মিল মালিকরা চালের দাম কমাতে ওয়াদা করেছেন: খাদ্যমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, নির্বাচনের পরদিন থেকে হঠাৎ করে চালের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। এ সময় লাফিয়ে লাফিয়ে চালের দাম বাড়তে থাকে। আবার মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানের দিন থেকে চালের দামের বৃদ্ধি একরকম থেমে যায়। এর সবই সুযোগসন্ধানী অসৎ ব্যবসায়ীদের কাজ। চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। কোনোভাবেই চালের দাম এক পয়সাও বৃদ্ধি করা চলবে না। মিল মালিকরা আমাদের কথা দিয়েছেন-চালের দাম তারা আগের জায়গায় নিয়ে যাবেন। আমরা বলেছি, আমন চালের দাম আগের জায়গায় আনতেই হবে। দাম যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে, অনুরূপভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে কমাতে হবে। আশা করি, তারা তাদের কথা রাখবেন। বুধবার সন্ধ্যায় খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে চালকল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
চালের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকটির আয়োজন করে খাদ্য অধিদপ্তর। বৈঠকে খাদ্যসচিব ইসমাইল হোসেন এনডিসি, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাখাওয়াত হোসেন এবং চালকল মালিকরাসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র আরও বলেন, আমন মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। এটা আমার কথা নয়। এটা ব্যবসায়ীদের কথা, মিল মালিকদের কথা এবং চাল ব্যবসায়ীদের কথা। তিনি বলেন, চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স। আমরা চালের দাম বৃদ্ধি কোনোভাবেই মানব না। চারদিন সময় দিলাম, চালের দাম আগের জায়গায় নিয়ে আসেন। আমাদের অন্ধকারে রেখে ব্যবসা করবেন, জনগণকে কষ্ট দেবেন, তা হবে না। আমরা অভিযান শুরু করেছি। কন্ট্রোল রুম খুলেছি। বাজার মনিটরিং করছি। ধান ও চালের ব্যবসা করবেন ফুড গ্রেইন লাইসেন্স থাকবে না, তা হতেই পারে না। প্রতি সপ্তাহে একবার, ১৫ দিনে একবার এবং মাসে একবার মজুত পরিস্থিতি প্রতিবেদন সরকারের কাছে পেশ করতে হবে। কারও কাছে অবৈধ মজুত পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিচার করা হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, একটি জেলায় বুধবার দুই হাজার টন ধানের অবৈধ মজুত ধরা পড়েছে। নিয়ম অনুসারে মামলা হবে। ইতোমধ্যে গুদামটি সিলড করে দেওয়া হয়েছে। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপারদের (এসপি) সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সহায়তায় সরকার জেলায় জেলায় মজুতবিরোধী অভিযান চালাবে। ইতোমধ্যে অভিযান চালানো হয়েছে। সুতরাং সবাই সাবধান হয়ে যান।
কী কারণে চালের দাম বেড়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মিল মালিকরা জানিয়েছেন, তারা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। নির্বাচনের পরপরই তারা আবার মাঠে নেমেছেন। সব ব্যবসায়ী একসঙ্গে বেচাকেনা বন্ধ করে দেওয়ায় এক ধরনের শূন্যতা দেখা দিয়েছে। আবার যখন সবাই একসঙ্গে ধান কেনা শুরু করেছেন, তখন ধানের দাম বেড়ে গেছে। ফলে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীদের লোভে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি করবে কি না জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই না। তেমন কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। তবে শূন্য শুল্কে চাল আমদানির অনুমতির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে সারসংক্ষেপ দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন নিয়ে সময়মতো কাজে লাগানো যাবে।