাল জলরাশি। হৃদয় হরণ করা এমন রূপে বারবার হাতছানি দিয়ে পর্যটকদের ডাকছে সীতাকুণ্ড অনিন্দ্যসুন্দর গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত। এটি অন্যান্য সৈকতের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন ধরনের। সৈকতের অদূরে বেড়িবাঁধের ওপর দাঁড়াতেই চোখ পড়বে কেওড়া বনের ওপরে মায়াবী আকাশ। বেড়িবাঁধ পেরিয়ে জুতোজোড়া হাতে নিয়ে কাদামাটির ওপর দিয়ে কিছুটা পথ হাঁটার পর কানে ভেসে আসছিল সমুদ্রের গর্জন। সৈকতে যাওয়ার আগে কেওড়া বনে ঘাসের বিছানা আর ঝিরঝিরি বাতাস। কেওড়া বন আর সবুজের মাঝে ছোট ছোট খাদ। সাগরের জলে পা ভেজাতে সৈকতের দিকে এগোতেই দর্শনার্থীদের কোলাহল। দলবল নিয়ে কেউ ফুটবল খেলেছে, কেউ গা ভেজাচ্ছে, অনেকেই আবার ব্যস্ত ছবি তুলতে। সৈকতের এক পাশেই বয়ে যাওয়া খাল। সেই খালে নৌকা নিয়ে গোধূলি বেলায় ভাটার অপেক্ষায় মাঝি। সমুদ্রের জলে সূর্যের রক্তিম আভা। জল আর আকাশ মিলেছে সোনালি রঙের ক্যানভাসে।

পরিচিতি বাড়তে থাকায় সৈকতে দর্শনার্থীদের ভিড় ক্রমেই বাড়ছে। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে সৈকতের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। সাধারণত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এ পথটা ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে। এর পাশেই রয়েছে সদ্বীপ ঘাট। এখানেও রয়েছে সাগর আর বনের মিতালী। মাঝ সাগরে দেখা মিলবে নানা ধরনের বড় বড় জাহাজের। আরেকটু সামনে এগুলোই দেখা যাবে জাহাজ ভাঙা শিল্প। পুরনো জাহাজ ভেঙে এখানে বিভিন্ন ধরনের প্লেট তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো দিয়ে রড তৈরি করা হয়। এখান থেকে কুমিরা ঘাটের দিকে আরও এগুলো মিলবে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত। এখানে যেমন আছে ঝাউবন, তেমনি আছে ভিন্ন ধরনের এক সৈকত। যার প্রাকৃতিক সৈন্দর্য অতুলনীয়।

চট্টগ্রামের কুমিরাতে রয়েছে কুমিরা ঘাট। এখান থেকে সন্দ্বীপ যাওয়ার স্পিডবোড ও ট্রলার ছাড়ে। যে কারণে এ ঘাটটি সময়ই থাকে জমজমাট। এখানে আছে প্রায় ২ কিলোমিটার লম্বা একটি পাকা জেটি। এখানে থেকে সন্দ্বীপ চ্যানেলের অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। জেটির শুরুতে রয়েছে বেশকিছু খাবারের দোকান। এগুলোতে সাগরের তাজা মাছ ভাজা খেতে পারেন।

সীতাকুণ্ড বাজারের কাছেই রয়েছে চন্দ্রনাথ মন্দির। উঁচু পাহাড় বেয়ে মন্দিরে উঠতে হয়। মন্দির থেকে সাগর ও আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দযের অপরূপ দৃশ্য দেখার সুযোগ রয়েছে। মন্দিরে উঠার পথে ছোট দুটি ঝর্ণাও দেখা যাবে। সুপ্তধারা ঝর্ণা শুধু বর্ষাকালে জেগে উঠে। সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন বলেন, গুলিয়াখালীকে সরকার এখনও সৈকত হিসেবে ঘোষণা দেয়নি। যার কারণে এখানে যাওয়ার জন্য কোনো ধরনের অবকাঠামো তৈরি হয়নি। সরকার যদি সৈকত হিসেবে ঘোষণা করত তাহলে রাস্তাঘাট, আবাসিক ব্যবস্থা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করত পর্যটন কর্পোরেশন। পাশাপাশি এ সৈকতকে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা করা হলে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এ গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতটি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম