নবম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে পরিবেশমন্ত্রী
৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণের কারণ প্রতিবেশী দেশ

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশের বায়ুদূষণের বড় একটি অংশের জন্যই দায়ী ট্রান্সবাউন্ডারি বায়ুদূষণ, অর্থাৎ প্রতিবেশী দেশগুলোর বায়ুদূষণ। এমনটাই জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩৫ শতাংশই হয় ট্রান্সবাউন্ডারি বায়ুদূষণের কারণে। তিনি আরও বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়েছে।
বুধবার রাজধানীর গুলশানে সিক্স সিজনস হোটেলে দুই দিনব্যাপী ‘নবম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনের’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশনএইড ২০১৬ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করছে।
দেশের বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে ‘ট্রান্সবাউন্ডারি’ (অর্থাৎ বাংলাদেশে বায়ুদূষণ শুধু নিজ দেশ থেকেই নয়, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেও হচ্ছে) থেকে উল্লেখ করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণ হয় এখান থেকে। রিজিওনাল ডাইমেনশনে এখন বায়ুদূষণ হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য আঞ্চলিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের অস্তিত্ব সংকটের মুখে। জলবায়ু পরিবর্তনকে খাটো করে দেখার উপায় নেই। যদি বলি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার কথা, বরফ গলে যাওয়ার কথা, জলবায়ু সংকটের কারণে শরণার্থী বাড়ার কথা, তাহলে এখানে পানির একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। জলবায়ু সমস্যা সমাধানে পানির বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
পানির বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার কথা উল্লেখ করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা যে টেকসই উন্নয়নের কথা বলি, সেখানে পানির বিষয় আছে। এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যারা অংশ নিচ্ছেন, এটা শুধু তাদের জন্য নয়। সম্মেলন থেকে যে সুপারিশ থাকবে তা নীতি নির্ধারণে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পরিবেশমন্ত্রী সরকারের পরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, বায়ুদূষণ প্রতিরোধে ১০০ দিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। নানা পদক্ষেপের কথা বলা হলেও দক্ষতা কতটা আছে সেটাও দেখতে হবে।
অনুষ্ঠানে অ্যাকশনএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, বাংলাদেশ একটি ডেলটা (বদ্বীপ) কান্ট্রি। এখানে শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সবকিছুই নদী ও পানির সঙ্গে জড়িয়ে। তাই আমরা এবারের সম্মেলনে নদী, পানি ও জলবায়ু পরিবর্তনকে আমাদের মূল বিষয় হিসাবে নিয়েছি।
২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত বায়ুদূষণ বিষয়ক ‘স্ট্রাইভিং ফর ক্লিন এয়ার : এয়ার পলিউশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০ শতাংশই মূলত ট্রান্সবাউন্ডারি বায়ুদূষণ। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শহরগুলোর বায়ুদূষণের আনুমানিক ৩০ শতাংশেরই উৎপত্তি ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। সেখান থেকে তা বাতাসের মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে আসে বাংলাদেশে।